চারুকলায় পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে তৈরি করা ‘ফ্যাসিবাদের প্রতিকৃতি’ ও ‘শান্তির পায়রা’ মোটিফে আগুনের ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া গেছে। এতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় একজনকে দেখা গেলেও এখনও তার নাম-পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
শনিবার (১২ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদ সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়ার বিষয়টি বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেন।
প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘কালো টি-শার্ট, ব্রাউন প্যান্ট, কালো স্যান্ডেল পরা এবং পেছনে চুলে ঝুঁটি করা একজন চারুকলার মাঝখানের গেট (৩ নম্বর গেট) টপকে প্রবেশ করে। কোথা থেকে এসেছে, সেটা বোঝা যায়নি।’
তিনি বলেন, ‘প্রবেশ করে প্রথমে ওই ছেলেটি লিকুইড (দাহ্য পদার্থ) দেয়, তারপর পর্দার আড়ালে চলে যায়। তারপর ফুটেজে আমার দেখলাম, সেখানে অগ্নি শিখা। এর মানে হয়তো সে সেখানে লাইটার জ্বালিয়ে পরীক্ষা করেছে। তারপর সেখানে গিয়ে ফায়ার করেছে। ছেলেটা যে গেট দিয়ে প্রবেশ করেছে, সেই গেট দিয়েই বেড়িয়ে ছবির হাটের দিকে গেছে।’
এদিকে এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ এবং বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। একইসঙ্গে অবিলম্বে অগ্নিকাণ্ডে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের আইনের মাধ্যমে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানায় সংগঠনটি। শনিবার ঢাবি সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম ও অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম সরকার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, বাঙালি জাতির ঐতিহ্যের স্মরক পহেলা বৈশাখ। এ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা উদযাপনের আর মাত্র দুই দিন বাকি। আনন্দ শোভাযাত্রা উদযাপনের জন্য ফ্যাসিস্টদের প্রতিকৃতি তৈরিসহ অন্যান্য প্রস্তুতি যখন প্রায় শেষ দিকে তখন শনিবার ভোরে চারুকলা অনুষদের চার দেওয়ালের ভেতরে তৈরি করা এসব প্রতিকৃতিতে আগুন দেওয়া নিছক কোনও ঘটনা নয়। এটি একটি পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ড। এ ঘটনায় ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার সরকারের দোসর কিংবা ঘাপটি মেরে থাকা স্বৈরাচারের দোসরদের হাত থাকার সম্ভাবনা বেশি।
নেতারা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ঢাবি ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, পয়লা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রা পালনের লক্ষ্যে তৈরি করা প্রতিকৃতিসহ অন্যান্য জিনিসের নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার সরকারের পতনের পর চারুকলার শোভাযাত্রা নিয়ে আগে থেকেই সতর্ক থাকা অত্যাবশ্যক ছিল। পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখা দরকার বলে মনে করি। উৎস: বাংলাট্রিবিউন।