জেরিন আহমেদ: দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় মোকায় পরিণত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সাড়ে ১১টার দিকে ঘূর্ণিঝড় মোকা নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান।
এ সময় তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকার গতিপথ এখন পর্যন্ত ভারতের উড়িষ্যা, পশ্চিমবঙ্গের দিকে থাকলেও রোববার সকালে এটি বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের দিকে বাঁক নেবে। এদিন সকালে ঘূর্ণিঝড়টি ‘প্রবল’এবং একই দিন সন্ধ্যায় ‘অতি প্রবল’ হবে।
এছাড়া, শনিবার (১৩ মে) ঘূর্ণিঝড়টি ‘পিক অবস্থায়’ থাকবে বলে জানান আবহাওয়া অধিদফতরের পরিচালক। শনিবারের পর থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে এবং তখন চলমান তাপপ্রবাহ কমে আসবে বলেও জানান তিনি।
ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্রের চারপাশে বর্তমানে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার। এটি ঘণ্টায় ৮ কিলোমিটার গতিতে স্থলভাগের দিকে এগোচ্ছে। এ গতিতে এগোতে থাকলে রোববার (১৪ মে) সকাল থেকে দুপুর নাগাদ স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে মোকা।
এর আগে বৃহস্পতিবার আবহাওয়া অধিদফতরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এদিন সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১২২০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১২২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল ঘূর্ণিঝড়টি।
এদিকে, দেশের চার সমুদ্র বন্দরকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের গভীর সাগরে না যাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এদিকে, ভারতের সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মোকা ঘণ্টায় ১৪৫ কিলোমিটার বেগে তাণ্ডব চালাবে।
আবহাওয়া অফিসের বরাত দিয়ে কলকাতাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা বলছে, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর মোখার গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার। সমুদ্রে বাধা না পেয়ে তা হু-হু করে এগিয়ে আসবে উপকূলের দিকে।
সংবাদমাধ্যমটি আরও জানিয়েছে, শনিবার (১৩ মে) ঘূর্ণিঝড়ের প্রাবল্য সবচেয়ে বেশি থাকবে বলে মনে করছে আবহাওয়া অফিস। রোববার (১৪ মে) সকাল থেকে ধীরে ধীরে এই অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি কমতে পারে। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে উত্তর পূর্ব ও দক্ষিণ ভারতের অন্তত ১০টি রাজ্যে ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর।
জেএ/এএ
আপনার মতামত লিখুন :