রায়হান আবিদ, বাকৃবি: [২] কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও পরিস্থিতি বিবেচনায় ১৪ দফা দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) শাখা ছাত্র ইউনিয়ন। বৃহস্পতিবার (১ আগষ্ট) বাকৃবি শাখা ছাত্র ইউনিয়নের দপ্তর সম্পাদক বি এম আজিজুল হাকিম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
[৩] প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তারা বলেন, সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সরকারি চাকরির নিয়োগে আপীল বিভাগ কর্তৃক রায় প্রকাশিত হয়েছে। যাতে ৯৩% মেধা, ৫% মুক্তিযোদ্ধা, ১% ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এবং বাকি ১% প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই রকম একটি অত্যন্ত সাধারণ ও স্বাভাবিক ব্যবস্থার প্রাপ্তি ছিল আমাদের অধিকার। কিন্তু এই অধিকার আদায়ে অনেক শিক্ষার্থীকে জীবন দিতে হয়েছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সহিংসতায় শহীদ সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতি গভীর শোক এবং পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাকৃবি সংসদ।
[৪] এছাড়া বাকৃবি ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক তারেক আব্দুল্লাহ বিন আনোয়ার এক যৌথ বিবৃতিতে বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় ১৪ দফা দাবি তুলে ধরেছেন।
[৫] দাবিগুলো হলো- কোটার যৌক্তিক দীর্ঘমেয়াদী সমাধানকল্পে সংসদে আইন পাস করতে হবে। হলুদ সাংবাদিক প্রভাষ আমিনের মতো উস্কানিদাতাদের সর্বোচ্চ বিচারের আওতায় আনতে হবে। কোনো হত্যাকাণ্ডই কাম্য নয়। অবিলম্বে বর্বর হত্যাকাণ্ডে জড়িত পুলিশ-প্রশাসন, ছাত্র যুব সংগঠন, ও রাজনৈতিক সুবিধাবাদী মহলের (হোক সরকার বা বিরোধী) কার্যকলাপ সুষ্ঠু তদন্তের এনে সঠিক বিচার নিশ্চিত করতে হবে। শহীদ ভাইবোনদের পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। এ দায়িত্ব সংবিধানের প্রাসঙ্গিক ধারায় অন্তর্ভুক্ত করে অবশ্য পালনীয় করতে হবে। শিক্ষার্থী ও জনতাকে হয়রানিমূলক গুম, মামলা, রিমান্ডে নেওয়া বন্ধ করতে হবে। অবিলম্বে কারফিউ প্রত্যাহার করতে হবে। মহান দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ প্রধানমন্ত্রী সহ বিতর্কিত সকল মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীদের দেশ ও জাতির কাছে দুঃখ প্রকাশ করতে হবে। নিহতদের সঠিক সংখ্যা প্রকাশ করতে হবে।
[৬] বাকৃবিসহ দেশের সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দিয়ে, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিতকল্পে ক্যাম্পাসে প্রকৃত গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। অতি দ্রুত হলগুলোতে হল সংসদ এবং কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিতে হবে। হলে কোনো প্রকার গণরুম, গেস্টরুম চালু রাখা যাবে না। ১৭ তারিখ রাতে ক) স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় কিভাবে জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে চলে গেলো? খ) তাৎক্ষণিক হল ভ্যাকান্টের হঠকারি সিদ্ধান্ত কেন নেওয়া হলো? গ) শিক্ষার্থীদের কেন মানসিক হয়রানি করা হলো? ঘ) দূর-দুরান্তে যাদের বাড়ি তাদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা না করে, একরকম জোর করেই হল ছাড়তে বাধ্য করা কেন হলো? সদুত্তর সম্বলিত প্রশাসনিক জবাবদিহি আগামী ৩ কর্মদিবসের মধ্যে দিতে হবে। বাকৃবির প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা ভিসি, প্রক্টর ও কতিপয় প্রভোস্টের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণের জন্য শিক্ষার্থীদের নিকট দুঃখ প্রকাশ করতে হবে। অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও সর্বজনীন পেনশন 'প্রত্যয় স্কিম' বিরোধী আন্দোলনের যৌক্তিক সমাধান করতে হবে এবং তাদের দ্রুত ক্লাসে ফেরার ব্যবস্থা করতে হবে। সম্পাদনা: এ আর শাকিল
প্রতিনিধি/এআরএস
আপনার মতামত লিখুন :