খাদেমুল বাবুল : জামালপুরের ইসলামপুরে বন্যার পানিতে ডুবে আরিফা (৭) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (২০ জুন) সকাল ৬ টার দিকে উপজেলার চিনাডুলী ইউনিয়নের ঘোনাপাড়া গ্রামের আলমের মেয়ে আরিফা বাবা-মার চোখের আড়ালে হঠাৎ বন্যার পানিতে ভেসে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে আরিফার মরদেহ উদ্ধার করে। চিনাডুলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস ছালাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
অন্য দিকে যমুনার বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে বন্যার পানি ৪৮ সেন্টিমিটার ও দেওয়ানগঞ্জের খোলাবাড়ী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপৎসীমার ১১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে । যমুনা-ব্রহ্মপুত্রসহ জেলার সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। প্রতি মুর্হুতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ইতোমধ্যে শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিতে ডুবে গেছে হাজার হাজার হেক্টর ফসিল জমির ফসল। পানি বৃদ্ধি সাথে পাল্লা দিয়ে দেখা দিয়েছে তীব্র নদী ভাঙনও। ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে দেওয়ানগঞ্জ-খোলাবাড়ি সড়কের মন্ডল বাজার এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদে বিলীন হওয়ায় ২০ গ্রামের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছ।দেওয়ানগঞ্জ-সানন্দবাড়ী-রৌমারী-রাজিবপুর-রৌমারী-রাজিবপুর সড়কের চর আমখাওয়া নামকস্থানে ব্রহ্মপুত্র নদে বিলীন হওয়ায় তিন উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। হুমকির মুখে পড়ছে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সানন্দবাড়ী সেতু ।
পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দী হতে পারে বলে জানান স্থানীরা । নদীর তীরর্বতী এলাকার মানুষের মধ্যে বন্যা আতঙ্কে বিরাজ করছে। অসংখ্য পরিবার মালামাল ও গবাদিপশু নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিচ্ছেন ।
ইসলামপুর-মাহৃুদপুর সড়কের আমতলী ড্রাইবেশন, পাথর্শী-আমতলী সড়কের বলিয়াদহ ড্রাইবেশন, পচাবহলা-উলিয়া সড়কের ধর্মকুড়া ড্রাইবেশন তলিয়ে যাওয়ার কয়েক লাখ মানুষের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া দেলিরপার-বামনা সড়ক ডুবে যাওয়ায় কয়েক হাজার মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এদিকে বন্যাদুর্গত এলাকায় শিক্ষা কার্যক্রম মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বন্যার পানি প্রবেশ করায় দুর্গত এলাকাগুলোতে ৪৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাঠদান স্থগিত রাখা হয়েছে।
জামালপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সুত্র জানায় , বন্যার পানিতে এ পর্যন্ত ১৭১৮ হেক্টর জমির ফসল ডুবে গেছে। এরমধ্যে ২৫ হেক্টরের আমন বীজতলা, ২১৫ হেক্টর জমির আউশ ধান, ১৩২৬ হেক্টরের পাট, ১২২ হেক্টর জমির শাকসবজি ও ৩০ হেক্টর জমির মরিচ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সুত্র জানায় , আগামী আরো দুই দিন যমুনা- ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড পাউবো সুত্র জানায়, যমুনা পানি বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্ট বিপৎসীমার ৪৮ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি দেওয়ানগঞ্জের খোলাবাড়ী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার পানি হু হু করে লোকালয়ে প্রবেশ করছে।
আপনার মতামত লিখুন :