এম এম লিংকন: ঢাকা- ১৭ আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ার দৌড়ে রয়েছেন রাজনীতিক, সুপারস্টার চিত্রনায়ক থেকে শুরু করে শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীরা। দলটির মনোনয়ন পেতে ২২ জন দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তবে, শেষ পর্যন্ত কে পাবে নৌকা প্রতীক তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র বলছে, এই উপনির্বাচনের প্রার্থী ঠিক করতে আজ শুক্রবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভা হবে। বৃহস্পতিবার দলের দফতর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
ঢাকা-১৭ আসনটি গুলশান, বনানী, ভাষানটেক থানা ও সেনানিবাস এলাকা নিয়ে গঠিত। শূন্য হওয়া আসনটিতে গত ১ জুন উপনির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। সে অনুযায়ী আগামী ১৭ জুলাই হবে নির্বাচন।
এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন সংগ্রহ করা অনেকেই ভাবছেন এবার মনোনয়ন পেলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারো দলের প্রার্থী হতে পারবেন। তবে, রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে সমাঝোতার অংশ হিসেবে শরিক বা সম্ভাব্য শরিক কাউকে ছেড়ে দেয়া হতে পারে আসনটি। আবার দ্বাদশ নির্বাচনে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ভিন্ন হতে পারে। জোটের শরীক দলগুলোকে নিয়ে পরিস্থিতি অনুযায়ী কোন আসনে কে প্রার্থী হবে তার নির্ধারণ তখনি ঠিক করবে।
আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই আসনে নৌকার প্রতীক পেতে আগ্রহী দলের কমপক্ষে দুজন হেভিওয়েট নেতা। স্থানীয় ও সহযোগী সংগঠনের একজন শীর্ষ কয়েক জন নেতা। এছাড়া আগ্রহ আছে ব্যবসায়ী এবং চিত্রজগতের একাধিক ব্যক্তির।
ঢাকা-১৭ আসনের উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে ২২ জন দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় নেতা, ব্যবসায়ী, চিত্রনায়ক রয়েছেন।
মুক্তিযোদ্ধা ও সুপারস্টার নায়ক ফারুকের মৃত্যুতে এই আসনটি শূণ্য ঘোষিত হয়। এরফলে চলচ্চিত্র জগৎ মনে করছে এই আসনটিতে আবারো কোন অভিনেতার হাতে থাকুক। ঢাকা -১৭ আসনে মনোনয়ন সংগ্রহের আগের দিন সুপারস্টার নায়ক ফেরদৌস গণমাধ্যমকে জানান প্রধানমন্ত্রী চাইলে প্রার্থী হবেন তিনি। এরপরের দিন মনোনয়ন সংগ্রহ করেন বাংলা চলচ্চিত্রের এই মহাতারকা।
ফেরদৌস আহমেদ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য। তারকা ইমেজের কথা বিবেচনায় নিলে ফেরদৌসকে মনোনয়ন দৌড়ে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন দলের কোনো কোনো নেতা।
এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন সংগ্রহ করা সুপারস্টার নায়ক ফেরদৌস আমাদের নতুন সময়কে বলেন, এতদিন অভিনয় করে মানুষের অনেক ভালোবাসা পেয়েছি। এখন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে থেকে এসব মানুষগুলোর জন্য কিছু করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দীর্ঘদিন দিন থেকে সুযোগ পেলেই কাজ করি। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রচারণায় কাজ করেছি। এই এলাকাতেই আমি ছোট থেকে বড় হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে কাজ করতে চাই।
মনোনয়ন সংগ্রহের আগে বা পরে প্রধানমন্ত্রীর কোন ধরনের সাড়া পেয়েছেন কি না এমন প্রশ্নেরে জবাবে ফেরদৌস বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি তিনি হেসেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত দিবেন তাই মেনে নেব। তবে,আমি আশাবাদি।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আলী আরাফাতও (মোহাম্মদ এ আরাফাত) মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। এত দিন আরাফাত আওয়ামী লীগের হয়ে নানা বুদ্ধিবৃত্তিক কাজে যুক্ত ছিলেন। টক শোতে আওয়ামী লীগ ও সরকারের পক্ষে কথা বলেছেন। গত ডিসেম্বরে প্রথমবার দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য হন তিনি। এবার সংসদ সদস্য হওয়ার দৌড়ে তিনি শামিল হলেন।তারও প্রার্থীতা পাওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে অনেকে মনে করছেন।
দলীয় ফরম সংগ্রহ করেছেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের দুই সহসভাপতি ওয়াকিল উদ্দিন ও আবদুল কাদের খান। এ দুজন দীর্ঘদিন ধরেই এই আসনে মনোনয়ন পেতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু জোট কিংবা অন্য রাজনৈতিক সমীকরণের কারণে তাাদের বিমুখ হতে হয়েছে।
শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে জসিম উদ্দিনও চেষ্টা চালাচ্ছেন বেশ কিছুদিন ধরে। তবে তার বড় ভাই মোরশেদ আলম নোয়াখালী-২ আসনের (সেনবাগ-সোনাইমুড়ীর একাংশ) সংসদ সদস্য। ফলে একই পরিবারে আরেকজনকে মনোনয়ন দেওয়ার সম্ভাবনা কম বলে মনে করছেন দলীয় নেতারা। সম্পাদনা: শামসুল হক বসুনিয়া
আপনার মতামত লিখুন :