শিরোনাম
◈ এবার তিন গুণ খরচ হচ্ছে নতুন টাকা ছাপাতে, কোন নোট ছাপাতে কত খরচ হয়? ◈ সেভেন সিস্টার্স ইস্যু: বাংলাদেশকে ‘ভেঙে ফেলার’ হুমকি ভারতীয় নেতার ◈ তরুণীর ফোনে যেভাবে ফাঁদে পড়েন উর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা, অতপর যা ঘটল... ◈ লক্ষ্মীপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু-গ্রুপের গুলাগুলি: এক শিশু গুলিবিদ্ধ  ◈ বিদেশে থাকলেও মনটা পড়ে আছে দেশে- শেখ হাসিনার এমন বার্তার নেপথ্যে যা জানা গেল ◈ বিএনপি নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত, ছাত্রদের অনাগ্রহ ও অস্পষ্টতায় জামায়াত: ইন্ডিয়া টুডেকে মাহফুজ আনাম (ভিডিও) ◈ ড. ইউনূসের সঙ্গে ফোনালাপে রুনা লায়লাকে নিয়ে যা বললেন শাহবাজ শরিফ ◈ যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিদ্যুতের খুঁটিতে ধাক্কা, প্রাণ গেল ৩ জনের ◈ মোদির ব্যক্তিগত সচিব পদে নতুন অফিসার, কে এই নিধি তিওয়ারি? ◈ ইসরাইলের যম ছিলেন যে বাংলাদেশি সন্তান!

প্রকাশিত : ৩১ মার্চ, ২০২৫, ০৩:১৩ দুপুর
আপডেট : ০২ এপ্রিল, ২০২৫, ০২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ঈদের ছুটি: অনেক এটিএম বুথেই টাকা নেই, ভোগান্তিতে গ্রাহক

ঈদের দীর্ঘ ৯ দিনের ছুটিতে দেশের সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও চালু রয়েছে এটিএম বুথ, ইন্টারনেট ব্যাংকিংসহ বিকল্প ডিজিটাল সেবাগুলো। এসব সেবা নির্বিঘ্ন রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক আগাম নির্দেশনা দিলেও বাস্তবে বিভিন্ন স্থানে গ্রাহকরা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন।

এটিএম বুথে নগদ অর্থ সংকট: বর্তমানে দেশে ১২ হাজার ৯৪৬টি এটিএম বুথ এবং ৭ হাজার ১২টি ক্যাশ রিসাইক্লিং মেশিন (সিআরএম) রয়েছে। তবে ইতোমধ্যেই অনেক এটিএম বুথে নগদ অর্থের সংকট দেখা গেছে এবং কিছু ব্যাংক নিজেদের গ্রাহক ছাড়া অন্যদের লেনদেন সীমিত করেছে। এতে সাধারণ গ্রাহকরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। ডাচ বাংলা ব্যাংকের ফাস্ট ট্র্যাক বুথগুলো চালু থাকলেও সব ব্যাংকই এই উদ্যোগ নেয়নি। তারল্য সংকটে থাকা কিছু ব্যাংকের এটিএম বুথ বন্ধ থাকায় গ্রাহকদের অসুবিধার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। একইসঙ্গে কিছু ব্যাংক সীমিত পরিমাণ নগদ অর্থ উত্তোলনের নীতি গ্রহণ করেছে।

ব্যাংকগুলো সাধারণত দুটি পদ্ধতিতে এটিএম বুথে টাকা সরবরাহ করে— শাখার কাছাকাছি বুথগুলোতে ব্যাংক কর্মকর্তারা নিজে এবং দূরের বুথগুলোতে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে। ঈদের ছুটিতে নগদ অর্থ সরবরাহ নিশ্চিত করতে ব্যাংকগুলোর বিশেষ প্রস্তুতি থাকা প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের উদ্যোগ: দেশের ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বাধিক ৮ হাজার ২৫০টি এটিএম বুথ পরিচালনা করছে ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক। তাদের ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ বুথগুলো অন্যান্য ব্যাংকের গ্রাহকদের জন্যও উন্মুক্ত। ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবুল কাশেম মো. শিরিন জানান, ঈদের আগের দিন পর্যন্ত ফাস্ট ট্র্যাক বুথগুলো চালু রাখা হয়েছে এবং সার্বক্ষণিক তদারকি নিশ্চিত করা হয়েছে। 

ব্যাংকের বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে এটিএম বুথে টাকা সংকট হলে তাৎক্ষণিক বার্তা পাওয়া যায় এবং দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

অন্যান্য ব্যাংকের প্রস্তুতি: পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলী জানান, এটিএম বুথ সার্বক্ষণিক চালু রাখতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শাখা থেকে সরবরাহ করা বুথগুলোতে নগদ টাকা ফুরিয়ে গেলে কিছুটা সময় লাগলেও তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে পরিচালিত বুথগুলো দ্রুত নগদ অর্থ পেয়ে থাকে।

সিটি ব্যাংক তাদের বেশির ভাগ এটিএমকে সিআরএম-এ রূপান্তর করেছে। ব্যাংকটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) অরুপ হায়দার জানান, তাদের বুথগুলোতে সার্বক্ষণিক টাকা সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে এবং ঈদের ছুটিতেও কর্মকর্তারা কাজ করছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা: বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়েছে, ছুটির মধ্যে এটিএম বুথ, মোবাইল ব্যাংকিং ও অনলাইন লেনদেন চালু রাখতে হবে। কারিগরি সমস্যা হলে দ্রুত সমাধান করতে হবে। এ ছাড়া, সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং কোনো ধরনের জালিয়াতি প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে।

এদিকে, গ্রাহকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে লেনদেনের তথ্য এসএমএস অ্যালার্টের মাধ্যমে জানানো এবং গণমাধ্যমে প্রচারণার ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গ্রাহকদের আর্থিক লেনদেন নির্বিঘ্ন করতে ব্যাংকগুলোকে সার্বক্ষণিক হেল্প লাইন চালু রাখারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

এটিএম ও ডিজিটাল লেনদেন সচল রাখতে ব্যবস্থা: বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়েছে, এটিএম বুথ, অনলাইন ব্যাংকিং ও মোবাইল ব্যাংকিং সেবা যেন সার্বক্ষণিক চালু থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া প্রতিটি বুথে পর্যাপ্ত অর্থ সরবরাহ রাখতে এবং কোথাও কোনো কারিগরি ত্রুটি দেখা দিলে তা দ্রুত সমাধান করতে বলা হয়েছে। প্রয়োজন হলে ব্যাংকের কর্মকর্তাদের বুথ পরিদর্শন করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে দেশে ৬১টি সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের প্রায় ১৩ হাজার এটিএম বুথ সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে সর্বাধিক বুথ পরিচালনা করছে ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংক। ব্যাংকটির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) মোহাম্মদ সহিদ উল্লাহ জানান, দেশব্যাপী তাদের সব বুথ সচল রয়েছে এবং এখন পর্যন্ত কোনও বড় সমস্যা হয়নি। প্রতিটি বুথে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে পর্যাপ্ত নগদ অর্থ সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ঈদের আগের দিন ও পরের দিন নগদ অর্থ সরবরাহ নিশ্চিত থাকবে, তবে শুধু ঈদের দিন এটিএম নগদ অর্থ সরবরাহ বন্ধ থাকবে।

মোবাইল ও ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ে বিশেষ নির্দেশনা: মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ও পেমেন্ট সার্ভিস অপারেটরদের নিরবচ্ছিন্ন সেবা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এজেন্ট পয়েন্টগুলোতে পর্যাপ্ত নগদ অর্থ নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে, যাতে গ্রাহকরা সহজেই প্রয়োজনীয় লেনদেন সম্পন্ন করতে পারেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় ডিজিটাল ব্যাংকিংয়ের নিরাপত্তা জোরদার করা, সাইবার হামলা প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং প্রতারণা বা জালিয়াতি রোধে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। লেনদেন সংক্রান্ত যেকোনও তথ্য গ্রাহকদের মোবাইলে এসএমএস অ্যালার্টের মাধ্যমে জানাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, ইলেকট্রনিক পেমেন্ট সেবা সংক্রান্ত সতর্কতা প্রচারে গণমাধ্যমে প্রচারণা চালানোর নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

সার্বক্ষণিক হেল্পলাইন চালু রাখার নির্দেশনা: বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়েছে, গ্রাহকরা যেন লেনদেন সংক্রান্ত যেকোনও সমস্যার দ্রুত সমাধান পেতে পারেন, সেজন্য প্রতিটি ব্যাংককে সার্বক্ষণিক হেল্প লাইন চালু রাখতে হবে। গ্রাহকরা কোনও সমস্যার সম্মুখীন হলে নির্দিষ্ট ব্যাংকের হেল্প লাইনে যোগাযোগ করে তাৎক্ষণিক সহায়তা পাবেন।

সতর্কতা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা : ঈদের ছুটির সময় লেনদেন নিরাপদ রাখতে ব্যাংকগুলোকে সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সাইবার হামলার কোনো তথ্য পাওয়া গেলে দ্রুত গ্রাহকদের সতর্ক করার নির্দেশনাও রয়েছে।

ঈদের ছুটিতেও ব্যাংকিং কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যাতে গ্রাহকরা কোনো ধরনের সমস্যার সম্মুখীন না হন এবং প্রয়োজনীয় আর্থিক লেনদেন নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে পারেন।

এদিকে ঈদ উপলক্ষে গ্রাহকদের বাড়তি লেনদেনের চাহিদা মেটাতে এবং ডিজিটাল লেনদেনকে আরও জনপ্রিয় করতে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) ব্যবহারকারীদের জন্য লেনদেন সীমা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন থেকে বিকাশ, নগদ, রকেটসহ অন্যান্য সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকরা দিনে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত লেনদেন করতে পারবেন।

এজেন্ট পয়েন্টে জমা: আগে দিনে ৩০ হাজার টাকা জমা দেওয়া যেত, এখন তা বেড়ে হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। মাসিক সীমা দুই লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লাখ টাকা করা হয়েছে।

এজেন্ট পয়েন্ট থেকে উত্তোলন: আগে দিনে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা উত্তোলন করা যেত, এখন তা বেড়ে হয়েছে ৩০ হাজার টাকা। মাসিক সীমা দেড় লাখ টাকা থেকে বেড়ে ২ লাখ টাকা হয়েছে।

গ্রাহক-গ্রাহক লেনদেন: আগে দিনে ২৫ হাজার টাকা পাঠানো যেত, এখন তা বেড়ে হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। মাসিক সীমা দুই লাখ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে তিন লাখ টাকা।

অ্যাকাউন্টে জমার সীমা: আগে সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা জমা রাখা যেতো, এখন তা বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করা হয়েছে। উৎস: বাঙলাট্রিবিউন।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়