জেরিন আহমেদ : দেশের উপকূলে আঘাত হানতে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। আজ সোমবার সন্ধ্যায় উপকূল স্পর্শ করেছে সিত্রাংয়ের অগ্রভাগ। এরপর থেকেই শুরু হয়েছে প্রবল ঝড়ো বাতাস ও বৃষ্টি। মধ্যরাতে ঝড়টির মূল অংশ বরিশাল ও চট্টগ্রামের উপকূল অতিক্রম করবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে ইতিমধ্যে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, বরিশাল, ঝালকাঠি, ভোলা, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, বরগুনা, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর ও নোয়াখালী জেলা এবং ওই এলাকার দ্বীপ ও চরগুলোকেও ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম বন্দর ও কক্সবাজার উপকূল এবং সেখানকার চর ও দ্বীপগুলোকে ৬ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, সন্ধ্যায় বাংলাদেশের উপকূল স্পর্শ করেছে সিত্রাংয়ের অগ্রভাগ। আজ মধ্যরাতে ভোলার কাছে দিয়ে চট্টগ্রাম ও বরিশালের উপকূল দিয়ে এর মূল অংশ প্রবেশ করবে বা আঘাত করবে। ভোররাতের দিকে সিত্রাংয়ের প্রভাব ক্রমশ কমে যাবে। তবে এর প্রভাবে দেশের উপকূলে এবং অন্যান্য অঞ্চলেও কাল বৃষ্টি হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ঘূর্ণিঝড়ের সময় অমাবস্যা থাকায় জোয়ারের উচ্চতা স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ থেকে আট ফুট পর্যন্ত উঁচুতে উঠতে পারে। এ কারণে দেশের উপকূলের বেশির ভাগ এলাকা ওই জোয়ারে প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা আছে। এর সঙ্গে ভারি বৃষ্টি যুক্ত হওয়ায় দেশের উপকূলের সব কটি জেলায় স্বল্পস্থায়ী বন্যা হতে পারে। ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কায় দেশের উপকূলের ১৫টি জেলার নদীবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে বরিশালে ২৪ ঘণ্টায় ২৬০.৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ৪৫ কিলোমিটার বেগে সর্বোচ্চ বাতাস বয়ে গেছে। সোমবার সন্ধ্যায় বিষয়টি জানিয়েছেন বরিশাল আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক আব্দুল কুদ্দুস।
তিনি বলেন, সোমবার বিকেলের দিকে বরিশালে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়েছে, যা সন্ধ্যার পরেও অব্যাহত রয়েছে। টানা বৃষ্টি ও ঠাণ্ডা বাতাসের কারণে দিনের চেয়ে আজ রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। এদিকে টানা বৃষ্টিতে বরিশাল নগরের বিভিন্ন এলাকা ও রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। শহর সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নদী তীরবর্তী অঞ্চলসহ ফসলি ক্ষেত ও মাছের ঘেরও তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। পাশাপাশি ঘরবন্দি হয়ে পড়েছেন অনেক মানুষ।
জেএ/এসবি২
আপনার মতামত লিখুন :