চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল ভারত। যা দেশটির কৃষি রপ্তানি দ্বিগুণ করার লক্ষ্য ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ভারত বিশ্বের সবচেয়ে বড় চাল রপ্তানিকারক দেশ, চাল রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্তের পর থেকে বিশ্ব বাজারে প্রতিদ্বন্দ্বী উৎপাদকদের উপর চাপ বেড়েছে। সম্প্রতি, থাই সাদা চালের প্রতি মেট্রিক টনের মূল্য উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। গত সপ্তাহে যা ৪০৫ মার্কিন ডলালে নেমে আসে। গত বছর জানুয়ারি মাসেও ছিল ৬৬৯ মার্কিন ডলার। খবর ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস
ভারতের এ সিদ্ধান্তটি এসেছে এমন এক সময়ে যখন নয়াদিল্লি কৃষি ও খাদ্য রপ্তানি বৃদ্ধির মাধ্যমে কৃষকের আয়ের উন্নতি এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর লক্ষ্যে কাজ করছে। এর সাথে কৃষি খাতের গুরুত্বও বেড়েছে, যেখানে প্রায় ৪২ শতাংশ ভারতীয় জনগণ কৃষি খাতে নির্ভরশীল।
ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রী পীযূষ গোয়েল জানিয়েছেন, দেশটির লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের কৃষি ও খাদ্য পণ্য রপ্তানি করা। ২০২৩-২৪ সালে যা ছিল ৪৮.১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, অর্থাৎ বর্তমান রপ্তানির দ্বিগুণেরও বেশি। তিনি বলেন, গত বছর আমরা প্রায় ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানি করেছি। তবে কোনও দেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও বড় সাফল্যের জন্য চেষ্টায় থাকে। তবে আমি আশা করি আমরা ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার লক্ষ্যটি অর্জন করতে পারবো।
ভারত ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর সময় চাল রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল, যার ফলে বিশ্বব্যাপী চালের দাম বৃদ্ধি পায় এবং বাজারে ঘাটতির শঙ্কা সৃষ্টি হয়। তবে গত সেপ্টেম্বর থেকে ভারত নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা শুরু করে এবং বর্তমানে চাল রপ্তানি আগের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
দেশটির এস এন্ড পি গ্লোবাল জানিয়েছে, ২০২৩ সালে ভারত প্রায় ১৪ মিলিয়ন টন চাল রপ্তানি করেছে এবং ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে থেকে ২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত রেকর্ড ২১.৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন চাল রপ্তানি করার সম্ভাবনা রয়েছে।
ভারতীয় আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক গবেষণা পরিষদের কৃষি অর্থনীতিবিদ অশোক গুলাটি মন্তব্য করেছেন, বিশ্বব্যাপী ৫৪-৫৫ মিলিয়ন টন চালের বাজারে যদি ভারত ২০ মিলিয়ন টনের বেশি চাল রপ্তানি করে, তাহলে সেই চাল বাজারে প্রবাহিত হবে এবং বাজারের পরিস্থিতি আরও স্থিতিশীল হবে। এতে করে বিশ্বব্যাপী চালের বাজারে ভারতীয় চালের প্রভাব আরও বৃদ্ধি পাবে। যা ভারতের কৃষি খাতকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে সহায়তা করবে।