শিরোনাম
◈ কুষ্টিয়ায় পদ্মার ভাঙনে জাতীয় গ্রিডের টাওয়ার নদীতে বিলীন ◈ ভারতে থাকার মেয়াদ শেষ হচ্ছে, কোন আইনের বলে ভারতে থাকবেন শেখ হাসিনা? ◈ (২০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার ◈ স্থিতিশীল ডলারের দর, ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও ◈ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ‘গ্যারান্টিতে’ নগদ টাকার সংকট কাটছে যে ৫ ব্যাংকের ◈ হত্যাকাণ্ড নিয়ে অপপ্রচার চলছে, জাবিতে কোন কমিটিই নেই : ছাত্রদল ◈ গণপিটুনিতে মৃত্যু: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দুঃখপ্রকাশ, বৈষম্যবিরোধীদের নিন্দা, ফেসবুকে নানা সমালোচনা ◈ ভারতের গোলা যাচ্ছে ইউক্রেনে, ক্ষুব্ধ রাশিয়া ◈ সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান সুনামগঞ্জে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার গ্রেফতার ◈ মব জাস্টিস শুধু সহিংসতা ও অন্যায় সৃষ্টি করে: সমন্বয়ক হাসনাত

প্রকাশিত : ১১ জুলাই, ২০২২, ০৬:৪৬ বিকাল
আপডেট : ১১ জুলাই, ২০২২, ০৬:৪৬ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

এবারের ঈদে পর্যটকশূন্য মৌলভীবাজার

পর্যটকশূন্য মৌলভীবাজার

স্বপন দেব :  বিশাল হাকালুকি হাওর, পাহাড়ের রাজ্যে সবুজের কার্পেট বিছানো গালিচার মতো থোকা থোকা বাগানের চায়ের গাছ, দিগন্ত বিস্তৃত রাবার বাগান, আর আঁকাবাঁকা পিচঢালা পথের ধারে সবুজ প্রকৃতি এবার টানতে পারছে না পর্যটকদের। 

প্রতিটি ঈদে যেখানে মৌলভীবাজারের চায়ের রাজধানী খ্যাত শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জ, কুলাউড়া ও বড়লেখার পর্যটন স্পটগুলো দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা হাজার হাজার পর্যটকদের ভীড়ে মুখরিত থাকতো এবার স্মরণকালে ভয়াবহ ও দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় লোকজন শূন্য হয়ে আছে। নেই কোথাও কোলাহল, অনেকটা নির্জীব জনশূন্য গোটা জেলার পর্যটন স্পটগুলো।

নানা বয়সের মানুষকে রঙিন পোশাক পরে এখানে সেখানে ঘুরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে না পর্যটকদের। শ্রীমঙ্গলের সব পর্যটন স্থানে অনেকটা একরকমের দৃশ্য।

মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ,  সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যার প্রভাবে সিলেট বিভাগ পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে। শ্রীমঙ্গলের হোটেল রিসোর্টের বেশির ভাগই ফাঁকা পড়ে আছে। সকল প্রকার প্রস্তুতি নিয়ে পর্যটণ সংশ্লিষ্টরা কাঙ্খিত পর্যটক না আসায় মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। 

কুলাউড়া, জুড়ি ও বড়লেখার বিশাল এলাকা জুড়ে হাকালুকি হাওরে পানিতে ভরপুর থাকলেও ঘাটগুলোতে ইঞ্জিনের নৌকা নিয়ে মাঝিদের বসে থাকতে দেখা গেছে। পালেমোড়া এলাকার মাঝি কাশেম মিয়া ও রাসেল বলেন অনেক আশা নিয়ে বসেছিলাম ঈদের সময় দর্শনার্থীদের নিয়ে হাওরে ঘুরে কিছু টাকা আয় করবো। কিন্তু আমাদের আশায় বাঁধ সেজেছে ভয়াবহ বন্যা। সংসার কিভাবে চালাবো সেই চিন্তায় দিন কাটছে।

কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গলের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে তেমন পর্যটকের দেখা মেলেনি। কিছু পর্যটককে বিকেলে দেখা গেছে। চা-বাগান, বধ্যভূমি, চা কন্যা ভাস্কর্য, বিটিআরআই, সাত রঙের চায়ের দোকান, খাসিয়া পল্লী ও মনিপুরী পাড়াতে সাধারণ ছুটির দিনে যে মানুষ থাকে, তার চেয়েও অনেক কম পর্যটকরে ঘুরতে দেখা যায়।

ঢাকা থেকে আসা আমজাদ আলী, সুমনা আক্তার,দিপক পাল বলেন, ঈদের ছুটিতে ঘুরতে এসেছি শ্রীমঙ্গলে। চাবাগানে ঘুরলাম, লাউয়াছড়ায় গেলাম। লোকজন খুবই কম, অনেটা শান্তিতে ঘুরতে পেরেছি। পরিবার নিয়ে পর্যটনের রাজধানীতে এসে ভালো লাগল। ইয়াসমিন বেগম পরিবারসহ শনিবার রাতে একটি রিসোর্টে উঠেছেন। তিনি বলেন, দিনে প্রচন্ড গরম থাকায় ঈদের দিন সকালে বের হতে পারেননি তবে বিকেলে ঘুরতে বের হয়েছি।

পর্যটক কম থাকায় এ ব্যবসায় সংশ্লিষ্ট অনেকেই সংকটে পড়েছেন। পর্যটকদের বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যান গাইডরা। কিন্তু পর্যটক একেবারেই না থাকায় তাঁদের মন ভালো নেই।
ট্যুর গাইড শ্যামল দেববর্মা বলছিলেন, এই সময়ে অনেক ট্যুর গাইডের প্রয়োজন পড়ে। আমরা পর্যটকদের নিয়ে ঘুরে বেড়াই। এবার পর্যটকেরা নেই, আমরা সারা দিনেও পর্যটক পাইনি। খুবই কঠিন পরিস্থিতি আমাদের জন্য।

পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এবার পর্যটক যে এত কম হবে, তা আমরা ভাবতে পারিনি। তাঁদের প্রস্ততি থাকলেও পর্যটক না থাকায় ব্যবসার ক্ষতি নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছেন।  

শ্রীমঙ্গলের গ্রিণলিফ গেস্টহাউসের মালিক এস কে দাশ সুমন বলেন, ‘ঈদ কিংবা বড় কোনো ছুটিতে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অনেক প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন। এ সময় দেশবিদেশ থেকে প্রচুর পর্যটক আসবেন। 

পর্যটকের পদচারণে শ্রীমঙ্গলসহ পর্যটন এলাকা মুখরিত থাকে, তবে এ বছর চিত্রটা ভিন্ন। সিলেট ও সুনামগঞ্জের বন্যার প্রভাবে এখানে পর্যটকের সংখ্যা নেই বললেই চলে। 

ফলে দীর্ঘ মেয়াদী অর্থনৈতিক মন্দায় পরবে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। এই অপূরণীয় ক্ষতি যা কাটিয়ে ওঠা তাদের জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন ঈদকে সামনে রেখে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিলেও পর্যটক না আসায় সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে বলে পর্যটন শিল্পের সাথে জড়িতরা মনে করছেন।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়