বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কয়েক দফায় এই মারধরের ঘটনা ঘটে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক মো. নূর নবীর বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের এক নেতা ও তার সঙ্গে থাকা ছাত্রদলের আরেক কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে।
ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতা আব্দুর রহিম বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং হিসাববিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগের সভাপতি। ভুক্তভোগী অপরজনের নাম তারেক আহমেদ। সে ছাত্রদল কর্মী। এছাড়া অভিযুক্ত সমন্বয়ক নূর নবী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
আব্দুর রহিম বলেন, ‘আমি গত ১৪ জুলাই সকালে চুয়াডাঙায় আমার বাড়ি চলে যাই যেন ঝামেলায় না জড়াতে হয়। ঢাকায় এসে আমি ক্যাম্পাসে বাইক নিতে গেছিলাম। পরে আমার দুইটা বন্ধু ছিল ক্যাম্পাসে, তারা ফোন করে আমাকে কাঁঠাল তলায় আসতে বলে। পরে সেখানে গেলে সমন্বয়ক নূর নবীর নেতৃত্বে ১০-১২ জন আমাকে ধরে শহীদ মিনারের সামনে নিয়ে মারধর করে।’
আব্দুর রহিম আরও বলেন, ‘আমি খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি। ডাক্তারের কাছে যাওয়ারও সাহস পাইনি। আমার মুখে ও পিঠে মেরেছে অনেক। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের কাউকে অভিযোগ করার সুযোগ পাইনি।’
এ সময় আব্দুর রহিমের বন্ধু তারেক আহমেদকেও মারধর করেন অভিযুক্ত নূর নবী। তাকে কয়েল দফায় চড়-থাপ্পড় দেন তিনি। নূর নবীর সহযোগীরাও এসময় তারেককে মারধর করেন।
এ বিষয়ে তারেক বলেন, ‘আমি বন্ধু রহিমের সঙ্গে সন্ধ্যার দিকে ক্যাম্পাসে আসি। রহিম হিসাববিজ্ঞান বিভাগ ছাত্রলীগের সভাপতি। তবে ওর সঙ্গে আমার রাজনৈতিক কোনো সম্পর্ক নেই। ও আমার পাশের রুমেই থাকে। ক্যাম্পাসে রহিমকে দেখামাত্র সমন্বয়ক নূর নবীর নির্দেশে ওরে ধরে নিয়ে যায় এবং মারধর করে। পরবর্তী আমি ওর সঙ্গে থাকায় আমাকেও মারধর করে। কোটা আন্দোলনে আমিও রাজপথে থেকে আন্দোলন করেছি। আমি প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দেব।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সমন্বয়ক নূর নবী বলেন, তারেক ছাত্রলীগকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করিয়ে নিজেকে ছাত্রদল পরিচয় দিচ্ছিল। এ জন্য শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে তাকে মারধর করে। যে ছাত্রলীগ আন্দোলনের বিরুদ্ধে ছিল তাদের ক্যাম্পাসে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। সাধারণ শিক্ষার্থীরা সবাই মিলে এ আন্দোলনকে বেগবান করছে তাদের সঙ্গে কাজ করতে চাই সবসময়।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ইভান তাহসিব বলেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কখনোই এই কাজকে সমর্থন করে না। আমাদের সমন্বয়ক পরিষদের আগেই সিদ্ধান্ত নেই, যে কোনো ছাত্র যদি আমাদের আন্দোলনের বিপক্ষে থাকেন তাদের আমরা কিছু করব না। আমরা আইনের আওতায় এনে তাদের বিচার করা হবে।’
ইভান আরও বলেন, ‘আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই। তার বিরুদ্ধে যথাযোগ্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমরাও যদি কিছু হলে কাউকে ধরে মারধর করি তাহলে আমাদের আর ছাত্রলীগের কোনো পার্থক্য নেই।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবির চৌধুরী বলেন, আমি বিষয়টা এখনো জানি না, খোঁজ নিয়ে দেখবো, আসলে কি ঘটেছে।