ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের দায়ের করা মারধর, ভাঙচুর ও ভয়ভীতি দেখানোর মামলায় আত্মসমর্পণ করে জামিন পেয়েছেন চিত্রনায়িকা পরীমণি।
জামিন পেয়ে নিজের প্রতিক্রিয়ায় চিত্রনায়িকা বলেন, ‘এটা মিথ্যা মামলা। আমি ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করছি।’
পরী আরও বলেন, ‘আমি সত্যি আশা হারাতে চাই না। আমি আইনের উপর শ্রদ্ধাশীল। আমার বিশ্বাসটা শেষ অবধি রাখতে চাই। আমি বিশ্বাস করি আমি আসলে ন্যায় বিচার পাব। আপনারা আমার সঙ্গে থাকবেন।’
আজ সোমবার ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুনাইদের আদালত এক হাজার টাকা মুচলেকায় তার জামিন মঞ্জুর করেন।
এর আগে, সকালে আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন পরীমণি। তারপক্ষে জামিন শুনানি করেন নীলাঞ্জনা রিফাত (সুরভী)। শুনানি শেষে আদালত জামিনের আদেশ দেন।
তার আগে মানুষের ভিড় ঠেলে হাসতে হাসতে আদালতে প্রবেশ করেন নায়িকা।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রবিবার মামলাটি চার্জশুনানির জন্য ধার্য ছিল। তবে পরীমনি ও তার কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমি আদালতে হাজির হননি। তাদের পক্ষে সময় আবেদন করা হয়। আদালত সময় আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। একই সঙ্গে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
এর আগে গত বছরের ১৮ এপ্রিল নাসির উদ্দিন মাহমুদের দায়ের করা মামলায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেওয়া তদন্ত প্রতিবেদন আমলে নেন ঢাকার সিজেএম আদালত। একই সঙ্গে পরীমণিকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমন জারির আদেশ দেন।
মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে ২০২২ সালের ১৮ জুলাই ঢাকার আদালতে নালিশি মামলা করেন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, ২০২১ সালের ৮ জুন পরীমণি ও তার সহযোগীরা সাভারের বোট ক্লাবে ঢুকে ওয়াশরুম ব্যবহার করেন। পরে ক্লাবের ভেতরে বসে অ্যালকোহল পান করেন। রাত ১টা ১৫ মিনিটের দিকে ক্লাব ত্যাগ করার সময় পরীমণি তাকে ডাক দেন। পরে একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনা মূল্যে দেওয়ার জন্য চাপ দেন। এতে রাজি না হওয়ায় পরীমণি তাকে গালমন্দ করেন। একপর্যায়ে পরীমণি হত্যাচেষ্টার জন্য একটি গ্লাস ছুড়ে মারেন, যা তার মাথায় ও বুকে লাগে।
মামলাটি তদন্ত করে গত বছরের এপ্রিলে পরীমণি ও ও তার কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমির বিরুদ্ধে সিজেএম আদালতে প্রতিবেদন জমা দেয় পিবিআই।
পুলিশ ও আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, জুনায়েদের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী নাসিরকে মারধর করার অভিযোগের সত্যতা তদন্তে পায় পিবিআই। অপর দিকে পরীমণির ছোড়া মদের গ্লাসে নাসিরের আঘাত লাগার ঘটনার সত্যতাও পেয়েছে পিবিআই।
এদিকে ২০২১ সালের ৮ জুন সাভারের বিরুলিয়ায় ঢাকা বোট ক্লাবে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে পরীমণি ব্যবসায়ী নাসিরসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করেছিলেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০২২ সালের ৬ সেপ্টেম্বর নাসিরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। মামলায় ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ তিন আসামির বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ১৮ মে অভিযোগ গঠন করেন। পরীমণির আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত বলেন, ‘মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।’
অন্যদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় পরীমণিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে বিচার চলছে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এ। এ মামলাট পর্যায়ে রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :