হ্যাপী আক্তার: বাঘ, সিংহের পর যে প্রাণীটির কথা সবার চোখের সামনে ভেসে ওঠে তা হলো হাতি। জীবজগতের বৃহত্তম স্থলচর স্তন্যপায়ী প্রাণী এটি। জনসচেতনতা বাড়াতে ২০১২ সালে কানাডিয়ান চলচ্চিত্র নির্মাতা প্যাট্রিসিয়া সিমস, মাইকেল ক্লার্ক ও থাইল্যান্ডের এলিফ্যান্ট রিইন্ট্রোডাকশন ফাউন্ডেশনের প্রধান শিভাপর্ন দারদারানন্দ ‘বিশ্ব হাতি দিবস; পালন করা শুরু করেন। এরপর থেকে প্রতি বছরের ১২ আগস্ট বিশ্ব হাতি দিবস পালিত হয়ে আসছে।
নগরায়ন ও বনাঞ্চল ধ্বংসের কারণে একদিকে যেমন নষ্ট হচ্ছে হাতির বিচরণভূমি। অন্যদিকে, কালোবাজারি ও চোরাকারবারীদের শিকারে পরিণত হয় বিলুপ্ত হচ্ছে প্রাণী জগতের এই বৃহত্তম স্থলচর প্রাণী।
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারে জাতিগত সহিংসতার শিকার হয়ে উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। বনবিভাগের সাড়ে ৬ হাজার একর সংরক্ষিত বনের গাছপালা আর পাহাড় কেটে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া হয়। আর জ্বালানি সংগ্রহে ধ্বংস হয়েছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আশপাশের আরও ২ হাজার একর গহীন বনাঞ্চল।
এসব পাহাড় ও বনভূমি ছিল প্রাণিদের অবাধ বিচরণ ও অভয়াশ্রম। কিন্তু রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জীববৈচিত্র্য। বনবিভাগের ২০১৭ সালের জরিপ অনুযায়ী, রোহিঙ্গা অধ্যুষিত কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বনাঞ্চলে বিচরণকারী হাতি ছিল ৬৩টি। কিন্তু আবাসস্থল ধ্বংস ও খাদ্য সংকটে মারা গেছে অনেক হাতি।
বন্যহাতি রক্ষায় অভয়াশ্রম গড়ে তোলার পাশাপাশি, খাদ্য সংস্থানে কার্যকর পদক্ষেপের দাবি পরিবেশবিদদের।
তথ্য অনুসারে, ২০০২ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে হাতিগুলোর ভৌগলিক পরিসীমা প্রায় ৩০ শতাংশ কমেছে। আফ্রিকাজুড়ে বড় বড় উদ্যান গড়ে তোলার কারণে হাতির আবাসস্থল ধ্বংসের বিষয়টি স্থিতিশীল হয়েছে। তবে অবৈধ শিকার প্রাণীটির অস্তিত্বের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত ১০ বছরে সারাবিশ্ব থেকে হাতি কমেছে ৬২ ভাগ। অনেকেরই আশঙ্কা আগামী দিনে হাতি সংরক্ষণ এবং গ্রামবাসীদের হাতে হাতি নিধন ও চোরাশিকারীর উপদ্রব কমাতে না পারলে বিশাল দেহের ডাইনোসরের মত বিলুপ্ত হবে হাতিও। স্থলচরদের মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রাণী হাতিও এখন বিলুপ্ত হওয়ার শঙ্কায়। এই নিয়ে বিশ্ব জুড়ে চলছে আলোচনা। শঙ্কা প্রকাশ করেছেন প্রাণী বিশ্লেষকরা।
ধারণা করা হচ্ছে, প্রতি বছর যে হারে হাতি কমছে. তাতে ১০ বছর পর চিড়িয়াখানা ছাড়া আর কোথাও এই প্রাণীর অস্তিত্ব থাকবে না। এবিনিউজ, জাগোনিউজ
আপনার মতামত লিখুন :