সালেহ্ বিপ্লব, আখিরুজ্জামান সোহান: পূর্ব-মধ্যবঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পশ্চিম-মধ্যবঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে। এটি এখন সরাসরি বাংলাদেশের দিকে মুখ করে দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে।
এটি রোববার দিনগত মধ্যরাতে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৭০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬২৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৫০ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড়টি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।
সোমবার (২৪ অক্টোবর) ভোরে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-৭) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি গভীর নিম্নচাপটি ঘুর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। থাইল্যান্ড এই ঝড়টির নাম দিয়েছে সিত্রাং। সমুদ্রবন্দরগুলোতে ৪ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। উপকূলের ১৯ জেলায় আঘাত হানতে পারে সিত্রাং। সোমবার দিবাগত রাত থেকে মঙ্গলবার সন্ধ্যার মধ্যে এটি আঘাত হানার সম্ভাবনা রয়েছে।
সম্ভাব্য ঘুর্ণিঝড় মোকাবেলায় এরই মধ্যে প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার। রোববার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের যে গতিপথ রয়েছে, তা যদি পরিবর্তন না হয় তাহলে এটি ভারতের ভুবনেশ্বর ও পশ্চিম বাংলায় আঘাত হানবে। আর এটি যদি পরিবর্তন হয়, সে ক্ষেত্রে এটি দেশের উপকূলের ১৯ জেলার ৭৩০ কিলোমিটার এলাকায় আঘাত করবে। এটির গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১১০ কিলোমিটার।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত তিন বছরে যে ঘূর্ণিঝড় হয়েছে, তার মধ্যে এই সিত্রাং বেশি এলাকায় বিস্তৃত হবে। এটি মোকাবিলায় আমাদের সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। যে সমস্ত উপকূলীয় এলাকায় ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে পারে, সেসব এলাকায় শুকনো খাবার ও জরুরি ত্রাণসহায়তা পাঠানো হচ্ছে।
এসব এলাকার সাইক্লোন সেন্টারগুলোকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, এবার ৩ থেকে ৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। আকারে বড় হলেও এটির তীব্রতা কম থাকবে।
ঘুর্ণিঝড় মোকাবেলার প্রস্তুতি নিয়ে রোববার বিকেলে বৈঠক করেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও জেলা প্রশাসকদের সঙ্গে এ ভার্চুয়াল বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস।
আপনার মতামত লিখুন :