জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় পোষ্য কোটা সম্পূর্ণরূপে বাতিলের দাবিতে প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে রেখেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে একটি মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা।
মিছিলটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল হয়ে, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ঘুরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়৷ এরপর প্রশাসনিক ভবনে তালা মেরে ভেতরে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবরুদ্ধ করে রাখেন শিক্ষার্থীরা।
মিছিলে শিক্ষার্থীদের, ‘হলে হলে খবর দে, পোষ্য কোটার কবর দে,’ ‘সংস্কার না বাতিল? বাতিল, বাতিল,’ ‘কোটা না মেধা? মেধা,মেধা,’ ‘এসো ভাই, এসো বোন, গড়ে তুলি আন্দোলন’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ৫১ ব্যাচের শিক্ষার্থী মেহরাব তুর্য বলেন, আমরা দুইদিন অনশন করার পরে প্রশাসন একটি যৌক্তিক সংস্কারের আশ্বাস দেয় এবং আমরা সেখানে আমাদের কর্মসূচি স্থগিত করি। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের বিপক্ষে আজকে কর্মকর্তা কর্মচারীরা প্রতিবাদ মিছিল করেন এবং আমাদের একজন শিক্ষার্থীকে হেনস্থা করেন। এখন আমাদের একটাই দাবি, পোষ্য কোটা বাতিল করতে হবে। আমরা উপাচার্যকে ১ ঘণ্টা সময় দিয়েছি। এর মধ্যে উপাচার্য পোষ্য কোটা বাতিলের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে না পারে তাহলে আমরা আগামীকাল থেকে পুরো জাহাঙ্গীরনগর অচল করে দেব।
এর আগে গতকাল রাত সোয়া ১২টার দিকে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে অনশনরত শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক সংস্কারের আশ্বাস দেয় উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান। সেই আশ্বাসের ভিত্তিতে অনশন কর্মসূচি থেকে সরে আসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
এদিকে পোষ্য কোটার জন্য আগে যে সুযোগ সুবিধা ছিলো সেগুলো পুর্নবহালের জন্য প্রতিবাদ মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার সমিতি, কর্মচারী সমিতি এবং কর্মচারী ইউনিয়ন। একইসাথে পোষ্য কোটার জন্য আগের সব সুযোগ-সুবিধা পুর্নবহালের দাবিতে আগামীকাল থেকে লাগাতার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কর্মকর্তা/কর্মচারী ঐক্য পরিষদ জাবির আহ্বায়ক আব্দুর রহমান বাবুল।
আব্দুর রহমান বাবুল বলেন, পোষ্য কোটা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সুযোগ সুবিধাকে ব্যাহত করে না। পোষ্য কোটা একটি প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা যেটা ওই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের জন্য দেওয়া হয়৷ বাংলাদেশের প্রায় সব প্রতিষ্ঠানেই এই সুযোগ সুবিধা বিদ্যমান রয়েছে। এটা আমাদের অধিকার। পোষ্য কোটার জন্য নতুন যে নিয়ম করা হয়েছে সেগুলো বাতিল করে পূর্বের সকল সুযোগ-সুবিধা পুনর্বহালের জন্য আমরা সকালে প্রতিবাদ মিছিল করেছি। আগামীকাল থেকে যতদিন পর্যন্ত পূর্বের সুযোগ সুবিধা পুনর্বহাল করা না হবে ততদিন পর্যন্ত আমাদের লাগাতার কর্মবিরতি চলবে।
আপনার মতামত লিখুন :