শিরোনাম
◈ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শীতকালীন সবজি চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা ◈ রাজধানীর শ্যামপুর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি রনি গ্রেফতার ◈ টাকা না পেয়ে ন্যাশনাল ব্যাংকে তালা দিলেন গ্রাহকরা ◈ দেখে মনে হয় স্কুল পড়ুয়া কিশোর, বয়স ২২, করেন মাদক ব্যবসা ◈ ৭ কলেজ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রসঙ্গে যা বললেন শিক্ষা উপদেষ্টা ◈ চার ঘণ্টা করে ট্রাফিকের দায়িত্বে থাকবে ৭০০ যুবক: উপদেষ্টা আসিফ (ভিডিও) ◈ ‘তোমরা রাস্তা বন্ধ করবা, আমরা কি আঙ্গুল চুষবো’ সাধারণ মানুষের আবেগেরই বহিঃপ্রকাশ (ভিডিও) ◈ শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়ার বিষয়ে যা বললেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস ◈ অলিম্পিক ক্রিকেট সরে যাচ্ছে নিউ ইয়র্কে ◈ শান্তকে টেস্ট ও ওয়ানডেতে রেখে টি-টোয়েন্টিতে সোহানকে অধিনায়ক করা য়ায়: আশরাফুল

প্রকাশিত : ০১ আগস্ট, ২০২৪, ০২:১২ দুপুর
আপডেট : ২৬ অক্টোবর, ২০২৪, ১১:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ছয় সমন্বয়ককে ছেড়ে দিয়েছে ডিবি

ছয় সমন্বয়ক

মাসুদ আলম: [২] ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা দেড়টার একটু পরেই তারা ডিবি কার্যালয় থেকে কালো রঙের একটি গাড়িতে বেরিয়ে আসেন।

[৩] ডিবি হেফাজত থেকে ছাড়া পাওয়া অন্য সমন্বয়করা হলেন- নাহিদ ইসলাম, মো. সারজিস আলম, হাসনাত আব্দুল্লাহ, মো. আবু বাকের মজুমদার, আসিফ মাহমুদ ও নুসরাত তাবাসসুম।

[৪] ডিবি লালবাগের ডিসি মশিউর রহমান বলেন, দুপুরে ছয় সমন্বয়ককে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

[৫] বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টায় ডিবি কার্যালয়ে প্রবেশ করেন সমন্বয়ক নাহিদের বাবা বদরুল ইসলাম। সে সময় তিনিসহ মোট পাঁচজন ডিবি কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। বৃহস্পতিবার ভোর ৬টায় ডিবি কার্যালয় থেকে ফোন দিয়ে সবার পরিবারকে আসতে বলা হয়। 

[৬] নাহিদের বাবা বদরুল ইসলাম বলেন, আমরা নাহিদকে নিয়ে বাড্ডার বাসায় ফিরেছি। নাহিদসহ ছয় সমন্বয়ককেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

[৭] এদিকে, ডিবি অফিস থেকে ছাড়া পেয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেদের বক্তব্য দিয়েছেন  সমন্বয়করা। ফেসবুকে পোস্ট দেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। পোস্টের মাধ্যমে তিনি আন্দোলন চালিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দেন।

[৮] পোস্টে তিনি লেখেন- ‘এই আন্দোলনে গ্রেপ্তার হওয়া শেষ ব্যক্তিটি মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমরা কেউই মুক্ত নই। এই গণগ্রেপ্তার গণঘৃণার নামান্তর। আমাদের মুক্তি তখনই সম্পূর্ণ হবে, যখন এই আন্দোলনে গ্রেপ্তার হওয়া শেষ ব্যক্তিটিও মুক্তি পাবেন। এই গণগ্রেপ্তার কেবল নিরপরাধ মানুষের অধিকার হরণ নয়, বরং আমাদের সমগ্র সমাজের ওপর চাপিয়ে দেওয়া একটি নিষ্ঠুরতার প্রতিফলন। এটি মুক্তচিন্তা ও মানবাধিকারের প্রতি এক ভয়ানক আঘাত।  
আমাদের এই আন্দোলন শুধুমাত্র ব্যক্তির মুক্তির জন্য নয়, বরং বৈষম্য, নিপীড়ন, গণগ্রেপ্তার এবং শিক্ষার্থী নির্যাতনের বিরুদ্ধে। এই আন্দোলনে গ্রেপ্তার হওয়া শেষ ব্যক্তিটি মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। ’

