সোহাগ হাসান, সিরাজগঞ্জ: [২] সিরাজগঞ্জ ও কাজিপুরে কমতে শুরু করেছে যমুনা নদীর পানি। ফলে জেলার বন্যার পরিস্থিতি উন্নতি হচ্ছে। তবে দীর্ঘ সময় পানিবন্দি থাকা এলাকাগুলোতে দেখা দিচ্ছে পানিবাহিত নানা রোগ। পানি কমলেও জেলার ৫টি উপজেলার ৩৪টি ইউনিয়নের প্রায় ১ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।
[৩] চলতি বন্যায় সিরাজগঞ্জ সদর, শাহজাদপুর ও চৌহালীতে নৌকা ও পানিতে ডুবে প্রায় ছয় জনের মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া যায়।
[৪] মৃত ব্যক্তিরা হলেন, সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার সাহেদ নগর ব্যাপারী পাড়ার আলী হোসেনের ছেলে রোমান হোসেন (১৪); তিনি সবুজ কানন স্কুল এন্ড কলেজের ৮ম শ্রেনীর ছাত্র, শাহজাদপুর উপজেলার দ্বারিয়াপুর মহল্লা আব্দুল হামিদের ছেলে মারুফ হোসেন (১৮)। তিনি শাহজাদপুর সরকারী কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। একই মহল্লার শাহ আলমের ছেলে সজল হোসেন (১৮), তৌহিদের ছেলে তন্ময় শেখ (২০)। চৌহালী উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের ইটাইল গ্রামের বায়েজিদের ছেলে কাউছার (৩), একই উপজেলার খাষপুকুরিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম কোদালিয়া গ্রামের মজনু মিয়ার ছেলে মাহিম হোসেন (৫) এর মৃত্যু হয়েছে বলে ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস সুত্রে জানা যায়।
[৫] স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৭ জুলাই থেকে সিরাজগঞ্জে বন্যার পানি কমতে শুরু করলে অন্যত্র আশ্রয় নেওয়া বন্যা কবলিত মানুষ ঘরে ফিরতে শুরু করেছিল। কিন্তু গত ১০ জুলাই আবারও যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপাকে পরে এসব এলাকার মানুষ।
[৬] শনিবার (১৩ জুলাই) সকালে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রঞ্জিত কুমার সরকার বলেন, গত ১২ ঘন্টায় সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর শহর রক্ষা বাঁধ হার্ড পয়েন্টে ১০ সেন্টিমিটার পানি কমে বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে, কাজিপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার কমে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
[৭] সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, যমুনা নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। তবে উজানে ভারী বর্ষ হচ্ছে। সেই পানি বাড়লে যমুনায় বাড়বে। চলতি বন্যায় জেলার ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় ভাঙন রোধে বালির বস্তা ফেলা হচ্ছে। তবে চলতি বন্যায় বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা নেই।
[৮] তিনি আরও জানান, যমুনাসহ অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের প্রায় এক লাখ মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। যমুনার পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমির ফসল। ফলে চরম দুর্ভোগে রয়েছে বন্যাকবলিত এলাকার কৃষক ও শ্রমজীবীরা।
[৯] সিরাজগঞ্জ ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আকতারুজ্জামান বলেন, বন্যাকবলিত মানুষের জন্য ১৩৩ টন চাল, ৫ লাখ টাকা, ৩০০ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।
প্রতিনিধি/এনএইচ
আপনার মতামত লিখুন :