মাজহারুল ইসলাম: বিপৎসীমার ওপরে ধরলার-ব্রহ্মপুত্র-তিস্তার পানিভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানিও বাড়ছে। তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে ৩৩ সেন্টিমিটার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার এবং নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। শুক্রবার (১৭ জুন) সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিস সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, এরই মধ্যে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতে তিস্তা ও ধরলা নদীর পাশাপাশি জেলার অন্য নদ-নদীর পানি বাড়ায় ক্রমেই বাড়ছে দুর্ভোগ।
নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে নিম্নাঞ্চলে বন্যার পানি ঢুকতে শুরু করায় জেলা সদর, নাগেশ্বরী, ভুরুঙ্গামারী, চিলমারী ও উলিপুর উপজেলার হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ধান, পাট ও শাক-সবজি ক্ষেত পানিতে নিমজ্জিত হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন বলেন, ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে তিস্তা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বাড়ছে। এতে জেলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
তিস্তা ও ধরলার পানি বৃদ্ধি ও জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, তাঁতিপাড়া, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজানের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউনিয়নের রানীগঞ্জের ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ড, সিংঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না ইউনিয়নের পাটিকাপাড়া, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। পরিবারগুলো পানিবন্দি হয়ে নিঘুম রাত কাটাচ্ছেন।
হাতীবান্ধার চর সিন্দুর্না আনোয়ার হোসেন বলেন, তিস্তার পানি বিকেল থেকে হুহু করে বাড়ছে। নদীর তীরবর্তী হওয়ায় কয়েকদিন থেকে রাতে ঘুম আসছে না চোখে। কখন কী হয়।
হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাকির হোসেন বলেন, সন্ধ্যা থেকে ক্রমে তিস্তার পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চলে প্রবেশ করে। এতে শতাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে।
লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, বন্যাসহ যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সবরকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ত্রাণের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সূত্র: জাগোনিউজ, ঢাকা পোস্ট
আপনার মতামত লিখুন :