নিজস্ব প্রতিবেদক: সুন্দরবনের করমজলে দেশের একমাত্র বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের মা কুমির পিলপিলের ৩৮টি ডিম থেকে ৩৮টি কুমির ছানা বের হয়েছে। ২০০০ সালের পর থেকে এই প্রথম কুমিরের ডিম থেকে শতভাগ ছানা বের হলো।
সোমবার (২২ আগস্ট) সকালে করমজল প্রজনন কেন্দ্রে রাখা ডিজিটাল ইনকিডবেটর (কৃত্রিমভাবে তাপের ব্যবস্থা করে ডিম ফোটানোর যন্ত্র) থেকে কুমিরের ছানাগুলো বের হয়।
গত ২২ জুন করমজল কেন্দ্রের পুকুর পাড়ে মা কুমির পিলপিল ৩৮টি ডিম পেড়েছিল। এরপর ওই ডিমগুলো বাচ্চা ফোটার জন্য ডিজিটাল ইনকিউবেটরে রাখা হয়। দীর্ঘ ৬২ দিন পর সেই ডিমের সবটি থেকে কুমির ছানা বের হয়।
সুন্দরবনের করমজল প্রজননকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির জানান, এর আগেও ইনকিউবেটর থেকে কুমিরের ছানা ফুটেছে। তবে এই প্রথমবার ডিজিটাল ইনকিউবেটর ব্যবহার হওয়ায় শতভাগ কুমিরের ডিম থেকে ছানা ফুটেছে। এটা এক ধরনের সাফল্য বলেই তিনি মনে করেন।
তিনি আরও বলেন, মূলত বিলুপ্তপ্রায় লবণপানি প্রজাতির কুমিরের সংরক্ষণ, প্রজনন এবং বংশ বিস্তারের লক্ষ্যেই ২০০০ সালে করমজলে আট একর জমির ওপর কুমির প্রজনন কেন্দ্র গড়ে তোলে বনবিভাগ। তখন রেমিও এবং জুলিয়েট যুগল দিয়ে শুরু করা হয় কুমিরের প্রজনন কার্যক্রম। করমজল প্রজনন কেন্দ্রে প্রথম ডিম পাড়া কুমির রোমিও-জুলিয়েট যুগল এর আগে অনেক ছানার বাবা-মা হয়েছে। রোমিও ও জুলিয়েট যুগল বয়স্ক এবং দুর্বল হয়ে পড়ায় বেশ আগে থেকেই ডিম দেওয়া বন্ধ হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে এই কেন্দ্রের একমাত্র মা কুমির পিলপিলই ডিম পাড়ছে। এ নিয়ে কুমির পিলপিল ১১ বার ডিম দিল। তবে ইতোপূর্বে কুমিরের ডিম থেকে বাচ্চা ফোটার হার ছিল ৬০- ৬৫ ভাগ। যদিও এর আগে এনালগ ইনকিউবেটরে কুমিরের ডিম বাচ্চা ফোটানোর জন্য সংরক্ষণ করা হতো। এবারই প্রথম ডিজিটাল ইউকিউবেটর ব্যবহার করার ৩৮টি ডিমের সবটি থেকেই কুমির ছানার জন্ম হয়েছে।
সুন্দরবন করমজলের কুমিরের এই ৩৮ ছানার জন্মের আগে ছোট-বড় মিলিয়ে সেখানে ৯১টি কুমির ছিল। বর্তমানে এই ৩৮টি কুমির ছানা নিয়ে কুমির প্রজনন কেন্দ্রে সর্বমোট ১২৯টি কুমির রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :