আমের রাজধানী খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জের এক লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন আম কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন চীন।
শনিবার (১২ এপ্রিল) বিকেলে জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি আমবাগান পরিদর্শনে এসে এ আগ্রহের কথা জানান চীনের আমদানিকারক মি. শু ওয়েই। এসময় গোছানো আমবাগান দেখে পছন্দ করেন তিনি। পরে শিবগঞ্জ পৌর এলাকার একাডেমি মোড়ে আম গ্রেডিং, শর্টিং ও শোধন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।
এর ফলে ইউরোপ ও মধ্যপাচ্যের পর চীনের বাজারে প্রথমবারের মত আম রপ্তানির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এতে খুশি চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম চাষি ও উদ্যোক্তারা।
শিবগঞ্জ পৌর এলাকার আমচাষী আহসান হাবিব বলেন, বিকেলে আমার আমবাগান পরিদর্শন করেন চীনের একজন আমদানিকারক। তারা বাগান থেকে সরাসরি আম কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, কোনো মাধ্যম ছাড়া সরাসরি চীনে আম রপ্তানি করতে পারলে আমরা লাভবান হব।
এদিকে শিবগঞ্জ ম্যাংগো প্রোডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খান শামীম বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের কয়েকটি আমবাগান পরিদর্শন করেছেন চীনা আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক একটি প্রতিষ্ঠান। তারা আমাদের কাছে আম কিনতে চায়। আমাদের জেলার জন্য এটা দারুন সুখবর। তিনি বলেন, চীনে আম রপ্তানি হলে, আমাদের জেলার যারা রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন করে তাদের আমের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত হবে এবং আম রপ্তানির জন্য নতুন বাজার পাবে।
তিনি আরও বলেন, কয়েকবছর ধরে বাংলাদেশের রপ্তানিকারকরা ঢাকার স্থানীয় বাজারে আম কিনে রপ্তানি করে আসছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে চাষিরা। তাই খেয়াল রাখতে হবে চীনা আমদানিকারকরা যেন সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে আম কেনেন।
এদিকে, রপ্তানিকারক ওই প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী স্কোয়াড্রন লিডার মাহতাব আলী বলেন, আমরা বাগান পরিদর্শন করেছি। চীনা আমদানিকারক প্রতিনিধি বাগান দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং আম কিনতে আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। তবে তারা চায় বাগান থেকে প্যাকিং করে সরাসরি আম পরিবহন করে বিমানের মাধ্যমে তা দ্রুত পাঠাতে হবে। তবে তা পাঠালেই হবে না, অবশ্যই তা কোয়ালিটি নিশ্চিত করতে হবে। সেটি সম্পন্ন করতে পারলেই কৃষকরা যত খুশি আম দিতে পারবে। এক্ষেত্রে সরকারি পর্যায়ে মনিটরিংসহ কৃষকদের কোয়ালিটি সম্পন্ন আম উৎপাদন এবং লজিস্টিক সাপোর্ট জরুরি বলেও মনে করেন তিনি। তাহলেই বিপুল পরিমাণ আম রপ্তানির সম্ভাবনা তৈরি হবে।
এ বিষয়ে শিবগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নয়ন মিয়া বলেন, আজ বিকেলে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান এমটিবি এগ্রো অ্যান্ড গার্ডেনের মাধ্যমে চীনের একজন আমদানিকারক উপজেলার কয়েকটি আমবাগান পরিদর্শন করেছেন। বাগান পরিদর্শনে তারা রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং আম নিতে আগ্রহের কথা জানান।
তিনি বলেন, চীনের চাহিদা ১ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন আমের। সেক্ষেত্রে আমাদের চাষিরা তাদের চাহিদা ও বিদেশে আম রপ্তানির যে, নিয়ম রয়েছে তা পূরণ করতে পারলে ব্যাপক পরিমাণ আম রপ্তানির সম্ভাবনা তৈরি হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা আশাবাদী প্রথমবারের মত চীনে আম রপ্তানি করতে পারলে লাভবান হবে এখানকার চাষিরা। এজন্য চাষিদের আমরা রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদনে সব ধরনের লজিস্টিক সাপোর্ট দিয়ে আসছি এবং আম রপ্তানিতে সহযোগিতা করা হবে বলেও তিনি জানান। উৎস: চ্যানেল২৪