শিরোনাম

প্রকাশিত : ০৩ আগস্ট, ২০২৪, ০৬:৩৭ বিকাল
আপডেট : ০৩ আগস্ট, ২০২৪, ০৬:৩৭ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অনিশ্চিত ইভিএম প্রকল্প: দেড় লাখ মেশিনের ১ লাখ ১০ হাজারই নষ্ট 

সালেহ ইমরান: [২] প্রকল্প প্রস্তাবে মেয়াদকাল ১০ বছর থাকলেও পাঁচ বছরের মধ্যেই নষ্ট হয়ে গেছে বেশিরভাগ ইভিএম মেশিন। এজন্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এগুলো ব্যবহার করা যায়নি। বর্তমানে শতভাগ ত্রুটিপূর্ণ মেশিন একটিও নেই। শতভাগ ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে এক লাখের বেশি মেশিন। ইভিএম প্রকল্পে রাষ্ট্রের প্রায় চার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়। 

[৩] সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সুরক্ষার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ইভিএমগুলো নষ্ট হয়েছে। বর্তমানে দেড় লাখ ইভিএমের মধ্যে কিছু মেশিন মেরামতের পর ব্যবহার করা যেতে পারে। কেউ কেউ বলছেন, অদূরদর্শী প্রকল্প গ্রহণ করায় ইভিএমের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। (যায়যায়দিন ০৩-০৭-২০২৪) 

[৪] ২০২৩ সালেল জুনে শেষ হলেও এক বছর বাড়িয়ে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয় ইভিএম প্রকল্পের মেয়াদ। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, দ্বিতীয়বার প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন তারা। কিন্তু এক মাস পার হয়ে গেলেও এখনও কোনো সাড়া মেলেনি। এদিকে উন্নতমানের ভোটযন্ত্রগুলো সুরক্ষার জন্য তাদের কোনো ব্যবস্থাও নেই। শেষ পর্যন্ত অঞ্চলভিত্তিক ওয়্যারহাউস নির্মাণের দিকে যাচ্ছে তারা। (ডেইলি স্টার ২৮-০৮-২০২৪) 

[৫.১] ওয়ান ইলেভেন সরকারের সময়কার সিইসি ড. শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন প্রথম ইভিএম ব্যবহার শুরু করে। ওই কমিশন বুয়েট থেকে ১২ হাজার টাকা ব্যয়ে এককটি মেশিন তৈরি করায়। পরবর্তীতে রকিবউদ্দিন কমিশনও এটি ব্যবহার করে। কিন্তু রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনেও একটি মেশিন অচল হয়ে পড়লে তা আর ব্যবহার উপযোগী করতে পারেনি কমিশন। পরে বুয়েটের মেশিনগুলো পুড়িয়ে ফেলার সিদ্ধান্ত হয় এবং ২০১৭ সলে এর চেয়ে ২০ গুণ বেশি দামে ইভিএম কেনার সিদ্ধান্ত নেয় কে এম নুরুল হুদার কমিশন। 

[৫.২] এরপর বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি থেকে ২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ব্যয়ে একেকটি ইভিএম তৈরি করা হয়। সে সময় তিন হাজার ৮২৫ কোটি টাকার প্রকল্পে দেড় লাখ ইভিএম কেনে নির্বাচন কমিশন। (খবরের কাগজ)

[৬] সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের জুনে পাঁচ বছরের প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হতেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ সির্বাচন এসে যায়।  সে সময় প্রায় ৪০ হাজার মেশিন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। বাকি এক লাখ ১০ হাজার মেশিনের বেশিরভাগের ধরা পড়ে কোনো না কোনো ত্রুটি। সে সময় এগুলো মেরামতের জন্য কোনো বরাদ্দও ছিেেলা না। অকেজো মেশিন মেরামত, সংরক্ষণের জন্য ১২শ’ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাব দিলেও তা নাকচ হয়ে যায়। ফলে ব্যালটেই সম্পন্ন করতে হয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। (সময় টিভি ৩০-০৭-২০২৪) 

[৭] চলতি বছর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কিছু উপজেলায় ইভিএম ব্যবহার করা হলেও নানা ত্রুটি ধরা পড়ায় ভোগান্তিতে পড়েন ভোটাররা। এতে ইভিএম প্রকল্প আবারো সমালোচনার মুখে পড়ে।  

[৮] ইভিএম প্রকল্প পরিচালক কর্ণেল সৈয়দ রাকিবুল হাসান বলেন, এক লাখ ১০ হাজার মেশিন এখন ব্যবহারের অনুপযোগী। বাকি ৪০ হাজার  মেশিন কিছুটা ভালো আছে। তবে সেগুলোতেও মাঝে মাঝে ত্রুটি দেখা যাচ্ছে। সোজা কথা ত্রুটিমুক্ত মেশিন একটিও নেই। তবে এই ৪০ হাজার মেরামত করে ব্যবহার করা যেতে পারে। 

[৯] ইভিএমের বর্তমান অবস্থা জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, ওয়্যার হাউসের অভাবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ইভিএম নষ্ট হয়েছে। এখানে নির্বাচন কমিশনের কোনো অবহেলা ছিলো না। (বিডিনিউজ ২৮-০৭-২০২৪)। সম্পাদনা: সমর চক্রবর্তী
 
এসবি২

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়