অপূর্ব চৌধুরী: [২] আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে দেশজুড়ে চতুর্থ দিনের মতো বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি পালন করবে। সূত্র: চ্যানেল ২৪ অনলাইন
[৩] বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগ থেকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনকারীরা।
[৪] কোটা আন্দোলনের সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, আমরা কোনও ঝুলন্ত সিদ্ধান্ত মানছি না। আমাদের এক দফা দাবি, জাতীয় সংসদে আইন পাস করে সরকারি চাকরির সব গ্রেডে শুধু পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যূনতম (সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ) কোটা রেখে সব ধরনের বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করতে হবে। এ দাবি নির্বাহী বিভাগ থেকে যতক্ষণ না পূরণ করা হবে, ততক্ষণ রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
[৫] কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, আমরা আপিল বিভাগের এমন রায়ে আশাহত হয়েছি। আমরা একটি স্থায়ী সমাধান চেয়েছিলাম। কিন্তু মনে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন দমাতেই সরকার এমন মুলা ঝুলিয়েছে। আমরা চাই কোটা নিয়ে পৃথক একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে এই সমস্যাটি সমাধান করা হোক।
[৬] এদিকে কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে তৃতীয়দিনের বাংলা ব্লকেড কর্মসূচিতে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট অবরোধ করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। বুধবার সকাল এগারোটা ৫০ মিনিটের দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও চাকরি প্রত্যাশীরা কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অংশ প্রদক্ষিণ করে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন।
[৭] এর পূর্বে সকাল এগারোটার দিকে ঢাকা কলেজ ও ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেত মোড় ও সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করেন। রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ততম সড়ক গুলিস্তানের জিপিও মোড়ও অবরোধ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
[৮] দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে ফার্মগেট মোড়ে অবস্থান নিয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে আটকে দেন শিক্ষার্থীরা। এতে করে এক্সপ্রেসওয়ে দিয়ে সব ধরনের যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এসময় শত শত যাত্রী হেঁটে গন্তব্যের দিকে রওনা দেন।
[৯] মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের ওঠা ও নামার র্যাম্পও অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অবরোধ করেন আগারগাঁও মোড়। এছাড়াও রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। সূত্র: কালের কন্ঠ
[১০] দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও মহাখালী আমতলী রেললাইন অবরোধ করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। এর পূর্বে সকাল সাড়ে ১০টায় মহাখালীতে সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে অবস্থান করে বিক্ষোভ করেন।
[১১] বেলা সাড়ে ১২টায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
[১২] বেলা ১১টায় ফরিদপুর শহরে রাস্তা আটকিয়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশের সঙ্গে সমঝোতা শেষে আধা ঘণ্টা পর রাস্তা থেকে সরে গিয়ে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেন তারা।
[১৩] একই সময়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশ অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ জেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষির্থীরা। মুষলধারে বৃষ্টির মাঝেও তারা মহাসড়ক ছাড়েনি। এতে মহাসড়কের দুই লেনেই আটকা পড়ে যানবাহন।
[১৪] এদিন চট্টগ্রামের দেওয়ানহাটে রেলপথ অবরোধ করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এতে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা ও সিলেট রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
[১৫] এদিন বৃষ্টিতে ভিজে সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। টানা ষষ্ঠ দিনের মতো ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এসময় রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দেন।
[১৬] বিকেল ৩টার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এতে মহাসড়কের দুই পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়।
[১৭] এদিন ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ, সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ ও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরা। সম্পাদনা: ইকবাল খান
আপনার মতামত লিখুন :