কিংবদন্তি তবলাবাদক, সংগীতজ্ঞ, অভিনেতা ওস্তাদ জাকির হোসেন আর নেই। যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোর এক হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন তিনি। সোমবার জাকির হোসেনের পরিবারের পক্ষ থেকে তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করা হয়েছে।
এদিকে জাকির হোসেনের প্রয়ানে শোক প্রকাশ করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় এক্সে লেখেন, “সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ তবলাবাদক ওস্তাদ জাকির হোসেনের মৃত্যুতে গভীর ভাবে মর্মাহত। দেশের এবং তার লক্ষ লক্ষ ভক্তদের জন্য চরম ক্ষতি। জাকির হোসেনের পরিবার এবং তার ভক্তদের আমি আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই।”
জানা গেছে, দীর্ঘ দিন ধরে রক্তচাপজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন জাকির। হৃদ্যন্ত্রে সমস্যা দেখা দেওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। জাকিরের শারীরিক পরিস্থিতির অবনতির খবর পেয়ে দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা অনুরাগীরা তার সুস্থতা কামনায় প্রার্থনা শুরু করেন। কিন্তু সেই সব প্রার্থনাকে ব্যর্থ করে দিয়ে না ফেরার দেশে এ সংগীতজ্ঞ।
১৯৫১ সালে মুম্বাইয়ে জন্ম জাকিরের। তার পিতা ওস্তাদ আল্লা রাখাও ছিলেন প্রখ্যাত তবলাবাদক। ভারত সরকারের পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ, পদ্মবিভূষণ সম্মানে ভূষিত হয়েছেন তিনি। মাত্র তিন বছর বয়স থেকে তবলার সফর শুরু তার। সাত বছর বয়স থেকে মঞ্চে একক অনুষ্ঠান করেছেন তিনি। সংগীতের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার গ্র্যামিও ভারতের এসেছে জাকির হোসেনের হাত ধরে।
জাকির হুসেন সম্পর্কে
ভারতের সবচেয়ে বিখ্যাত তবলা বাদকের মধ্যে অন্যতম হলেন জাকির হুসেন। অসাধারণ প্রতিভার কারণে পদ্মভূষণ এবং পদ্মশ্রী এবং সংগীত নাটক আকাদেমি পুরস্কার পেয়েছেন। উপরন্তু, তিনি একজন সুরকার, পার্কিউশনিস্ট, সংগীত প্রযোজক এবং চলচ্চিত্র অভিনেতা। ১৯৫১ সালের ৯ মার্চ মুম্বইয়ের মাহিমে তবলা বাদক, আল্লা রাখা এবং ববি বেগমের ঘরে জন্মগ্রহণ করা জাকির হুসেন খুব অল্প বয়সেই তবলা বাজানোর প্রতি ঝোঁক পোষণ করেছিলেন।
জাকির হুসেন মাত্র ৩ বছর বয়সে তাঁর বাবার কাছ থেকে মৃদং (একটি শাস্ত্রীয় তালবাদ্য বাদ্যযন্ত্র) বাজানো শিখেছিলেন এবং ১২ বছর বয়সে কনসার্টে পারফর্ম করতে শুরু করেন। তিনি কিংবদন্তি পপ ব্যান্ড ‘দ্য বিটলস’-এর সঙ্গে তার অংশীদারিত্ব করেন। ২০২৪ সালে, তবলা বাদক ৬৬তম গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডে ইতিহাস তৈরি করেছিলেন, প্রথম ভারতীয় যিনি এক রাতের মধ্যে ৩টি ট্রফি জিতেছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :