জুলাই অভ্যুত্থানে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে গুলিতে নিহত মো. হাসানের (১৯) জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জানাজা শেষে হাসানের মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এ সময় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিতে হাসানের মরদেহ বহনকারী কফিন নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন বৈষম্যবিরোধীরা।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) জুমার নামাজ শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) রাজু ভাস্কর্যের সামনে হাসানের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে ভিসি চত্বরের দিকে কফিন মিছিল বের করেন জানাজায় আগতরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও হাসানের পরিবারের সদস্যরা মিছিলে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে? আমার ভাইয়ের রক্ত; বৃথা যেতে দেবো না; সাইদ, ওয়াসিম মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ; বিচার বিচার বিচার চাই, শেখ হাসিনার ফাঁসি চাই’ স্লোগান দেন মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা।
জানাজা শেষে হাসানের বাবা মো. মনির হোসেন বলেন, ‘আমার ছেলে গত ৫ আগস্ট হারিয়ে যায়। পরে তাকে হাসপাতাল, ক্লিনিক, কবরস্থান, আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামসহ সব জায়গায় খুঁজি, কিন্তু কোথাও পাই না। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কাছ থেকে তথ্য পেয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে যাই। কাপড়চোপড় দেখে ছেলের মরদেহ শনাক্ত করি। শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) ভোলা সদরে নিজ এলাকায় দ্বিতীয় জানাজা শেষে সকাল ১০টা নাগাদ আমার ছেলের মরদেহ দাফন করা হবে।’
শেখ হাসিনার বিচার দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমি চাই, আমার মতো কোনও বাবা যেন সন্তান না হারান। আমি সরকারের কাছে ছেলের হত্যার বিচার চাই।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, ‘ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও বিপ্লবীদের রক্ত ঝরছে, অনেকে শহীদ হচ্ছেন। আমরা চাই, আওয়ামী লীগকে চিরতরে নিষিদ্ধ করতে, সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছি। কেউ যদি অন্য কিছুর দোহাই দিয়ে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করে তবে জুলাইয়ে যেমন ২ হাজার শহীদ হয়েছি, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে প্রয়োজনে আরও ২ হাজার জীবন দেবো। তবুও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণার লড়াই চালিয়ে যাবো।’
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে রাখা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত অজ্ঞাত সাত জনের মধ্যে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে হাসানের পরিচয় মেলে। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ডিএনএ পরীক্ষায় এ তথ্য পাওয়া যায়। জুলাই আন্দোলনে নিহত এক নারীসহ ছয় জনের মরদেহ অজ্ঞাত হিসেবে এখন ঢামেক হাসপাতাল মর্গে রয়েছে। উৎস: বাংলাট্রিবিউন ও সময়নিউজটিভি।
আপনার মতামত লিখুন :