এএইচ সবুজ, গাজীপুর: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত প্রতিটি কলেজে 'ইন হাউস' প্রশিক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, শিক্ষক প্রশিক্ষণকে আমরা দেশের প্রান্তিক পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে চাই। এর মধ্য দিয়েই আগামী দিনের স্মার্ট নাগরিক তৈরি হবে। শিক্ষকরা হবেন সেই স্মার্ট দেশ বিনির্মাণের প্রধান কারিগর।
শনিবার (৬ জুলাই) মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় ইঞ্জিনিয়ারিং স্টাফ কলেজ বাংলাদেশের (ইএসসিবি) মিলনায়তনে কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেস্ট (সিইডিপি) আয়োজিত শীর্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের সনদ বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য ড. মশিউর রহমান।
শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য যদি ভালো কনটেন্ট রেডি করতে পারি। ভালো ম্যাটেরিয়ালসগুলো যদি রিসোর্স হাবে শেয়ার করতে পারি-এভাবে যদি আমরা লার্নিং অ্যাপ গঠন করতে পারি, তাহলে শিক্ষার্থীরা সহজেই ভালো কনটেন্ট হাতের কাছে পাবে।
এর মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা নিজেদের সমৃদ্ধ করতে পারবে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ১০ হাজার শিক্ষককে নানা মেয়াদে প্যাডাগোজি এবং আইসিটি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। বাকী শিক্ষকদের পর্যায়ক্রমে প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসবো। আমরা প্রতিটি কলেজকে প্রশিক্ষণের কেন্দ্র বিন্দুতে পরিণত করতে চাই। আপনারা যা শিখবেন সেটিকে অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে দেবেন। নতুন যে বিষয় শিখছেন সেটিকে আপনার অন্য সহকর্মীকে শেখান।
প্রত্যেকটি কলেজকে প্রশিক্ষণের দুর্গে পরিণত করুন। প্রত্যেকটি কলেজকে প্রশিক্ষণের আলোয় আলোকিত করুন। যদি সেটি সম্ভব হয় আস্থা রাখুন- একেকটি কলেজের পরিবেশ সম্পূর্ণরূপে পাল্টে যাবে।
উপাচার্য আরও বলেন, আপনারা মনে করবেন না বড় ভবন পাওয়া মানে কলেজের সুনাম বৃদ্ধি পাওয়া। বরং প্রতিষ্ঠান যতোই জীর্ণ-শীর্ণ থাকুক না কেন যদি ওই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মানবিক, সৃজনশীল, দেশপ্রেমিক, সমৃদ্ধ চেতনা এবং আলোকিত একটি প্রজন্ম হিসেবে গড়ে ওঠে তাহলেই প্রতিষ্ঠানের সুনাম দেশব্যাপী ছড়িয়ে যায়। আর সেটি ঘটে পাঠদানের মধ্য দিয়ে। ভবন অপরিহার্য সেটি সত্য। তবে ভবনের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আলোকিত শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর ভাব বিনিময়।
যে দেশ বিশ্বব্যাংককে চ্যালেঞ্জ করে পদ্মাসেতু তৈরি করে, যে দেশ দুর্নীতিবাজদের তালিকা করে ব্যবস্থা নেবে, সে দেশ বিশ্বে নেতৃত্ব দেবে, মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই। আসুন প্রিয় দেশমাতৃকাকে ভালোবাসি, শিক্ষার আলোয় এ দেশকে গড়ে তুলি নতুন আদলে। আমাদের সম্মিলিত উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ অপূর্ব হয়ে উঠবে। আর আমাদের প্রজন্ম গৌরব করে বলবে-এটি সোনায় মোড়ানো দেশ।
সমাপনী ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সিইডিপির উপ-প্রকল্প পরিচালক আবদুর রহমান, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) ইনফরমেশন ম্যানেজমেন্ট, কমিউনিকেশন এবং ট্রেনিং বিভাগের পরিচালক ড. মো. সুলতান মাহমুদ ভূইয়া।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইএসসিবির রেক্টর অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মনোয়ার হোসেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি-বেসরকারি কলেজের ১২০ জন শিক্ষক এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন।
২৮দিনব্যাপী চলা এই প্রশিক্ষণ গত ১ জুন শুরু হয়। ৬ জুলাই প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিনিধি/একে
আপনার মতামত লিখুন :