শিরোনাম
◈ কোথাও দাম না পেয়ে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ভাঙারির দোকানে বিক্রি ◈ সম্পদের হিসাব জমা না দিলে সরকারি চাকরিজীবীদের যেসব শাস্তি হতে পারে ◈ তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে যেসব দেশ নিরাপদ থাকবে ◈ কারও স্ত্রী চলে গেছে, কারও চাকরি: যেমন আছেন জুলাই আন্দোলনের আহতরা ◈ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বেগম রোকেয়ার গ্রাফিতিতে কালো রং, এরপর যা যা হলো ◈ হ্যারি কেইনের রেকর্ড গড়া হ্যাটট্রিকে বায়ার্ন মিউনিখের দারুণ জয় ◈ ভারত ও পাকিস্তানের কাছ থেকে আয়োজক স্বত্ব আইসিসির কেড়ে নেয়া উচিত: রশিদ লতিফ ◈ অ্যান্টিগা টেস্টে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রথম দিনটি দারুণ কাটোলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ  ◈ যে কারণে বাংলাদেশকে লাখ লাখ ডলার জরিমানা দিতে হচ্ছে ◈ পলাতক পুলিশ সদস্যদের বেতন বন্ধ, হচ্ছে মামলা, বেশির ভাগই ভারতে অবস্থান করছেন

প্রকাশিত : ২৯ অক্টোবর, ২০২৪, ১২:৫৬ দুপুর
আপডেট : ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ০৮:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শিশুদের খেলনায় বিষাক্ত সিসা, ঝুঁকিতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম : এসডো’র গবেষণা

সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বাংলাদেশে শিশুদের ব্যবহৃত খেলনা ও অন্যান্য দৈনন্দিন ব্যবহৃত পণ্যে উচ্চ মাত্রায় সিসা শনাক্ত হয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আয়োজিত এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (এসডো)-এর রিপোর্ট প্রকাশ অনুষ্ঠানে এই তথ্য প্রকাশ করা হয়।

গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, ২৫০টি পণ্যের মধ্যে ১৫৭টি পণ্যেই সিসা শনাক্ত হয়েছে। যার মধ্যে ৫৯% পণ্যে ৯০ পিপিএমের অধিক মাত্রার সিসা রয়েছে, যাতে ১৩৭০ পিপিএম মাত্রা পর্যন্ত সিসার উপস্থিতি পাওয়া যায়।

‘দ্য সাইলেন্ট পয়জন: ট্রেসেস অফ লেড ইন চাইল্ডহুড ট্রেজার্স’ শীর্ষক এই গবেষণা ২০১৩ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে করে আসছে এসডো।  যা শিশুদের খেলনায় সিসা, ক্যাডমিয়াম ও থ্যালেটসের মতো ক্ষতিকর রাসায়নিকের উপস্থিতি প্রকাশ এবং এর মাধ্যমে শিশুদের সুরক্ষার বিষয়ে জনসচেতনতা তৈরি করে।

পরবর্তীতে ২০২৩ সালে ফিলিপাইনের ‘ব্যান টক্সিক্স' নামক বেসরকারি সংস্থার সাথে অংশীদারিত্বে আবারো বাংলাদেশে শিশুদের খেলনা পরীক্ষা করা হয়। পুনরায় ২০২৪ সালে 'ব্যান টক্সিক্স-এর গবেষকরা বাংলাদেশে এসে স্থানীয় বাজার থেকে সরাসরি শিশুদের পণ্য সংগ্রহ করেন এবং এক্স-রে ফ্লুরোসেন্স (এক্সআরএফ) মেশিন ব্যবহার করে সেগুলোতে সিসার মাত্রা বিশ্লেষণ করেন।

গবেষণার গুরুত্বপূর্ণ ফলাফলসমুহ-

শিশুদের খেলনায় উচ্চ মাত্রায় সিসা পাওয়া গেছে, যা ১.৬৮ পিপিএম থেকে ৩৭৯ পিপিএম পর্যন্ত বিস্তৃত। পরীক্ষিত ২৫০টি পণ্যের মধ্যে ১৫৭টি পণ্যেই সিসার উপস্থিতি শনাক্ত হয়েছে, যার মধ্যে ৯২টি পণ্যে সিসার পরিমাণ নিরাপদ সীমা ৯০ পিপিএমের চেয়ে বেশি।

শিশুদের পানির মগে ১৩৮০ পিপিএম সিসা, ২৪৭ পিপিএম আর্সেনিক এবং ১৩৯০ পিপিএম ক্রোমিয়াম পাওয়া গেছে। প্রতিদিনের ব্যবহৃত একটি সাধারণ পণ্যে এই বিপজ্জনক রাসায়নিকের উপস্থিতি উদ্বেগজনক।

শিশুদের ব্যবহৃত স্টেশনারি ব্যাগে ৫৮০ পিপিএম সিসা, ১২৮০ পিপিএম বেরিয়াম, ও ৮৮ পিপিএম পারদ পাওয়া গেছে। যা পড়াশোনার সরঞ্জামকেও স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পরিণত করেছে।

একটি পুতুল সেটে ১৬০ পিপিএম সিসা ও ১৫০০ পিপিএম ক্রোমিয়াম পাওয়া গেছে। যা শিশুর প্রিয় খেলনাকেও বিপজ্জনক করেছে। শিশুদের ব্যবহৃত একটি মগে ২২০ পিপিএম সিসি, ৩১৫ পিপিএম ক্যাডমিয়াম ও ১৬৮০ পিপিএম ক্রোমিয়াম পাওয়া গেছে, যা দৈনন্দিন ব্যবহারে শিশুকে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলছে।

একটি নামকরা শপিংমল থেকে সংগ্রহ করা একটি পুতুল সেটেও ৫০০ পিপিএম সিসা পাওয়া গেছে, যা প্রমাণ করে যে উচ্চমানের পণ্যও সীসা থেকে মুক্ত নয়।

একটি বর্ণমালা সেটের একটি উজ্জ্বল বর্ণমালার অক্ষরে ৬৬০ পিপিএম সিসা পাওয়া গেছে, যা শিক্ষার পণ্যকেও ঝুঁকিতে ফেলেছে। ভারত, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, জাপান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশে সিসার মাত্রার জন্য সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশে এ নিয়ে এখনো এমন কোনো আইন বা নিয়ম নেই।

এসডোর চেয়ারপার্সন এবং সাবেক সচিব সৈয়দ মার্গুব মোরশেদ বিষয়টির গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘শিশুদের খেলনায় সিসার উপস্থিতি একটি গুরুতর জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুরক্ষার জন্য আমাদের দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।’

এসডোর মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসেন খেলনার সুরক্ষা নিয়ে বলেন, ‘খেলনা শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে সহায়ক, কিন্তু যখন তাতে সিসার মতো বিষাক্ত পদার্থ থাকে, তখন তা ক্ষতিকর হয়ে ওঠে।’

শিশুদের নিরাপদভাবে বেড়ে ওঠার পরিবেশ নিশ্চিত করতে খেলনাগুলো সিসামুক্ত হওয়া জরুরি বলে উল্লেখ করেন তিনি।

এছাড়া এসডোর নির্বাহী পরিচালক সিদ্দীকা সুলতানা উপস্থিতি ছিলেন। অনুষ্ঠানে মূল উপস্থাপনা করেন এসডোর প্রোগ্রাম অ্যাসোসিয়েট শ্যানন ইফাত আলম। সূত্র

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়