শিরোনাম
◈ ভারতে শেখ হাসিনা আশ্রয় পেতে যাচ্ছেন দালাই লামার মতোই! ◈ কর্মীদের হত্যাকাণ্ডের নিউজ কোথায়, প্রশ্ন আওয়ামী লীগের ◈ শাহবাগে বিক্ষোভ: আগামী ৭২ ঘণ্টায় পার্বত্য তিন জেলায় অবরোধের ঘোষণা  ◈ পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষ : রাঙ্গামাটিতে ১৪৪ ধারা জারি ◈ বাইতুল মোকাররমে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত বেশ কয়েকজন, সতর্ক অবস্থানে সেনাবাহিনী ও পুলিশ (ভিডিও) ◈ আইন নিজের হাতে তুলে নিলে কঠোর ব্যবস্থা : পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ◈ দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর আজ স্বাভাবিক দীঘিনালার পরিস্থিতি ◈ জাতিসংঘ অধিবেশনে যাদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে মুহাম্মদ ইউনূসের ◈ অস্বস্তিকর গরম: অবসান হবে কবে? জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর ◈ হাসান মাহমুদের ৫ উইকেট, ভারত থামলো ৩৭৬ রানে

প্রকাশিত : ৩১ অক্টোবর, ২০২২, ১২:১৬ দুপুর
আপডেট : ৩১ অক্টোবর, ২০২২, ১২:১৬ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যমুনার ভাঙ্গনে ১৫০ মিটার এলাকা বিলীন

যমুনা নদীর ভাঙ্গন

সোহাগ হাসান, সিরাজগঞ্জ: হঠাৎ সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার পাঁচঠাকুরীতে দেখা দিয়েছে তীর্ব নদী ভাঙ্গন। ভাঙ্গনে নদী তীরের প্রায় ১৫০ মিটার এলাকা যমুনার গর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙ্গন আতংকে আশপাশের লোকজন তাদের বসত-বাড়ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন।

সোমবার (৩০ অক্টোবর) সকালে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয়ন প্রকৌশলী রনজিৎ কুমার সরকার ভাঙ্গনের বিষয়টি নিশ্চত করেছেন।

রোববার সকাল থেকে সোমবার (৩১ অক্টোবর) সকাল পর্যন্ত উপজেলার পাঁচঠাকুরীতে যমুনা নদীতে তীব্র ভাঙণে ১৫০ মিটার এলাকা যমুনা নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে গেছে।

তীব্র ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ। নদী থেকে বাঁধের দূরত্ব মাত্র ২০ মিটার। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, উপজেলার পাচঁঠাকুরী গ্রামের সিমলা স্পারের পাশে পাঁচঠাকুরী স্থানটি গত বছর ভেঙ্গে গিয়েছিল। সেখানে অস্থায়ীভাবে মেরামত করা হয়েছিল। স্থায়ী মেরামতের জন্য ইতোমধ্যে টেন্ডার আহ্বান করা হলেও কাজ শুরু হয়নি। এ অবস্থায় গত দুইদিন ধরে নদীর প্রবল ¯্রােতে পূর্বের ভাঙ্গনের স্থানে আবারও ভাঙ্গন দেখা গিয়েছে। এ অবস্থায় ভাঙ্গন স্থানের আশপাশের ২৫/৩০টি বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ভাঙ্গনের ঝুঁঁকিতে রয়েছে পাশের নদীতীর রক্ষা  বাঁধের ওপরে নির্মিত রানীগ্রাম-রতনকান্দি আঞ্চলিক সড়ক।

৭ বার নদী ভাঙনের মুখে আমি নিঃস্ব। সহায় সম্বল যা কিছু ছিলো সব নদী গর্ভে চলে গেছে। শেষ সময়ে পাঁচঠাকুরীতে বাঁধের নিচে আশ্রয় নিলাম। এই জায়গাতেও নদী ভাঙন। ১৫-২০ শতক জমির উপড়ে আমার বাড়ি ছিলো। এক রাইতের ভাঙনে সব শেষ। এভাবেই কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন পাঁচঠাকুরী গ্রামের ভাঙন কবলিত আব্দুল মোতালেব।

এলাকাবাসী জানায়, অনেকে নদীর তীরবর্তী বসবাসকারী মানুষ ঘর-বাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। ভাঙনে ৫টি বাড়ি, বসতভিটা, গাছপালা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় নদী থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের কারণে এই ভাঙন দেখা দিয়েছে। বালি উত্তোলন বন্ধে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি ও মানববন্ধন পালন করে এলাকাবাসী। কিন্তু তাতেও বালি উত্তোলন বন্ধ হয়নি।

স্থানীয় শামীম হোসেন বলেন, যমুনা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। বালু তোলা বন্ধের জন্য এলাকার মানুষ জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছে। তারপরও বালু তোলা বন্ধ হয় নাই। সকালে হঠাৎ চিৎকার শুনে ঘুম ভাঙে। এসে দেখি নদীতে খুব ভাঙন। মানুষজন ছোটা ছুটি করছে। ঘর থেকে মালামাল বাহিরে সরানোর চেষ্টা করছে। এভাবে নদী ভাঙন কোনো দিন দেখি নাই।

ভাঙন কবলের শিকার হেলেনা বেগম বলেন, রাতে হঠাৎ করে নদীতে ভাঙন শুরু হয়। নদীর তীব্র গর্জনে ঘুম ভাঙে এলাকার মানুষের। এক বছর আগে স্বামী মারা গেছে। তিন মেয়ে আমার। সবাইকে বিয়ে দিয়েছি। স্বামীর বাড়িতে অবস্থান করছি। ভাঙন না থামলে আমার বাড়িও যে নদী গর্ভে চলে যাবে। নদী থেকে বালু তোলার কারনে এই ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, নদীতে পানি কমতে থাকায় তীব্র স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। একারনে নদীর তলদেশে ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়ে মাটি সরে ভাঙ্গণ দেখা দিয়েছে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। ভাঙ্গন রোধে জিওব্যাগ ফেলে ভাঙন ঠেকানোর কাজ করা হচ্ছে। দুই/এক দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

প্রতিনিধি/এইচএ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়