✖

শিমুল চৌধুরী ধ্রুব: [২] ‘নিয়মিত ইবাদত করি, প্রতিদিন একবার মৃত্যুর কথা ভাবি। আমার খুব ইচ্ছা, আমাকে যেন বাবার কবরে সমাহিত করা হয়। আমার আব্বা বনানী কবরস্থানে ঘুমিয়ে আছেন।’ নিজের ৭১তম জন্মদিনে এমনই মন্তব্য করেছেন ঢাকাই সিনেমার কিংবদন্তি অভিনেত্রী ববিতা।

[৩] মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) এই অভিনেত্রীর জন্মদিন। ১৯৫৩ সালের এদিনে বাগেরহাট জেলায় জন্ম ববিতার। তার আসল নাম ফরিদা আক্তার পপি। কিন্তু সিনেমায় আসার পর ববিতা নামে পরিচিতি পেয়েছেন।

[৪] ববিতার একমাত্র ছেলে অনিক বেশ কয়েক বছর ধরেই কানাডায় থাকেন। পড়াশোনা শেষে থিতু হয়েছেন সেখানেই। গেল কয়েক বছর নিজের জন্মদিনটা ছেলের সঙ্গেই কাটিয়েছেন ববিতা। তবে এবার অসুস্থতার কারণে ছেলের কাছে যাওয়া হয়নি তার।

[৫] সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন বরেণ্য এই অভিনেত্রী। চারদিন হাসপাতালে থাকার পর বর্তমানে বাসায় বিশ্রামে আছেন। তাই ইচ্ছা থাকলেও বিশেষ দিনটি ছেলের সঙ্গে উদযাপন করা হয়নি তার।

[৬] ববিতার কথায়, এখন করোনা নেই। তবে শরীরটা খুব দুর্বল, বাসাতেই বিশ্রামে আছি। এই পরিস্থিতিতে দেশের বাইরে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই অনিকের কাছে যেতে পারিনি। পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার পর ছেলের কাছে যাব। শরীরের এই অবস্থায় তো কোনো আয়োজন সম্ভব নয়। তাই বাসাতেই কাটবে দিনটা।

[৭] কিংবদন্তি নির্মাতা জহির রায়হানের ‘সংসার’ সিনেমায় শিশুশিল্পী হিসেবে ১৯৬৮ সালে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় ববিতার। এখানে তিনি রাজ্জাক-সুচন্দার মেয়ের চরিত্রে অভিনয় করেন। পরে ফরিদা আক্তার পপি থেকে ‘ববিতা’ হয় ওঠেন জহির রায়হানের উর্দু সিনেমা ‘জ্বলতে সুরুজ কি নিচে’র মাধ্যমে।  

[৮] বলে রাখা যায়, নায়িকা হিসাবে ববিতার প্রথম সিনেমা ‘শেষ পর্যন্ত’। এটি মুক্তি পায় ১৯৬৯ সালের ১৪ আগস্ট, যেদিন ববিতার মা মারা যান। এতে তার নায়ক ছিলেন রাজ্জাক। আলোচিত সিনেমা ‘টাকা আনা পাই’ ববিতাকে চলচ্চিত্রের শক্ত আসন দিলেও তার জীবনের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য সিনেমা বলা হয় সত্যজিৎ রায়ের ‘অশনি সংকেত’কে। এ সিনেমায় অভিনয় করে ববিতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দারুণ প্রশংসা অর্জন করেন।  

[৯] দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ২৫০টির বেশি সিনেমায় অভিনয় করেন এ অভিনেত্রী। স্বীকৃতিস্বরূপ একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ দেশি-বিদেশি অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।

[১০] ববিতা অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমার তালিকায় রয়েছে- ‘অশনি সংকেত’, ‘নিশান’, ‘মন্টু আমার নাম’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘লাভ ইন সিঙ্গাপুর’, ‘মায়ের জন্য পাগল’, ‘টাকা আনা পাই’, ‘স্বরলিপি’, ‘তিনকন্যা’, ‘শ্বশুরবাড়ি’, ‘মিস লঙ্কা’, ‘জীবন সংসার’, ‘লাইলি মজনু’, ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘লাঠিয়াল’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি, ইত্যাদি।

একে