শিরোনাম
◈ কুষ্টিয়ায় পদ্মার ভাঙনে জাতীয় গ্রিডের টাওয়ার নদীতে বিলীন ◈ ভারতে থাকার মেয়াদ শেষ হচ্ছে, কোন আইনের বলে ভারতে থাকবেন শেখ হাসিনা? ◈ (২০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার ◈ স্থিতিশীল ডলারের দর, ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও ◈ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ‘গ্যারান্টিতে’ নগদ টাকার সংকট কাটছে যে ৫ ব্যাংকের ◈ হত্যাকাণ্ড নিয়ে অপপ্রচার চলছে, জাবিতে কোন কমিটিই নেই : ছাত্রদল ◈ গণপিটুনিতে মৃত্যু: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দুঃখপ্রকাশ, বৈষম্যবিরোধীদের নিন্দা, ফেসবুকে নানা সমালোচনা ◈ ভারতের গোলা যাচ্ছে ইউক্রেনে, ক্ষুব্ধ রাশিয়া ◈ সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান সুনামগঞ্জে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার গ্রেফতার ◈ মব জাস্টিস শুধু সহিংসতা ও অন্যায় সৃষ্টি করে: সমন্বয়ক হাসনাত

প্রকাশিত : ০৬ এপ্রিল, ২০২৪, ০৪:০৬ দুপুর
আপডেট : ০৬ এপ্রিল, ২০২৪, ০৪:০৬ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রাচীন স্থাপত্য বোরহানউদ্দিনের চৌধুরী বাড়ি জামে মসজিদ

মনিরুজ্জামান, বোরহানউদ্দিন (ভোলা): [২] উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৬.৫ কিলোমিটার দক্ষিণে প্রত্যন্ত  জনপদ দেউলা-সাচরা ইউনিয়ন। চারদিকে সবুজ ফসলের সমারোহ। ছায়া সুনিবিড় শান্ত এলাকা। ওই মেঠো এলাকার প্রবেশপথে সড়কের পূর্বপাশেই কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে ১৬৪ বছরের পুরোনো দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্য চৌধুরী বাড়ি জামে মসজিদ। 

[৩] স্থানীয় এলাকাবাসীগন জানান, ১৮৬০ সালে ১ একর ৪০ শতাংশ জমির উপর মসজিদটি নির্মাণ করেন তৎকালীন জমিদার বোরহানউদ্দিন চৌধুরী। বাড়ির নামেই এ মসজিদের নামকরণ করা হয়। প্রায় ১২-১৩ যুগ আগে ওই এলাকায় কোনো মসজিদ না। দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিরা নামাজ পড়তে এই মসজিদেই আসতেন।

[৪] মসজিদের ভেতর ও বাইরে রয়েছে অপূর্ব কারুকাজ। এই মসজিদে ব্যবহৃত প্রদীপগুলোতে একসময় সরিষার তেল জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হতো। মসজিদটির পশ্চিমাংশে রয়েছে তালগাছবেষ্টিত শানবাঁধানো পুকুর। দক্ষিণ পাশে সবুজ মাঠ। তৎকালীন সময়ে মসজিদের পূর্ব পাশে ছিল তিনটি কাচারি। যেখানে বিভিন্ন পথিকরা আশ্রায় নিত। কালের বির্বতে তা হারিয়ে। সম্প্রতি সেখানে ইমাম-মুয়াজ্জিনদের জন্য বিশ্রামাঘর এবং সাধারন মুসল্লিরের জন্য ওজু ও গোসলখানা নির্মান করা হয়েছে।

[৫] চৌধুরী বাড়ির প্রবীণ ব্যক্তি ও মসজিদের নিয়মিত তত্বাবাধায়ক মাহাবুব আলম চৌধুরী জানান, কারুকার্য খচিত মসজিদটি নির্মানের জন্য শ্বেতপাথর, লোহার বিম, চুন সুরকী, দরজা জানালার কাঠ সহ সকল মালামাল বেলজিয়াম থেকে কলকাতা হয়ে আনা হয়েছিল। ভারতের কলকাতা থেকে নিয়ে আসা রাজমিস্ত্রীরা ৩-৪ বছরে মসজিদটি নির্মান সম্পন্ন করেন।

[৬] তিনি আরো জানান, বোরহানউদ্দিন চৌধুরীর তিন ছেলে ছিল। তার সব সম্পত্তি চার ভাগ করে তিন ভাগ সন্তানদের মধ্যে ও একভাগ ওয়াকফ্ স্টেট করে মসজিদের জন্য রেখে যান। মসজিদের  অনেক জমি তেঁতুলিয়া নদীর ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যায় এবং খাস হয়ে যায়। বর্তমানে ১২ একর জমি রয়েছে। এখন সেই জমির আয় দিয়েই মসজিদের আনুষঙ্গিক কাজ ও খরচ করা হয়।

[৭] মসজিদের বর্তমান মোতাওয়াল্লি শামিম আহমেদ নোমান চৌধুরী ,গোলাম মাহমুদ শাওন জানান,  প্রায় ১৬০ বছর আগে তাদের পূর্ব পুরুষ জমিদার বোরহানউদ্দিন চৌধুরী মসজিদটি নির্মাণ করেন। ইত্যিমধ্যে মসজিদটির বেশ কয়েকবার সংস্কার কাজ করা হয়েছে। সর্বশেষ ২০২৩ সালের শেষের দিকে ব্যক্তিগত অনুদান থেকে তাঁরা মসজিদটির রং ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন করেন। 

[৮] মসজিদের ইমাম মাওলানা নুরুজ্জামান জানান, অনেক দূরদুরান্ত থেকে অনেকে এই মসজিদটি দেখতে আসেন। মসজিদে নামাজ আদায় করেন। তিনি আরো জানান, মসজিদ মাঠে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার সময় দেউলা-সাচড়া ইউনিয়নের মধ্যে সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। 

[৯] সরকারি আব্দুল জব্বার কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শিক্ষাবিদ আবুল কাসেম বলেন, এসব প্রত্ননিদর্শনের মধ্য দিয়ে সেকালের মানুষের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থা, জীবনযাত্রা, বিশ্বাস-সংস্কার, রুচি বা দৃষ্টিভঙ্গি ইত্যাদি সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়। যা ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সংরক্ষণ করা উচিত।

[১০] বোরহানউদ্দিন উপজেলা প্রকৌশলী মো.মাইদুল ইসলাম খান জানান, ওই সময় এত উচুমানের উপকরণ দিয়ে মসজিদ নির্মাণ এবং নির্মাণশৈলী সত্যিই আলাদা আভিজাত্যের পরিচয় বহন করে। কালের পরিক্রমায় এখন জরাজীর্ণ হয়ে পড়ছে। ইতিহাস- ঐতিহ্য রক্ষায় এর সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধণ জরুরী হয়ে পড়ছে।

[১১] বোরহানউদ্দিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.রায়হান-উজ্জামান বলেন, ‘বোরহানউদ্দিন চৌধুরী বাড়ি জামে মসজিদটি অপরূপ সৌন্দর্যের নিদর্শন ও মনোমুগ্ধকর। মসজিদের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ সম্পাদনা: এ আর শাকিল

প্রতিনিধি/এআরএস
                                                   

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়