ভিন্ন ধরনের ফলমূল দেহের পুষ্টির চাহিদা মেটাতে সাহায্য করে। এসব ফলের মধ্যে ব্লুবেরি উল্লেখযোগ্য। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, দৈনিক অল্প কিছু ব্লুবেরী খেলে স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। কারণ এটি রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
ব্লুবেরির পাশাপাশি স্ট্রবেরি, রাস্পবেরি, ব্ল্যাকবেরি ও চেরির মতো বেরিজাতীয় ফলে অনেক বেশি পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও ফাইবার রয়েছে। ফলগুলোর এসব বৈশিষ্ট্য রোগ প্রতিরোধে এবং সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।
ইন্টারন্যাশনাল স্পোর্টস নিউট্রিশন সংস্থার জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, ব্লুবেরি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, ধমনীর দৃঢ়তা এবং অ্যানডোথেলিয়াল ফাংশন (রক্তনালিগুলো ঘিরে থাকা কোষের একটি স্তর, যা রক্তপ্রবাহ এবং পার্শ্ববর্তী টিস্যুগুলোরর মধ্যে আদান-প্রদান নিয়ন্ত্রণ করে) উন্নত করতে সাহায্য করে।
আবার ২০২১ সালে প্রকাশিত ‘নিউট্রিয়েন্টস’ জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়, ব্লুবেরি রক্তের গ্লুকোজ বা শর্করা পরিচালনা এবং ইনসুলিন স্তর উন্নত করতে সাহায্য করে। এই গবেষণায় আরও বলা হয়, যাঁরা ১২ সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন অর্ধেক কাপ ব্লুবেরি খেয়েছেন, তাঁদের দ্রুত শেখার ক্ষমতাসহ বিভিন্ন নির্বাহী কার্যক্রমে (যেমন: সিদ্ধান্ত গ্রহণ, পরিকল্পনা, মনোযোগ, কাজ পরিচালনা ইত্যাদি) উন্নতি হয়েছে। গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যাঁরা ব্লুবেরি খেয়েছেন, তাঁরা দৈনন্দিন কাজে ভালো পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন এবং স্মৃতিশক্তিরও উন্নতি হয়।
আরেকটি গবেষণা ‘অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। সেই গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ব্লুবেরি ত্বকের ইলাস্টিসিটি বা স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায় এবং ত্বকের খসখসে ভাব কমাতে সাহায্য করে।
বেরি বা জাম জাতীয় ফলে অনেক বেশি পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং ফাইবার রয়েছে। ছবি: পেক্সেলস
এই প্রমাণগুলো ইঙ্গিত দেয় যে, ব্লুবেরি জ্ঞানীয় দক্ষতা অবক্ষয় প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে। তবে ব্লুবেরি কোনো জাদুকরী খাবার নয় এবং ডিমেনশিয়ার প্রভাবিত হওয়ার ক্ষেত্রে জিনগত উপাদানও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এ ছাড়া অনেক গবেষণা জানা যায়, খাদ্য, ব্যায়াম এবং একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন জ্ঞানীয় দক্ষতা এবং স্মৃতির প্রভাব উন্নত বা অন্তত ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। স্বাস্থ্য ভালো রাখতে অন্যান্য পদক্ষেপও নেওয়া যায়—
বার্ধক্যজনিত অনেক জ্ঞানীয় প্রতিবন্ধকতা হ্রাসে সুষম ডায়েট মেনে চলা।
ব্যায়াম মস্তিষ্কের অবক্ষয়কে বিলম্বিত বা রোধ করতে পারে।
পর্যাপ্ত ঘুমানো। কারণ মানসম্মত বিশ্রামের অভাব মস্তিষ্কের অবনতি এবং কার্যকরী সংযোগের ক্ষতির সঙ্গে সম্পর্কিত।
অ্যালকোহল, তামাক এবং অন্যান্য মাদক দ্রব্য পরিত্যাগ। এগুলো মস্তিষ্ককে সরাসরি প্রভাবিত করে এবং দ্রুত বয়স বাড়ায়।
আপনার মতামত লিখুন :