গৃহকর্মীকে মারধরের অভিযোগে ঢাকাই সিনেমার চিত্রনায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে ঢাকার ভাটারা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে। অভিযোগে বলা হয়, এক বছরের কন্যাসন্তানকে খাবার খাওয়ানো নিয়ে গৃহকর্মীকে মারধর করেন পরীমনি। অভিযুক্ত গৃহকর্মীর নাম পিংকি আক্তার। অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন এ অভিনেত্রী।
ফেসবুক লাইভে এসে আবেগঘন বক্তব্য দেন পরীমনি। জানান, তার হাতে সব প্রমাণ রয়েছে। তবে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তিনি সেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করছেন না।
এ ঘটনায় পরীমনির পাশে দাঁড়িয়েছেন জনপ্রিয় গায়িকা ন্যান্সি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গৃহকর্মীদের প্রসঙ্গে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দেন তিনি। সেখানে নিজের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে জানান, তিনিও গৃহকর্মীদের দ্বারা প্রতারণার শিকার হয়েছেন।
ন্যান্সি লেখেন, ‘গৃহকর্মী নির্যাতিত হয় যেমন সত্যি, তেমনি গৃহকর্ত্রীরাও অনেক সময় গৃহকর্মীদের দ্বারা চরম সমস্যার সম্মুখীন হন।’ তিনি আরও লেখেন, ‘আমার পুরো বাসায় সিসি ক্যামেরা আছে শুধুমাত্র গৃহকর্মীর মিথ্যা হয়রানি থেকে বাঁচার জন্য।’
এক দশক আগের অভিজ্ঞতার কথা উল্লেখ করে তিনি লেখেন, ‘আমার বাসার গৃহকর্মী বাসার দারোয়ানের সঙ্গে পালিয়ে যায়। পরিবার অভিযোগ করে মেয়েটিকে গুম করেছি। তারা মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে। আমি পুলিশের সহায়তায় কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মেয়েটিকে উদ্ধার করি। পরে জানতে পারি, এটি পূর্বপরিকল্পিত ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের চেষ্টা ছিল।’
ন্যান্সি আরও জানান, দুবছর আগে আমার ছোট মেয়েকে দেখাশোনার জন্য যে গৃহকর্মী এনেছিলাম, সে তার বোনের সঙ্গে মিলে আমার গয়না ও চলচ্চিত্র পুরস্কারের স্বর্ণপদক চুরি করে। আমি থানায় অভিযোগ করলে উল্টো আমার নামে নির্যাতনের অভিযোগ তোলার চেষ্টা করে। সিসি ক্যামেরার কারণে আমি হয়রানি থেকে বেঁচে যাই।’
গায়িকা জানান, ‘রান্নার জন্য রাখা নারী কর্মীকে ফার্নিচার দিয়ে সাহায্য করলেও সে কাজে ফাঁকি দিতে থাকে। তার চাহিদা এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে শেষমেশ তাকে বিদায় করি। এখন আমি নিজেই রান্না করি এবং তাতে পরিবারও খুশি।’
সবশেষে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে ন্যান্সি বলেন, ‘সংবাদকর্মীরা একটু সংবেদনশীল হোন। সবকিছুকে বাণিজ্য হিসেবে দেখবেন না। নির্যাতিতা গৃহকর্মী হতে পারেন, আবার গৃহকর্ত্রীও হতে পারেন। সত্যিকারের ভুক্তভোগীর পাশে দাঁড়ান।’
এদিকে ভাটারা থানা পুলিশ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। তারা জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত চলছে এবং প্রয়োজন হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।