এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু। রোগটিতে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্ত রোগী ও মৃতের সংখ্যা। এতে আতঙ্ক বিরাজ করছে জনমনে। কারণ অতীতের তুলনায় রোগটির প্রভাব এবার অনেক বেশি। প্রতিদিনই হাসপাতালে ভিড় করছে অসংখ্য রোগী। যাদের অনেকের একটাই সমস্যা, প্লাটিলেট কমে যাচ্ছে।
প্লাটিলেট হলো রক্তের কোষ, যা রক্তকে জমাট বাঁধতে সাহায্য করে। একজন সুস্থ মানুষের প্রতি ১০০ মিলিমিটার রক্তে প্লাটিলেটের মাত্রা দেড় থেকে চার লাখ থাকা উচিত। প্লাটিলেটের ওপর নির্ভর করে মানুষের সুস্থ থাকা। আর তাই শরীরে প্লাটিলেটের অভাব হলে সহজে ক্লান্তি ভর করে। খুব সহজে আঘাত পাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
ডেঙ্গুর কারণে এই প্লাটিলেটের মাত্রা কমে যেতে পারে অস্বাভাবিকভাবে। জীবনযাত্রা ও খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমে এই প্লাটিলেটের মাত্রা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যেতে পারে। রক্তে কমে যাওয়া প্লাটিলেটের পরিমাণ আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে কিছু খাবারের বিশেষ ভূমিকা আছে।
নিয়মিত ভিটামিন বি-১২ খেলে শরীরে প্লাটিলেটের পরিমাণ বাড়ে। যেকোনো আমিষ খাবারেই এই ভিটামিন বি১২ প্রচুর পরিমাণে থাকে।
পেঁপে : প্লাটিলেট বাড়াতে পেঁপের জুস খেতে পারেন। পেঁপেপাতা অণুচক্রিকা বাড়াতে সাহায্য করে বলে ডেঙ্গুতে উপকারী। পেঁপেপাতা বেটে রস করে পান করতে পারেন। এ ছাড়া পাতা সেদ্ধ করেও খাওয়া যায়।
ব্রোকলি : ভিটামিন ‘কে’– এর দারুণ উৎস ব্রোকলি, যা রক্তে প্লাটিলেট বাড়াতে সাহায্য করে। যদি দ্রুত কমতে থাকে, তবে প্রতিদিনকার খাবারে অবশ্যই ব্রোকলি যুক্ত করবেন। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও নানা উপকারী খনিজ রয়েছে।
বেদানা : বেদানায় দরকারি নানা পুষ্টি ও খনিজ উপাদান রয়েছে, যা শরীরের প্রয়োজনীয় শক্তি জোগাতে পারে। শরীরের ধকল কাটাতে বেদানা দারুণ উপকারী। এ ছাড়া এটি আয়রনের উৎস বলে রক্তের জন্য উপকারী। প্লাটিলেটের সংখ্যা স্বাভাবিক রাখতে এবং ডেঙ্গু সারাতে এটি উপকারী।
পালংশাক : আয়রন ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের অন্যতম উৎস পালংশাক । এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া শরীরে প্লাটিলেটের সংখ্যা বাড়াতে পারে।
ডাব : ডাবের পানিতে খনিজ বা ইলেকট্রোলাইটস আছে, যা ডেঙ্গু জ্বরে খুবই দরকারি।
এ ছাড়াও মিষ্টিকুমড়ার বীজ, লেবুর রস, বিটের রস, আমলকী, অ্যালোভেরার রসও প্লাটিলেট বাড়াতে সাহায্য করে।
মনে রাখা জরুরি : ডেঙ্গু রোগীর হজমশক্তি অনেকাংশে কমে যায় বলে বমি ও পেটব্যথা হতে পারে। রোগীর যকৃতে অস্বাভাবিকতা সৃষ্টি হয়ে রক্তে এসজিপিটির পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। তাই রোগীকে বাড়তি মসলা ও তেলচর্বিযুক্ত খাবার না খাওয়ানোই ভালো। তবে রোগীর খাবারে পর্যাপ্ত আমিষ উপাদান থাকা জরুরি। এ জন্য মাছ, মুরগি, দুধ, ডিম প্রভৃতি উপকরণে তৈরি বিভিন্ন ধরনের খাবার খেতে দেয়া উচিৎ। উৎস: কালবেলা।
আপনার মতামত লিখুন :