হাবিবুর রহমান সোহেল, কক্সবাজার: [২] বাংলাদেশ বিনিয়োগ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) সচিব বলেন, কক্সবাজার জেলাকে কিভাবে আমরা দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ব্র্যান্ডিং করতে পারি; সেই বিষয়ে আমরা কাজ করছি। আমরা আশা করি, এখানে অচিরেই দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আসবে। বিনিয়োগকারীদের জন্য এখানে সহায়ক অবকাঠামো গড়ে তুলছে সরকার। সম্প্রতি কক্সবাজার হিল ডাউন সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সাথে আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন।
[৩] তিনি বলেন, সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ও এসএস বিনিয়োগকারী ও সরকারের মধ্যে সেতু হিসেবে কাজ করছে। বিনিয়োগকারীরা বিডা’র অনলাইন প্ল্যাটফর্মে নিবন্ধনের মাধ্যমে সরকারের ৪৮ সংস্থার সেবা পাবেন। এতে সাশ্রয় হবে সময় ও অর্থের। পেপারলেস সেবার কারনে কমবে হয়রানি। কোন সেবার জন্য বিনিয়োগকারীকে আর অন্য কোন সংস্থার দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হবে না।
[৪] এ সময় তিনি পর্যটন খাতের অপার সম্ভাবনাকে মাথায় রেখে কক্সবাজারে বিনিয়োগের জন্য বিনিয়োগকারীদের আহ্বান জানান।
[৫] ড. খন্দকার আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার কাজ চলছে। ইতোমধ্যে ঢাকা-কক্সবাজার রেললাইন চালু হয়েছে। কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কও চার লেনে উন্নীত করা হবে। এসব উদ্যোগ দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সহজভাবে কক্সবাজারে আসার ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে।’
[৬] প্রধানমন্ত্রীর যে ১০ টি বিশেষ উদ্যোগের মধ্যে বিনিয়োগ বিকাশ অন্যতম উল্লেখ করে ড. খন্দকার আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘দেশের উন্নয়নের জন্য দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের কোন বিকল্প নেই। বিডার কাজ হলো, বিনিয়োগকারীদের সহজে সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা। বিডা'র ওএসএস প্ল্যাটফর্মে একটি সিঙ্গেল পয়েন্ট এন্ট্রির মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা তাদের সেবার জন্য আবেদন করতে পারে। আলাদাভাবে সরকারের অন্যান্য কোন প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার দরকার নাই। এখানে বিভিন্ন সময় দেখা যায় বিনিয়োগকারীরা বিভিন্ন পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাছে যায়। তাদের আলাদাভাবে সেবাটা নিতে হয়। ইতিমধ্যে আমরা ৪৮ টি প্রতিষ্ঠানের সাথে সমঝোতা স্মারক করেছি। যাতে তারা বিডা'র সাথে যুক্ত হয়। আমরা ৪০টি প্রতিষ্ঠানের সেবা শুরু করেছি। বিডা তার ২২টি সেবা পুরোপুরি অনলাইনের মাধ্যমে দিচ্ছে।’
[৭] ড. খন্দকার আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘এই সুবিধার ফলে মাঝখানে অনৈতিক লেনদেনের কোন সুযোগ থাকছে না। যেহেতু এই সেবার জন্য শারীরিকভাবে আর কোন প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার দরকার পড়বে না। বিডার ওএসএস বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকেই ব্যবহার করে বিনিয়োগকারীরা এ সেবা গ্রহণ করতে পারেন, এর জন্য অফিসে আসার কোনো দরকার নেই। আমাদের অফিস আমরা পেপারলেস করে ফেলেছি।’
[৮] তিনি বলেন, প্রত্যেক জেলায় বিডার একটি ‘ব্যবসা ও বিনিয়োগ সহায়তা কমিটি’ আছে। এ কমিটির আহ্বায়ক জেলা প্রশাসক। আমরা মনে করি, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অন্যতম প্রধান উপাদান হলো স্মার্ট বিনিয়োগ ব্যবস্থা। আর বিনিয়োগ সেবাকে স্মার্টভাবে প্রযুক্তিগত ডিজিটাইজড করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে বিডা। বিনিয়োগকারীদের স্বল্প সময় ও ব্যয়ে দ্রুত হ্যাসেল ফ্রি স্মার্ট বিনিয়োগ সেবা নিতে হলে বিডার ওএসএস ব্যবহার করতে হবে।
[৯] ড. খন্দকার আজিজুল ইসলাম বলেন, পর্যটনের জন্য যে সমস্ত বিনিয়োগ কক্সবাজারে হবে, বিনিয়োগ যারা করেছেন বা করবেন তাদের বিডার পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে। কোন বিনিয়োগকারী যদি সেভেন স্টার বা ফাইভ স্টার মানের হোটেল স্থাপন করতে চান বা হোটেল-রিসোর্ট করতে চান তাদের নিবন্ধনসহ সব সেবা দেয়া হবে। অনেক সময় তাদের বিদেশি কাঁচামাল আনতে হয়। আমরা বিডা থেকে কাঁচামাল আনার জন্য আইআরসির সুপারিশ করে থাকি। এই সুপারিশটিও আমরা অনলাইনের মাধ্যমে করে থাকি।
[১০] তিনি বলেন, কক্সবাজারে পর্যটন খাতকে আমরা অগ্রাধিকার হিসেবে দেখছি। এখানে চিংড়ি শিল্পের সাথে জড়িতরাও আমাদের সেবাটি নিতে পারেন। এখানে লোকজন ভ্রমনে আসেন, হোটেলে থাকেন, কিছুটা ঘোরাফেরা করে চলে যান। এই পর্যটকদের কিভাবে আকৃষ্ট করে রাখা যায়, ধরে রাখা যায়, আরো কিভাবে ডাইভারসিফিকেশন করা যায় সেদিকে নজর দিচ্ছে সরকার। এ খাতে বিনিয়োগের বড় সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রতিনিধি/এনএইচ
আপনার মতামত লিখুন :