এএইচ রাফি : ভারতের পশ্চিমবঙ্গ জেলার দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার বেগমপুর কলোনীর বাসিন্দা পাপ্পু রায়৷ প্রয়াত কৃষক নরেন্দ্রনাথ রায়ের একমাত্র ছেলে তিনি। পেশায় ভারতের একটি মিশনারী স্কুলের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষক।
এই পেশার সাথে নেশা সাইকেল চালানো। তাই গত ২৭ মে ভারত থেকে সাইকেল চালিয়ে যাত্রা শুরু করে বর্তমানে তিনি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় রয়েছে। সাইকেল ভ্রমণের পাশাপাশি তিনি মানব পাচার প্রতিরোধে বিভিন্ন বার্তা দিয়ে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
শিক্ষক পাপ্পু রায় জানান, প্রথম দিন যাত্রা শুরুর পর বনঘাটে এক পরিচিতের বাড়িতে রাত কাটিয়েছি। ২৮ তারিখে বেনাপোল স্থলবন্দর হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করি।
যশোরে রেল রোডের কাছে বাসা ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচিত সাগর রায় নামের এক বন্ধুর কাছে দুইদিন ছিলাম। সেখান থেকে খুলনার দিকে রওয়ানা হই। তারপর একে একে কয়েকটি জেলা অতিক্রম করে অবশেষে আমি রোববার সন্ধ্যায় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় পৌছেছি।
তিনি বলেন, আমার বাবা মারা গেছেন। আমি আমার বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে সন্তান। এছাড়াও দুইজন বড় বোন আছে, তাদের বিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাড়িতে আমার মা, স্ত্রী ও তিন বছরের একমাত্র কন্যা সন্তান রয়েছে।
যখন আমি ১০শ্রেণিতে পড়ি, তখন আমার জেঠার মেয়ে ৯ম শ্রেনীতে পড়তো। সেসময় তাকে কোলকাতা থেকে পুনে'তে পাচার করে দেওয়া হয়৷ ১১ মাস চেষ্টার পর তাকে আমরা উদ্ধার করে নিয়ে আসি। এমন একটি ঘটনার সাক্ষী ছিলাম আমি। মানব পাচারের বিষয়ে আমি স্ট্যাডি করেছি। এছাড়াও সাইকেল নিয়ে ঘুরাঘুরি করতে আমি ভালবাসি। তাই ভাবলাম সাইকেল নিয়ে ঘুরার পাশাপাশি সমাজে মানব পাচারের বিরুদ্ধে সচেতন করা যায় কিনা! এই ভাবনা থেকে আমি অভিযান শুরু করলাম।
পাপ্পু বলেন, বাংলাদেশে ঢুকার পর থেকে মানুষের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। যেখানেই যাচ্ছি, মানুষকে মানব পাচারের বিষয়ে সচেতন করার চেষ্টা করছি। আমি তাদের বলেছি, আমি যেমন বাংলাদেশটা ঘুরে মানুষ গুলোকে চিনবো এবং এই দেশটাকে জানবো। মানব পাচারের বিষয়ে আমার কাছ থেকে শুনে যে অন্যদের জানাতে পারে এই প্রচেষ্টা থাকবে। বাংলাদেশের মানুষ অনেক অতিথি পরায়ণ।
ভারতের অনেকেই বাংলাদেশকে নিয়ে বিরূপ ধারণা করেন। কিন্তু তারা এখানে আসলে বুঝবেন, আসলে বাংলাদেশের মানুষ কতো ভাল। আমি আরও এক মাস এই দেশের বিভিন্ন জেলায় ঘুরে মানব পাচার প্রতিরোধে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালাব।
আপনার মতামত লিখুন :