শিরোনাম
◈ দীর্ঘ এক যুগ পর ২৪ দফা দাবি নিয়ে চবি শিবিরের আত্মপ্রকাশ ◈ দেশের বাজারে আরো বাড়ল সোনার দাম , কাল থেকে কার্যকর ◈ সরকার আমিরাতে সাজা পাওয়া প্রবাসীদের পুনর্বাসন করবে : আসিফ নজরুল ◈ বজ্রপাতে ঠাকুরগাঁওয়ে ৩ জনের মৃত্যু, আহত ৯ ◈ আন্তর্জাতিক সীমানা লঙ্ঘন করায় ঠাকুরগাঁও সীমান্তে বিএসএফ সদস্য আটক ◈ কলকাতার রাস্তায় যাত্রী নিয়ে আর ছুটবে না ১৫০ বছর ধরে চলা ট্রাম ◈ লন্ডনের পর এবার নিউ ইয়র্কে হামলার শিকার বিএনপি নেতা জুম খোকন ◈ ‘আ. লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে না; গুম-খুন-দুর্নীতির বিচার হলে আ. লীগের অস্তিত্ব ধ্বংস হয়ে যাবে’ ◈ সেনা কর্মকর্তা তানজিম সারোয়ারের হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জামায়াতের ◈ আন্দোলনে নিহত ৭০৮ জনের তালিকা প্রকাশ করলো সরকার

প্রকাশিত : ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০৬:৫৯ বিকাল
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ১০:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মিমকে যে কারণে ফোন দিয়েছিলেন হারুন, অবশেষে মুখ খুললেন নায়িকা 

ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়েছেন শেখ হাসিনা। গাঢাকা দিয়েছেন তার দলের (আওয়ামী লীগ) নেতাকর্মীরাও। গেল ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর একে একে বেরি আসতে থাকে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিগত সময়ের দুর্নীতি, গুম, খুনসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত থাকা ব্যক্তিদের তালিকাও আসতে থাকে প্রকাশ্যে। দেশের প্রায় প্রতিটি অঙ্গনেই আওয়ামীপন্থীরা গড়ে তুলেছিল নিজেদের রঙমহল। বাদ যায়নি নিয়ে শোবিজ অঙ্গনও।

এদিকে, বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে ‘আমি ইয়াসমিন বলছি’ নামে একটি সিনেমা নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পরিচালক সুমন ধর। এতে গেল বছর চুক্তিবদ্ধ হন জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা বিদ্যা সিনহা মিম। প্রি-প্রোডাকশনের কাজ শেষ করে টিম যখন শুটিংয়ে যাবে, ঠিক সেসময় সিনেমাটি না করার জন্য ফোন করা হয় মিমকে। আর সেই কলটি এসেছিল ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) তৎকালীন অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশীদের পক্ষ থেকে। যা নিয়ে এতদিন চুপ থাকলেও অবশেষে মুখ খুলেছেন এই অভিনেত্রী।

মিম বলেন, ‘একদিন জায়েদ ভাই আমাকে ফোন করে বলেন, “আপনাকে আমার সঙ্গে একটু হারুন ভাইয়ের ওখানে যেতে হবে। কেন যেন আপনাকে ডাকছেন। আমি যেহেতু চলচ্চিত্রের মানুষ, তাই আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন।” পরদিন আমি গেলাম, কয়েক মিনিটের ব্যবধানে জায়েদ ভাইও ঢুকলেন। দেখলাম, হারুন সাহেব তার রুমে বসা। তার টিমও আছে। সালাম দেওয়ার পর আমাকে প্রশ্ন করলেন, “কী অবস্থা? শুনলাম, আপনি একটা সিনেমা করছেন, আমি ইয়াসমিন বলছি?” বললাম, হ্যাঁ করছি। তিনি বললেন, “এটা নিয়ে অনেক কথাবার্তা আছে। এই ছবি আসলে করা যাবে না। আমাদের এখানে বড় বড় আরও শক্তিশালী গল্প আছে। ওগুলো আপনাকে দিই, সেখান থেকে করেন।’

শুধু মিমকেই নয়, সিনেমাটি না করার জন্য একপ্রকার হুমকিও দেওয়া হয় এর নির্মাতা সুমন ধরকে। তার কথায়, ‘বললাম, এই ছবির পেছনে আমি অনেক পরিশ্রম করেছি। সেই ২০১৭ সাল থেকে লেগে আছি। যেহেতু সত্যি গল্প, সিনেমার মধ্যে যেন সবটুকু সঠিকভাবে উঠে আসে, তার জন্য অনেক গবেষণা করতে হয়েছে। নিজেরও টাকা বিনিয়োগ আছে, প্রযোজকেরও আছে। সবচেয়ে বড় কথা, ছবিটা বানাব বলেই ওই সময় নাটক বানানো কমিয়ে দিই। টুকটাক যে বিজ্ঞাপনচিত্র বানাতাম, তাও বন্ধ করে দিই। ছবিটা না হলে অর্থনৈতিকভাবে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হব। নাছোড়বান্দা হারুন ভাই এটুকু বললেন, “এই ছবি করা যাবে না।” তিনি যে আমার সঙ্গে খুব রাগী গলায় কথা বলেছেন, তা নয়। এরপর তার সহকারীকে ডেকে বললেন, “আমাদের কাছে ভালো ভালো গল্প আছে, সেগুলো সুমনের সঙ্গে শেয়ার করেন। সুমন যেটা পছন্দ করবেন, সেটা করবেন। আর সুমনের যদি স্পনসর প্রয়োজন হয়, আমরা জোগাড় করে দেব।”’

নির্মাতার সঙ্গে যখন ডিবি হারুনের কথা হচ্ছিল, সেসময় মিম ব্যস্ত ছিলেন কলকাতার ‘মানুষ’ সিনেমার কাজে। ছিলেন কলকাতাতে। সেসময় হারুন নিজেই হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করেন মিমকে।

নায়িকার ভাষ্য, ‘কল দেখে একটু ঘাবড়ে যাই। তিনি (হারুন অর রশীদ) কেন আমাকে ফোন করবেন? ভাবতেও পারিনি যে আমার কাছে এমন একটি ফোনকল সেদিন আসবে আর বলা হবে যে ছবিটিতে অভিনয় করতে পারব না। যখন তিনি বললেন, “তোমার পরিচালক আমার সামনে বসা।” তখন বুঝতে বাকি থাকেনি যে ছবিটা বোধ হয় আর হবে না। পরিচালক বের হওয়ার পর ফোন করে তা নিশ্চিত হই। সব মিলিয়ে মনটা খুব খারাপ হয়। শিল্পীর জীবনে চ্যালেঞ্জিং চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ সব সময় আসে না। আসার পর যখন আবার তা থেকে বঞ্চিত হতে হয়, তখন মন খারাপ হয়।’

তবে এখন আর মিমের মন খারাপ নেই। কারণ অবশেষে শুটিংয়ে যাচ্ছে ‘আমি ইয়াসমিন বলছি’ সিনেমাটি।

নির্মাতা সুমন ধর বলেন, ‘প্রি-প্রোডাকশন ও শিল্পীদের সঙ্গে চুক্তি পর্ব শুরু হচ্ছে। শিগগিরই শুটিং শুরু করব। এই ছবিতে আউটডোরে শুটিংয়ের অংশই বেশি। তবে এই মুহূর্তে আউটডোর শুটিং করার মতো অবস্থা আসেনি। সম্প্রতি একটি নাটকের শুটিংয়ে গিয়ে এমনটাই মনে হয়েছে। “আমি ইয়াসমিন বলছি”র কাজ দিনাজপুর ও ঢাকার আউটডোরে হবে। এখন আমরা সব গুছিয়ে নিচ্ছি। পরিবেশ অনুকূলে আসামাত্র শুটিংয়ে যাব।’

উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালের ২৩ আগস্ট রাতে ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া একটি বাসে করে দিনাজপুরের দশমাইল মোড় এলাকায় নামেন ইয়াসমিন আক্তার নামের এক কিশোরী। তার বয়স ছিল আনুমানিক ১৬ বছর। ওই এলাকায় একটি পানের দোকানের সামনে তিনি অপেক্ষা করছিলেন দিনাজপুরগামী বাসের জন্য। সে সময় টহল পুলিশের একটি ভ্যান আসে এবং একপ্রকার জোর করেই তাকে দিনাজপুরে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে নিয়ে যায়। পরদিন সকালে কিশোরীটির মরদেহ পাওয়া যায় গোবিন্দপুর নামক জায়গায়।

ওই ঘটনায় দিনাজপুরের মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তায় নেমে আসেন। আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলনে আবার পুলিশ গুলি চালায়। সেসময় নিহত হন সাতজন মানুষ, আহত দুই শতাধিক। এর ফলে প্রতিবাদের ফুলকি ছড়িয়ে যায় গোটা দেশে। এই ঘটনা অবলম্বনেই নির্মিত হবে সিনেমাটি। আর এতে মূল চরিত্রে অভিনয় করবেন মিম।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়