শিরোনাম
◈ শাহবাগে বিক্ষোভ: আগামী ৭২ ঘণ্টায় পার্বত্য তিন জেলায় অবরোধের ঘোষণা  ◈ পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষ : রাঙ্গামাটিতে ১৪৪ ধারা জারি ◈ বাইতুল মোকাররমে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, সতর্ক অবস্থানে সেনাবাহিনী ও পুলিশ (ভিডিও) ◈ আইন নিজের হাতে তুলে নিলে কঠোর ব্যবস্থা : পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ◈ দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর আজ স্বাভাবিক দীঘিনালার পরিস্থিতি ◈ জাতিসংঘ অধিবেশনে যাদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে মুহাম্মদ ইউনূসের ◈ অস্বস্তিকর গরম: অবসান হবে কবে? জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর ◈ হাসান মাহমুদের ৫ উইকেট, ভারত থামলো ৩৭৬ রানে ◈ অস্ট্রেলিয়ার তা-বে উড়ে গেলো ইংল্যান্ড  ◈ নারী দলের লঙ্কান কোচকে ২০ বছরের নিষেধাজ্ঞা দিলো ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া

প্রকাশিত : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ০১:৫৬ দুপুর
আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ০১:৫৬ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পদ্ম ও লাল শাপলার সৌন্দর্যে মন কাড়ে দর্শকদের

এ এইচ সবুজ, গাজীপুর : ষড়ঋতুর এই দেশে বাংলার প্রকৃতি নতুন রুপে সাজে ভিন্ন ভিন্ন ঋতুতে। সবুজ পত্র-পল্লবে ছেয়ে যায় বৃক্ষরাজি। বিশেষ করে বর্ষাকালে বিলে-ঝিল, ডোবা- নালা, পুকুর-জলাশয়ে থাকা জলজ উদ্ভিদগুলো প্রাণ ফিরে পায়। শীতের আগমন না ঘটলেও আবহমান গ্রাম-বাংলার প্রকৃতি সেজেছে পদ্ম ও লাল শাপলায়। ভোরের আলো ফুটতেই বিলের পানিতে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে যায় পদ্ম ও শাপলা।

সেই সাথে নানা প্রজাতির পাখির কিচিরমিচির কোলাহলে ঘুম ভাঙ্গে নরাট বিলের আশপাশের মানুষদের। সকাল থেকেই শুরু হয় ভ্রমণ পিপাসু ও প্রকৃতি প্রেমীদের আনাগোনা। শাপলা বাংলাদেশের জাতীয় ফুল। আর এই শাপলা গ্রাম-গঞ্জের রুপ-প্রকৃতির অলঙ্কারও বটে।

বলছিলাম গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার বারিষাব ও টোক ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নরাট বিলের শাখা-প্রশাখার কথা। স্থানীয়দের মুখে প্রচলিত এই নরাট বিলের রয়েছে ৯টি শাখা। যা স্থানীয়দের মুখে গোপ নামেই পরিচিত। আর প্রতিটি শাখা বা গোপেই ফোটে লাল শাপলা।

তেমনিভাবে প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নেওয়া লাল শাপলা-পদ্মফুল সৌন্দর্য বাড়িয়ে দিয়েছে পাচুঁয়া এবং বর্জাপুর গ্রামের নরাট বিলের বিভিন্ন অংশে। সরেজমিন মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে টোক ইউনিয়নের পাচুঁয়া গ্রামের বাউন পাড়দিয়া বিলে এমনই দৃশ্য দেখা যায়।

দেখে মনে হবে এ যেন লাল শাপলার রাজ্য। বিলের যে দিকেই চোঁখ যায় লাল শাপলার সৌন্দর্য দেখে অবাক হতে হয়। অন্যদিকে শুধুমাত্র বর্জাপুর এলাকার একটি অংশেই ফুটেছে দৃষ্টিনন্দন পদ্মফুল। শাপলা ফুল না ফুটলেও হাজার হাজার পদ্মফুল ফুটেছে বিলটিতে। সারি সারি পদ্মফুলের অপার সৌন্দর্য বিনোদন প্রেমীদের করেছে মুগ্ধ।

দূর থেকে দেখলে মনে হয়, যেন ফুলের বিছানা পেতে রেখেছে কেউ। এ সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসে প্রতিদিন শত শত ফুল ছিঁড়ে নিয়ে বিলের সৌন্দর্য নষ্ট করছেন অনেকেই। বর্ষাকালে এ বিলের অধিকাংশ জমিতেই প্রাকৃতিকভাবে পদ্মফুল জন্মে।

আর এ কারণে এখন বিলটি পদ্ম বিল নামেই পরিচিত হয়ে উঠেছে। স্থানীয়রা জানান, শাপলা, শালুক,কচুরিপানা আর পদ্মফুলে সজ্জিত হয় খাল-বিল। সৌন্দর্য পিপাসুদের কাছে এই পদ্মবিল হয়ে উঠেছে অন্যতম দর্শনীয় স্থান। প্রতিদিন সকাল এবং বিকেল হলেই ভিড় করতে থাকেন দূর-দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীরা। অনেকে বিলের পানিতে নেমে কুঁিড়য়ে নিয়ে আসা পদ্মের সঙ্গে ছবি তোলেন।

বিলের পাড়ে বসেই দর্শনার্থীরা আনন্দ উপভোগ করেন। তবে এই বিলে ঘুরে বেড়ানোর জন্য নৌকা চলাচলের কোন সুযোগ নেই। স্থানীয়দের মাছ ধরার জন্য রয়েছে দু’জন বসতে পারে এমন ছোট্ট ডিঙি নৌকা। এসব ডিঙি নৌকা দিয়ে মাত্র একজন মানুষ ঘুরতে পারে। স্থানীয়দের জীবিকা নির্বাহের অন্যতম মাধ্যমও হয়ে
 উঠেছে এই পদ্মফুলের বিল।

অনেকেই পদ্ম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তাদের মাধ্যমেই এই পদ্মফুল চলে যাচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা শহরগুলোতেও। ঘুরতে দর্শনার্থীরা অনেকেই জানান, এই বিলটির আগাছাগুলো যদি সরকারীভাবে পরিষ্কার করা হতো তাহলে বিলের নান্দনিক সৌন্দর্য আরো আকর্ষনীয় হয়ে উঠতো।

বিশেষ করে কচুরিপানা এবং লম্বা প্রজাতির এক ধরণের জলজ উদ্ভিদ পদ্ম গাছ এবং ফুলের সৌন্দর্যকে নষ্ট করে ফেলেছে। এখানে ঘুরতে আসা দর্শনার্থী কালের কন্ঠ শুভসংঘের ঘাগটিয়া ইউনিয়নের আহবায়ক মো: আশিকুল ইসলাম আশিক জানান, এলাকায় ঘুরে বেড়ানোর মতো তেমন কোন পর্যটন কেন্দ্র নেই।

তাই নরাট বিলসহ বিভিন্ন বিলে পদ্ম ও লাল শাপলা দর্শনার্থীদের আকর্ষন করছে। এখানকার লাল শাপলা ও পদ্ম বিলের সৌন্দর্য দেখে যে কেউ বিমোহিত হবে। প্রতি বছরই প্রাকতিকভাবে জন্ম নেওয়া এখানকার বিলগুলোর লাল শাপলা-পদ্মফুল দর্শনার্থীদের হাতছানি দেয়।

পুরো বিল যেন লাল শাপলা এবং গোলাপী আর সাদা রঙের পদ্ম ফুলে ভরে উঠে। এ যেন বিধাতার এক অপরুপ সৃষ্টি যা দেখলে যে কারো মন জুড়িয়ে যায়। আগত দর্শনার্থীরা যে যার মতো করে লাল শাপলা ও পদ্ম বিলের
সৌন্দর্র্য উপভোগ করেন আর ক্যামেরার ফ্রেম বন্দি করে রাখছেন এ বিলের অপরুপ সৌন্দর্য।

লাল শাপলা ও পদ্ম বিলে ঘুরতে আসা মো: আবির হাসান, দিদার, জেসমিন, সারমিন, মো: ফাহাদ, শামীম মিয়া, নাজমুল হাসান জানান, প্রতিদিনই অসংখ্য পর্যটক এই লাল শাপলা ও পদ্ম ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসছেন। আমরাও বিলের পানিতে নেমে লাল শাপলা ও পদ্ম কুড়িয়েছি।

রাশি রাশি পদ্ম-লাল শাপলায় বিলটা পুরো ছেয়ে গেছে। এমন সৌন্দর্য দেখার জন্য সবাইকে অন্তত একবার হলেও এ বিলে আসা উচিত।

পড়ার বই বা ছবিতে দেখা লাল শাপলা ও পদ্ম বাস্তবে ছোঁয়ে দেখার আনন্দ এনে দেয় শিশুদের মাঝে। আর এভাবেই নিত্যদিন ভ্রমনপিপাসুদের আগমনে আনন্দ বিরাজ করে এলাকাবাসীর মনেও। সম্পাদনায়: আল আমিন 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়