ডেস্ক রিপোর্ট: ভারতের উত্তরে সিকিম ও ভুটানে ভারি বৃষ্টির জেরে তিস্তা অব্যাহতভাবে পানি ছাড়ছে ভারত। ফলে তিস্তা ও সংরক্ষিত এলাকায় এখনো জারি রয়েছে রেড অ্যালার্ট। জলঢাকা নদীতে জারি রয়েছে হলুদ সংকেত। পশ্চিমবঙ্গের সেচ দপ্তর সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ব্যারেজে পানির চাপ কমাতে শুধুমাত্র তিস্তার গজলডোবা ব্যারেজ থেকেই মঙ্গলবার সকাল ৬টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ৮ লাখ ৩৬ হাজার কিউসেকের বেশি পানি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে সেচ দপ্তর।
মঙ্গলবার সকাল ৬টায় ছাড়া হয় প্রায় ৯১ হাজার ৮১৮ কিউসেক পানি। সকাল ৭টায় প্রায় ৯১ হাজার কিউসেক। সকাল ৮টায় ছাড়া হয় প্রায় ৯৫ হাজার ৩৪৯ কিউসেক পানি। সকাল ৯টায় ছাড়া হয় ৮৮ হাজার ২৮৬ কিউসেক পানি। সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত ৭৭ হাজার ৭০০ করে প্রতি ঘণ্টায় ছাড়া হয় প্রায় ৩ লাখ ১০ হাজার ৮০০ কিউসেক পানি। দুপুর ২টায় ছাড়া হয় ৮১ হাজার ৭২৫ কিউসেক পানি। শেষ পাওয়া খবরে বেলা ৩টার সময় ছাড়া হয় ৭৭ হাজার ৬৯২ কিউসেক পানি।
সেচ দপ্তর বলছে, সমতলে ভারি বৃষ্টি থাকলেও তার প্রভাব পানি ছাড়ার ক্ষেত্রে খুব বেশি পড়েনি। পাহাড়ের পানির ঢল এখনো অব্যাহতভাবে নামছে সমতলে। ফলে অব্যাহত থাকতে পারে পানি ছাড়ার প্রক্রিয়া। এই অবস্থায় লাল সতর্কতা তুলে নেয়ার এখনই সম্ভাবনা নেই।
আলিপুর আবহাওয়া দপ্তরের অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, উত্তরবঙ্গে আরও প্রায় ২৪ ঘণ্টা ভারি বর্ষণ চলবে। বিশেষ করে উত্তরের পাঁচটি জেলা দার্জিলিং, কালিম্পং, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে ভারি বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। এছাড়া আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দুটি জেলা আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার কিছুটা জলপাইগুড়ি জেলাতে, ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। তবে ৪৮ ঘণ্টা পর থেকে ভারি বৃষ্টির তেমন কোনো সতর্কতা নেই।
এদিকে মঙ্গলবার সকালে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড়ে দার্জিলিংয়ের কালিম্পংয়ের কাছে রিকিদারায় ধস নামে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কে। ১০ নম্বর জাতীয় সড়কটি মূলত পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে সিকিমকে সংযোগকারী একটি জাতীয় সড়ক। ধসের কারণে রাস্তার দুই পাড়েই আটকে পড়ে শত শত যানবাহন। পর্যটকদের পাশাপাশি আটকে পড়ে স্থানীয়রাও। ইতোমধ্যেই রাস্তা পরিষ্কারের হাত দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। তবে মঙ্গলবার গভীর রাতের আগে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না এমনটাই মনে করা হচ্ছে।
সমতলে প্রবল বর্ষণের জেরে নাগরাকাটা ব্লকের পানিঝরা বন বস্তির কাছে মূর্তি নদীতে ভেসে আসে একটি হস্তি শাবক। সকাল সাড়ে ৭টা নাগাদ স্থানীয় বাসিন্দারা নদীর মধ্যে ওই শাবকটিকে দেখতে পায়। পরে খুনিয়া রেঞ্জের বন কর্মীরা হস্তি শাবকটিকে উদ্ধার করে। উত্তরবঙ্গ ভারি বৃষ্টিতে ভাসলেও এখনো দক্ষিণবঙ্গে আগামী পাঁচ দিন ভারি বৃষ্টির সর্তকতা নেই।
আপনার মতামত লিখুন :