ডা. সাইফুন নাহার: কানে শোঁ শোঁ, ভোঁ ভোঁ, ঝিঁ ঝিঁ পোকার ডাক বা ঘণ্টার আওয়াজ শোনার সমস্যাকে টিনিটাস বলা হয়। ভেস্টিবিউলুককলিয়ার নার্ভ বা অন্তঃকর্ণের সমস্যার কারণে টিনিটাস হয়ে থাকে। তাছাড়া উচ্চস্বরে হেডফোনে গান শোনা, বাদ্যযন্ত্র বাজান, পিস্তল এবং মেশিনগান, হর্নের শব্দ টিনিটাস হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়। মানসিক চাপের কারণেও টিনিটাস শুরু হতে পারে বা যাদের টিনিটাস আগেই ছিল সেটিকে আরও খারাপ করতে পারে।
স্ট্রেস বা মানসিক চাপ বিভিন্ন উপায়ে টিনিটাস সৃষ্টি করতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে-
▶ স্ট্রেস টিনিটাসের উপলব্ধিকে বাড়াতে পারে।
▶ স্ট্রেস ঘাড়, কাঁধ এবং চোয়ালের মাংসপেশিতে টান সৃষ্টি করতে পারে। যা কানের চারপাশের পেশি এবং কাঠামোকে প্রভাবিত করতে পারে।
▶ স্ট্রেস হরমোন বা কর্টিসল শ্রবণতন্ত্রকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। রক্তপ্রবাহ, প্রদাহ এবং স্নায়ুর কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করতে পারে।
▶ স্ট্রেস ঘুমের ধরনে হস্তক্ষেপ করতে পারে, যা মানুষকে অবসাদগ্রস্ত করে এবং তখন টিনিটাসের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে।
▶ স্ট্রেস গ্লুটামেটের উৎপাদন বাড়াতে পারে। গ্লুটামেট হচ্ছে একটি নিউরোট্রান্সমিটার যা নিউরনকে সংযুক্ত করে।
যখন নিউরন অনেক বেশি উত্তেজক সংকেত পায়, তখন তারা ওভারলোড হয়ে যায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এ ক্ষতি স্নায়ুকে প্রভাবিত করতে পারে, যা শব্দ প্রেরণ করতে সাহায্য করে।
* মানসিক কারণ হতে উদ্ভূত টিনিটাসের ব্যবস্থাপনা
▶ মানসিক চাপের প্রতিক্রিয়াগুলোকে শিথিল করা এবং নিয়ন্ত্রণ করতে শেখা।
▶ শিথিলকরণ ব্যায়াম, কাউন্সেলিং, বা পরিপূরক থেরাপি অনুশীলন করা।
▶ কফি, নিকোটিন, চকলেট, অ্যালকোহল এবং চিনিযুক্ত পানীয়ের মতো টিনিটাসকে আরও খারাপ করে তুলতে পারে এমন খাবার এড়িয়ে চলা।
▶ পর্যাপ্ত ঘুমানো।
▶ রাতে স্ক্রিন টাইম এড়িয়ে চলা।
▶ যোগব্যায়াম, ধ্যান, বা গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন করা।
লেখক : সাইকিয়্যাট্রিস্ট, সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, এডিকশন সাইক্রিয়্যাট্রি, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, ঢাকা। সূত্র : যুগান্তর
আপনার মতামত লিখুন :