শিরোনাম
◈ পাট ও বৈচিত্র্য পূর্ণ পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে ভর্তুকি দেওয়া হবে: বস্ত্রমন্ত্রী ◈ সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যায় সাড়ে ৩ লাখ ডলার সহায়তা দিলো যুক্তরাষ্ট্র ◈ কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করেছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের ◈ চিকিৎসা সরঞ্জাম ক্রয়ে সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ◈ অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়ে শাহবাগ ছাড়লেন শিক্ষার্থীরা ◈ কিশোরগঞ্জে অটোরিকশাচালক হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড ◈ ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশে পরীক্ষামূলকভাবে হাইড্রোজেন জ্বালানী ব্যবহার সম্ভব হবে: প্রধানমন্ত্রী  ◈ আবারও আবার বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার ◈ প্রত্যয় কর্মসূচি: অর্থমন্ত্রীকে আলোচনায় বসার চ্যালেঞ্জ ঢাবি শিক্ষক সমিতির ◈ প্রথম বিতর্কে দুর্বল জো বাইডেন কারণ দেখালেন ভ্রমণ ক্লান্তির

প্রকাশিত : ০১ জুলাই, ২০২৪, ০৮:০১ রাত
আপডেট : ০১ জুলাই, ২০২৪, ১১:০৬ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শব্দদূষণে নাকাল রাজধানীবাসী, আইনের কার্যকর প্রয়োগ নেই

প্রতিকি ছবি

সালেহ্ বিপ্লব: [২] শব্দদূষণ বিধিমালা-২০০৬ অনুযায়ী আবাসিক এলাকায় রাত ৯টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত শব্দের মাত্রা ৪৫ ডেসিবেল এবং দিনের অন্য সময় ৫৫ ডেসিবেল অতিক্রম করতে পারবে না। বাণিজ্যিক এলাকায় তা যথাক্রমে ৬০ ও ৭০ ডেসিবেল। হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালতের আশপাশে ১০০ মিটার পর্যন্ত নীরব এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা রয়েছে। সেখানে রাতে ৪০ ও দিনে ৫০ ডেসিবেল শব্দমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া আছে। কিন্তু রাজধনীর কোথাও না মানা হচ্ছে না। 

[৩.১] রাজধানীতে দিনকে দিন বেড়েই চলেছে শব্দদূষণের মাত্রা। যানবাহনের অকারণ হর্ন, সাউন্ড বক্স বা মাইক এবং নির্মাণ কাজের মাত্রাতিরিক্ত শব্দ মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলছে। 

[৩.২] মাত্রাতিরিক্ত শব্দদূষণে শ্রবণশক্তি হারাচ্ছে নগরীর বাসিন্দারা। বিশেষ করে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থীসহ সব ধরনের মানুষ শব্দদূষণের ভুক্তভোগী। এছাড়াও শিশু, বয়স্ক ও রোগীদের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব প্রকট হয়ে উঠছে। 

[৩.৩] শব্দদূষণ অসহনীয় হয়ে উঠলেও এটি রোধে আইনের কার্যকর প্রয়োগ নেই। মানুষও সচেতন নয় শব্দদূষণ রোধের ব্যাপারে। 

[৪] ইউএনবির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শব্দদূষণের ভয়াবহতার শিকার যারা, তাদের মধ্যে শুরুতেই আসবে ট্রাফিক পুলিশের কথা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘদিন সড়কে কাজ করায় অতিরিক্ত শব্দের কারণে তাদের মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়।

[৫.১] স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, যানবাহনে অহেতুক হর্ন, যত্রতত্র সাউন্ড বক্স বা মাইকের মাধ্যমে উচ্চশব্দ সৃষ্টি হওয়ায় মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে।

[৫.২] তিনি বলেন, শব্দদূষণের অনেক ক্ষতিকর প্রভাব মানুষ জানেই না। বিশেষ করে মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি তো আছেই, শহরে উদ্ভিদের বংশবিস্তারও দিন দিন কমে যাচ্ছে। গাছ-গাছালির পরাগায়ন হচ্ছে না। এতে শস্যের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। রাস্তার পাশে ফেরিওয়ালা থেকে শুরু করে যারাই রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা থাকছে, তারা অনেক বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।

[৫.৩] অধ্যাপক কামরুজ্জামান বলেন, শব্দদূষণের অন্যতম উৎস হলো হর্ন। এটি বন্ধ করতে পারলেই ঢাকা শহরের ৬০ শতাংশ শব্দদূষণ কমে যাবে। কিন্তু এটি বন্ধ করার জন্য আইনগত যে ভিত্তি রয়েছে সেটি দুর্বল।

[৫.৪] তিনি বলেন, শব্দদূষণ রোধে আমাদের যে দুটি আইন রয়েছে সেটি ভালো ভূমিকা রাখতে পারছে না। এছাড়া আইন অনুযায়ী স্কুল-কলেজ, হাসপাতাল, মসজিদ এলাকায় ১০০ মিটার পর্যন্ত নীরব এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা আছে। আইনের সংজ্ঞা অনুযায়ী পুরো ঢাকা শহরই নীরব এলাকা। কোথাও হর্ন দেওয়া যাবে না। আইন প্রয়োগ করতে গেলে এটা একটা বড় সীমাবদ্ধতা।

[৬] এই বিশেষজ্ঞ বলেন, শব্দদূষণ রোধে মানুষের সচেতনতা অনেক বেশি জরুরি। প্রয়োজনের বাইরে হর্ন বাজানো যাবে না, পাশাপাশি অপ্রয়োজনীয় মাইক ও উচ্চ আওয়াজ থেকে দূরে থাকতে হবে। এখন দেখা যাচ্ছে তরুণ-তরুণীরা সারাক্ষণ হেডফোন কানে লাগিয়ে রাখেন, এটাও ক্ষতিকর।

[৭] শব্দদূষণ কমাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দরকার উল্লেখ করে অধ্যাপক কামরুজ্জামান বলেন, পৃথিবীর অনেক উন্নত দেশে গাড়ির হর্ন দিলে জরিমানার ব্যবস্থা থাকলেও বাংলাদেশের সেই পরিস্থিতি নেই। এখানে আইন আছে, কিন্তু প্রয়োগ নেই। মানুষকে সচেতন হতে হবে এবং যথাযথ আইন তৈরি করে এর জোরালো বাস্তবায়ন করতে হবে।

[৮] স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ঢাকার শব্দদূষণের মাত্রা গ্রহণযোগ্য মাত্রার দ্বিগুণের বেশি হওয়ার কারণে মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলছে। কানে কম শোনা ছাড়া ডায়াবেটিস এবং হার্ট সংক্রান্ত জটিলতা বেড়েছে। শিশু, গর্ভবতী নারী ও বয়স্ক অসুস্থ মানুষ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ১২০ ডেসিবেল শব্দ সঙ্গে সঙ্গেই কান নষ্ট করে দিতে পারে। প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে ৮৫ ডেসিবেল শব্দ যদি কোনো ব্যক্তির কানে প্রবেশ করে তাহলে ধীরে ধীরে তার শ্রবণশক্তি নষ্ট হবে।

এসবি২

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়