[৯] সারজসি আলম লেখেন- ‘কথা দিয়েছিলেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের থেকে কাউকে গ্রেপ্তার করবেন না, মামলা দিয়ে হয়রানি করবেন না। আপনারা কথা রাখেননি। আপনারা আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর আঘাত করেছেন। সারা দেশে আমার স্কুল কলেজের ভাইবোনদের ওপর লাঠিচার্জ করেছেন। যাকে ইচ্ছা তাকে জেলে পাঠিয়েছেন। আন্দোলনকারীকে খুঁজে না পেলে বাসা থেকে ভাইকে তুলে নিয়েছেন, বাবাকে হুমকি দিয়েছেন! মাশরুর তার উদাহরণ।

[১০] তিনি আরও লেখেন, যারা একটিবারের জন্যও এই আন্দোলনে এসেছে তারা শান্তিতে ঘুমাতে পারে না, গ্রেপ্তারের ভয়ে থাকে। এমন অনেকে আছে যাদের পরিবার এখনো তাদের খোঁজ পায়নি। এমন তো হওয়া উচিৎ ছিল না! কোথায় মহাখালীর সেতু ভবন আর কোথায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়! অথচ আপনারা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক আরিফ সোহেলকে মহাখালীর সেতুভবনে হামলার জন্য গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নিলেন। সাথে আছে আসিফ মাহতাব স্যার, মাশরুরসহ আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী অসংখ্য শিক্ষার্থী। রিকশা থেকে নামিয়ে প্রিজন ভ্যানে তুলছেন, বাসা থেকে তুলে নিয়ে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন। আমার বোনদের রাস্তায় ফেলে পিটিয়েছেন। কি ভাবছেন? এভাবেই সবকিছু শেষ হয়ে যাবে?

[১১] সারজিদ আরও লেখেন, ৬ দিনের ডিবি হেফাজত দিয়ে ৬ জনকে আটকে রাখা যায় কিন্তু এই বাংলাদেশের পুরো তরুণ প্রজন্মকে কীভাবে আটকে রাখবেন? দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচার, ক্ষমতার অপব্যবহার করে যে ক্ষোভ সৃষ্টি করেছেন প্রতিনিয়ত সেগুলো কীভাবে নিবৃত করবেন? পুলিশ ভাইদের উদ্দেশ্যে একটা বলি। এ দেশের মানুষের ক্ষোভ আপনাদের ওপর নয়, পুলিশের ওপর নয়। এই ক্ষোভ আপনার গায়ের ওই পোশাকটার ওপর। যে পোশাকটাকে ইউজ করে বছরের পর বছর আপনাদের দিয়ে এ দেশের অসংখ্য মানুষকে দমন-পীড়ন করা হয়েছে, অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছে, জেল আর আদালতের প্রাঙ্গণে চক্কর কাটানো হয়েছে, সেই পোশাকটার ওপর। ওই পোশাকটা ছেড়ে আসুন আমাদের সাথে, বুকে টেনে নিব।

[১২] তিনি আরও লেখেন, এ পথ যেহেতু সত্যের পথ, ন্যায়ের পথ, তাই যেকোনো কিছু মোকাবিলা করতে আমরা বিন্দুমাত্র বিচলিত নই। যতদিন না এ বাংলাদেশ আন্দোলনকারীদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠছে; গণগ্রেপ্তার, জুলুম, নির্যাতন বন্ধ হচ্ছে; ততদিন এ লড়াই চলবে। ’

[১৩] আরেক সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ লিখেছেন-  বেআইনিভাবে আটক রাখা থেকে মুক্তির দাবিতে গত মঙ্গলবার রাত থেকে ৩২ ঘণ্টা আমরণ অনশনে ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আসিফ মাহমুদ, নাহিদ ইসলাম ও আবু বাকের মজুমদার। এ সময় তারা কোনো প্রকার খাবার, পানি, ও চিকিৎসা নেওয়া থেকে বিরত ছিলেন। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও সমন্বয়কদের অনশনের মুখে দুপুর ১টার দিকে ৬ সমন্বয়ককে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। 

[১৪] নুসরাত তাবাসসুমের ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন তার ফুফাতো বোন মেহের আফরোজ। নুসরাতের ফেসবুক থেকে তিনি লিখেছেন- ‘নুসরাত তাবাসসুমকে ডিবি অফিস থেকে ফেরত পেয়েছি আমরা। ৩২ ঘণ্টা অনশনের ফলে শারীরিক মানসিকভাবে নুসরাত দুর্বল। সে বর্তমানে কারও সাথে যোগাযোগ করার অবস্থায় নেই। সুস্থ স্বাভাবিক হয়ে নুসরাত তাবাসসুম আপনাদের সাথে যোগাযোগ করবে। সকল প্রতিবাদী কণ্ঠকে আপনাদের দোয়ায় রাখবেন।’ সম্পাদনা: ইকবাল খান

এমএ/আইকে/এনএইচ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়