ব্যস্ত এই শহরে সবাই ব্যস্ত। এমনকি গ্রামের মানুষও। নানা কাজে পরিবারের কর্তাদের প্রতিদিনই ছুটতে হয় এখানে-সেখানে। এই দ্রুত এগিয়ে চলা জীবনে প্রতিদিন বাজারমুখো হওয়া প্রায় অসম্ভব বললেই চলে।
তাই তো সপ্তাহে এক-আধদিন বাজারে গিয়েই পুরো সপ্তাহের, আবার কেউ পুরো মাসের বাজার করে এনে ফ্রিজ বোঝাই করে রাখেন। বিশেষ করে মাছ আর মাংস। এটাই হলো বর্তমান জীবনের চালচিত্র, সে শহর হোক কিংবা গ্রাম।
তবে মাছের মতো প্রাণিজ খাবার বেশিদিন রেফ্রিজারেটরে রাখলে নাকি তা দ্রুত নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এমনকি এসব মাছ খেলে পরবর্তীতে নানাবিধ শারীরিক সমস্যার আশঙ্কাও বাড়ে বলে দাবি অনেকের।
এখন প্রশ্ন হলো, এই কথা কি আদৌ সঠিক? সত্যিই কি ফ্রিজে বেশিদিন মাছ রাখলে তা নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে? সেক্ষেত্রে ঠান্ডা যন্ত্রে কতদিন মাছ রাখা উচিত? চলুন জেনে আসি পুষ্টিবিদরা কী বলছেন।
মাছের গুণের শেষ নেই : মাছ হলো হাই ক্লাস প্রোটিনের উৎস। তাই নিয়মিত মাছ খেলে দেহে প্রোটিনের ঘাটতি সহজেই মিটিয়ে ফেলা সম্ভব। তবে এখানেই শেষ নয়, এতে রয়েছে আয়রন, জিঙ্ক, ক্যালশিয়াম, ফসফরাসসহ একাধিক উপকারী খনিজ, যা শরীরের একাধিক কর্মকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এমনকি মাছ হলো ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের ভাণ্ডার, যা কিনা হার্ট ও ব্রেনের কার্যকারিতা বাড়ানোর কাজে সিদ্ধহস্ত। সুতরাং সুস্থ-সবল জীবন কাটাতে প্রতিদিনের পাতে মাছ রাখতেই হবে।
ফ্রিজে মাছ কতদিন রাখা উচিত? : পুষ্টিবিদরা বলছেন, আমাদের বাড়ির ফ্রিজগুলো ঠিক মাছ রাখার জন্য তৈরি হয়নি। তাই এই ফ্রিজে বেশিদিন মাছ রেখে দিলে তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এমনকি এতে ব্যাকটেরিয়া বাসা বাঁধার আশঙ্কাও থাকে। সেই সংক্রামিত মাছ খেলে পেট খারাপ, গ্যাস, অ্যাসিডিটি বা টক্সিসিটির আশঙ্কা বাড়বে বৈকি!
তাই একান্তই বাড়ির ফ্রিজে মাছ রাখতে হলে তা দুই দিনের বেশি রাখা উচিত নয় বলে সাবধান করছেন পুষ্টিবিদরা। এই নিয়মটা মেনে চলতে পারলেই মাছের গুণগত মান নিয়ে আর কোনো চিন্তা থাকবে না।
ফ্রিজে মাছ রাখার নিয়মকানুন : ফ্রিজে যেমন-তেমনভাবে মাছ রাখলে তা নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা আরও বাড়বে। তাই এবার থেকে বাজার থেকে মাছ কিনে আনার পর যত দ্রুত সম্ভব তা ভালো করে ধুয়ে নিতে ভুলবেন না। তারপর পানি যতটা সম্ভব ঝরিয়ে একটা এয়ার টাইট পাত্রের ভেতর রেখে ডিপ ফ্রিজে ঢুকিয়ে দিন। ব্যস, তাহলেই মোটামুটি দুই দিন পর্যন্ত নিশ্চিন্ত!
টাটকা মাছের কোনো বিকল্প নেই : বাজার থেকে মাছ কেনার সময়ও সতর্ক হতে হবে। এক্ষেত্রে মাছের চোখ, ত্বক ও কানকো দেখে সন্তুষ্ট হলেই তারপর কিনুন। নইলে কিন্তু মহা ঠকা ঠকতে হবে।
সবচেয়ে বড় কথা, বাজার থেকে বহু দিনের বাসি মাছ কিনে এনে ফ্রিজে রাখলেও তা চটজলদি খারাপ হয়ে যাবে। এমনকি এসব মাছ খেলে মিলবে না কোনো পুষ্টিগুণও। তাই সুস্থ থাকতে বাজার থেকে তরতাজা মাছ কেনাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
হালকা তেলে রান্না করুন : রান্না করার কিছুক্ষণ আগে ফ্রিজ থেকে মাছ বের করে রেখে দিন। তারপর মাছ একদম স্বাভাবিক তাপমাত্রায় চলে এলে হালকা তেল, মশলা দিয়ে রান্না করুন। তাতেই উপকার পাবেন। এড়ানো যাবে অপুষ্টির ফাঁদও। উৎস: ঢাকাটাইমস
আপনার মতামত লিখুন :