মনজুর এ আজিজ : জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে আমদানিযোগ্য বেশ কয়েকটি পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সুতা, গুঁড়া দুধ, টোব্যাকো, নিউজপ্রিন্ট, বিভিন্ন ধরনের পেপার ও পেপার বোর্ডসহ একাধিক পণ্য আমদানিতে সীমাবদ্ধতা জারি করা হয়েছে।
রবিবার (১৩ এপ্রিল) প্রকাশিত গেজেটের মাধ্যমে এই নির্দেশনা জারি করে এনবিআরের কাস্টমস উইং। কাস্টমস আইন, ২০২৩-এর ধারা ৮ এর উপ-ধারা (১) এর ক্ষমতাবলে এই প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, নেপাল ও ভুটানে উৎপাদিত এবং প্রক্রিয়াজাত সুতা ও আলু ছাড়া অন্য সব পণ্য আমদানি করা যাবে। তবে ভারতের ক্ষেত্রে আরও বিস্তৃত নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। ডুপ্লেক্স বোর্ড, নিউজপ্রিন্ট, ক্রাফট পেপার, সিগারেট পেপার, মাছ, সুতা, আলু, গুঁড়া দুধ, টোব্যাকো, রেডিও-টিভি পার্টস, সাইকেল ও মোটর পার্টস, ফরমিকা শিট, সিরামিকওয়্যার, স্যানিটারিওয়্যার, স্টেইনলেস স্টিলওয়্যার, মার্বেল স্ল্যাব ও টাইলস এবং মিক্সড ফেব্রিক্স—এই পণ্যগুলো ভারত থেকে আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
তবে মূসক নিবন্ধিত বিড়ি উৎপাদনকারী শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো কাঁচামাল হিসেবে তামাক ডাঁটা আমদানি করতে পারবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ রয়েছে।
একই সঙ্গে পূর্বে জারি করা এস.আর.ও নং ২৯৭-আইন/২০২৪/৮৯/কাস্টমস প্রজ্ঞাপনটির কয়েকটি ক্রমিক নম্বর সংশোধন করা হয়েছে। এতে পণ্য তালিকার হালনাগাদ করা হয় এবং ‘সকল রফতানিযোগ্য পণ্য’ আগের মতোই অব্যাহত রাখা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনটি অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় শিল্পকে সুরক্ষা এবং অবৈধ রি-এক্সপোর্ট বা রিরাউটিং রোধ করতেই এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। বিশেষ করে টেক্সটাইল, কাগজ ও সিরামিক পণ্য খাতে দেশীয় শিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা রক্ষা করাই মূল উদ্দেশ্য। তবে কিছু ব্যবসায়ী মহল থেকে এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাব নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করা হচ্ছে। তারা বলছেন, বিকল্প উৎস থেকে পণ্য আমদানিতে খরচ বাড়বে, যা শেষ পর্যন্ত ভোক্তার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।
এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের পক্ষ থেকে বিস্তারিত ব্যাখ্যা না দিলেও, ধারণা করা হচ্ছে বাজেটপূর্ব রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও দেশীয় শিল্প সুরক্ষার অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।