বাবুল আক্তার, চৌগাছা (যশোর): চৌগাছায় বাণিজ্যিকভাবে ভারতীয় মিষ্টি আঙ্গুর চাষ করে সফলতা পেয়েছেন রুহুল আমিন নামের এক যুবক। প্রতিদিনি অসংখ্য মানুষ আঙ্গুরের খেত দেখতে ভিড় করছেন তার বাগানে। দর্শনার্থীদের অনেকে আঙ্গুর বাগান করতে উৎসাহীও হচ্ছেন রুহুল আমিনের সফলতা দেখে।
রুহুল আমিন পৌরসভার জিওলগাড়ি গ্রামের মইনুদ্দীনের ছেলে। তিন ভাইবোনের সবার বড় রুহুল আমিন। অল্প বয়সে সংসারের হাল ধরতে হয় তার। যে কারনে এসএসসি পাসের পরে তিনি বাবার পেশা কৃষিতে মনোযোগ দেন। এক বিঘা জমিতে পেঁয়ারা আবাদ দিয়ে শুরু করেন ফলের চাষ। এর পরে কুল, তার পরে ড্রাগন চাষে সফলতা অর্জন করেন তিনি। রুহুল আমিনের বর্তমানে কুল পেঁয়ারাসহ ৬ বিঘা জমিতে ড্রাগন বাগান রয়েছে। সাথে ১০ কাঠা জমিতে রয়েছে মিষ্টি আঙ্গুরের মাচা। গতানুগতিক চাষের বিকল্প হিসেবে তিনি আঙ্গুর চাষের চিন্তা করেন বলে জানান।
আঙ্গুরের মাচার নিচে বসে রুহুল আমিন জানান, ইউটিউব দেখে আঙ্গুর চাষের প্রতি আকৃষ্ট হন তিনি। গতানুগতিক ধারা পরিবর্তনের আগ্রহ থেকেই দেশের মাটিতে এ ফলের চাষ শুরু করেন তিনি। এখন তার বাগানে থোকায় থোকায় ঝুলছে আঙ্গুরের ছড়া। ফলনের পরিমাণ এত বেশি হয়েছে যে গাছের প্রতি ডগায় শোভা পাচ্ছে আঙ্গুরের থোকা।
তিনি জানান, ইউটিউব দেখে আকৃষ্ট হওয়ার পরে ২০২২ সালের মার্চ এপ্রিল মাসের দিকে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার আব্দুর রশিদের কাছ থেকে চয়ন জাতের ৩৬টি আঙ্গুরের চারা সংগ্রহ করে ১৬ শতক জমিতে রোপন করেন। এক বছরেই সুমিষ্ট আঙ্গুরে ভরে গেছে মাচা। বাগানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত পরিচর্চাসহ খরচ হয়েছে আনুমানিক ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বর্তমান বাগানে ৩৫ থেকে ৪০ মন আঙ্গুর রয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। অনেক ব্যবসায়িরা পাইকারি দরে ক্রয় করতে আগ্রহী হচ্ছেন বলে তিনি জানান।
রুহুল আমিন আরো জানান, ১৬ শতক জমিতে কমপক্ষে ১০০টি গাছ রোপন করা ছিল। প্রথম চাষ বলে বুঝে উঠতে পারিনি। অন্যথায় ফলন আরো বেশি হতো।
এছাড়া প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ আঙ্গুর খেত দেখতে রুহুল আমিনের বাগানে ভিড় করছে। দেশের মাটিতে আঙ্গুর চাষ দেখে অভিভূত তারা।
স্থানীয় বাসিন্দ তুহিন হোসেন ও দর্শনার্থীরা জানান, আঙ্গুরের ফল খেলেও এর চাষ ও গাছ কখনোই দেখেননি তারা।
এ দিকে রুহুল আমিনের আঙ্গুর চাষ দেখে বাগান করতে উৎসাহী হচ্ছেন অনেকে। কিনে নিয়ে যাচ্ছেন চারা। দেশে আঙ্গুর চাষ করলে আর বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে না জানিয়ে মাহাবুর রহমান নামের এক প্রবাসি জানান, রুহুল আমিনের কাছ থেকে চাষ পদ্ধতি শুনেছি। আমিও আঙ্গুর চাষ করতে চাই।
এ ধরনের চাষে কৃষকদের উৎসাহী করতে সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত বলে জানান চৌগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোবাশ্বির হুসাইন।
তিনি বলেন, রুহুল আমিনের বাগান দেখেছি। অনেক ফলনও এসেছে। আঙ্গুরসহ সব ধরনের ফল চাষে উৎসাহী কৃষকদের সবধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তু কৃষিবিভাগ।
প্রতিনিধি/একে
আপনার মতামত লিখুন :