শিরোনাম
◈ বিএনপির বিশৃঙ্খলা রোধে তারেক রহমানের যত ‘স্মার্ট অ্যাকশন’ ◈ ভারতে শেখ হাসিনা আশ্রয় পেতে যাচ্ছেন দালাই লামার মতোই! ◈ কর্মীদের হত্যাকাণ্ডের নিউজ কোথায়, প্রশ্ন আওয়ামী লীগের ◈ শাহবাগে বিক্ষোভ: আগামী ৭২ ঘণ্টায় পার্বত্য তিন জেলায় অবরোধের ঘোষণা  ◈ পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষ : রাঙ্গামাটিতে ১৪৪ ধারা জারি ◈ বাইতুল মোকাররমে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত বেশ কয়েকজন, সতর্ক অবস্থানে সেনাবাহিনী ও পুলিশ (ভিডিও) ◈ আইন নিজের হাতে তুলে নিলে কঠোর ব্যবস্থা : পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ◈ দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর আজ স্বাভাবিক দীঘিনালার পরিস্থিতি ◈ জাতিসংঘ অধিবেশনে যাদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে মুহাম্মদ ইউনূসের ◈ অস্বস্তিকর গরম: অবসান হবে কবে? জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর

প্রকাশিত : ০৪ নভেম্বর, ২০২২, ০৬:৩১ বিকাল
আপডেট : ০৪ নভেম্বর, ২০২২, ০৭:১২ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ভোলায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ে ক্ষতি ৫০০ কোটি টাকা

ফরহাদ হোসেন, ভোলা: দ্বীপ জেলা ভোলায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে প্রায় ৫০০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসনে এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।

ভোলা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, সিত্রাংয়ের কারণে ভোলার ৭ উপজেলায় ৭ হাজার ৯২২টি বসতঘর এবং মাছ, গবাদি পশু, গাছপালা ও বিদ্যুতের খুঁটিসহ বিভিন্ন খাতে ক্ষতি হয়েছে ২০০ কোটি টাকার মতো। যদিও অনেকের দাবি, সরকারি সহায়তার আশায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া ক্ষয়-ক্ষতির তালিকা অনেকটা বাড়িয়ে বলা হচ্ছে। 

অপর দিকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে জেলার উপকূলীয় এলাকার কৃষি ও মৎস্য’র ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এরমধ্যে কৃষিতে ৩ হাজার ৩২৫ হেক্টর ফসল ও ৬ হাজার ২৮০টি পুকুর-ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ঝড়ের প্রভাবে ৩ হাজার ১৬০ হেক্টর আমন ধান, ১৫০ হেক্টর সবজি, ৩ হেক্টর পান, ৭ হেক্টর কলা ও ৫ হেক্টর জমির পেঁপে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও জোয়ারের পানিতে ডুবে আছে অনেক ফসল। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।

অন্যদিকে ৭ উপজেলায় ৬ হাজার ২৮০টি পুকুর ও মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে এসব এলাকার পুকুর ও ঘেরের মাছ। দ্বীপ উপজেলা মনপুরার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ এবং অন্যান্য এলাকার মৎস্য ঘেরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

ৎভোলার কৃষিবিদ এইচ এম শামীম জানিয়েছেন, এ বছর ভোলায় ১ লাখ ৭৫ হাজার ৫৬৮ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ লাখ ৩৭ হাজার মেট্রিক টন। তবে সিত্রাংয়ের কারণে ৮-১০ হাজার মেট্রিক টন ফলন কম হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়া ৩০০ হেক্টর জমির সবজি, কলা, পেঁপে এবং পান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার মূল্য ৩০০ কোটি টাকা। 

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, তাদের বরো আমন ধান নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি অনেক পানের বরজ নষ্ট হয়েছে। আমরা এখন খুবই কষ্টের মধ্যে আছি।

জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, ঝড় শেষ হলেও এখনো মাঠে জলাবদ্ধতা থাকায় ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা সহায়তা চাইলেও তারা কিছুই করতে পারছেন না।

ঝড়ে আমাদের কৃষকরা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা আমাদের কাছে আসছেন। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো প্রণোদনা না আসায় আমরা কৃষকদের জন্য কিছুই করতে পারছি না। তাই সরকারের পক্ষ থেকে কৃষকদের জন্য প্রণোদনার দাবি জানাচ্ছি।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, চিত্রাংয়ের প্রভাবে মেঘনার পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হওয়ায়  বাঁধের বাইরের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, ঝড়ের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মাছ চাষিদের তালিকা তৈরি করে পাঠানো হয়েছে। সহায়তা এলে তাদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. হাসান ওয়ারিসুল কবীর জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করে পাঠানো হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বরাদ্দ এলে তা বিতরণ করা হবে। কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার জন্য আমরা পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। তাদের সহায়তার জন্য এখন পর্যন্ত কোনো বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। তবে ক্ষয়-ক্ষতির তালিকা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষ থেকে প্রণোদনা পাওয়া গেলে তা কৃষকদের মাঝে সঠিকভাবে পৌঁছে দেওয়া হবে। 

প্রসঙ্গত, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ৩ লাখ ৮০ হাজার টাকা, ৮৪ মেট্রিক টন চাল এবং ৩ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ঘর নির্মাণের জন্য ৪ হাজার বান্ডিল টিনের চাহিদা দেওয়া হলেও কৃষিখাতে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য জেলা প্রশাসন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে কোনো চাহিদাপত্র পাঠায়নি বলে জানা গেছে।

প্রতিনিধি/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়