শিরোনাম
◈ ‘হিজাব মোড়ানো’ আইফেল টাওয়ার, বিজ্ঞাপন ঘিরে উত্তাল ফ্রান্স ◈ দেশের স্বার্থেই চলতি বছরের মধ্যে নির্বাচন চায় বিএনপি: মির্জা ফখরুল ◈ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস নিয়ে এখনো বিতর্ক কেন? ◈ জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতির বীর সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা  ◈ আজকে স্বাধীনতা দিবস প্রমাণ করে, দ্বিতীয় স্বাধীনতা বলে বাংলাদেশে কিছু নাই : মির্জা আব্বাস  ◈ স্বাধীনতা দিবসে যে হুঁশিয়ারি দিলেন নাহিদ ইসলাম (ভিডিও) ◈ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ব্রাজিলকে ৪-১ গোলে হারালো আর্জেন্টিনা  ◈ ফিল সিমন্স ২০২৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ দলের হেড কোচ থাকছেন, চুক্তি সম্পন্ন ◈ অস্ট্রেলিয়ার ঐতিহাসিক গাব্বা স্টেডিয়াম ভেঙে ফেলা হবে  ◈ সংকট উত্তরণে নির্বাচনেই সমাধান দেখছেন রাজনীতিবিদরা, বিশেষজ্ঞরা যা বললেন

প্রকাশিত : ২৫ মার্চ, ২০২৫, ১১:২৫ রাত
আপডেট : ২৬ মার্চ, ২০২৫, ১১:০৭ দুপুর

প্রতিবেদক : আর রিয়াজ

যেদিকে তাকাই সেদিকেই সিন্ডিকেট: লুৎফে সিদ্দিকী

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক: সরকারের প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক দূত লুৎফে সিদ্দিকী বলেছেন, যেদিকেই তাকাই, যেখানেই দেখিনা কেনো, একটা শব্দ বার বার আসে, এটা কি,সিন্ডিকেট। যেখানে আমাদের একটা মার্কেট ফোর্সেস থাকার কথা, কম্পিটিশন থাকার কথা, ফেয়ার প্লে হওয়ার কথা ওখানে শুধু একটা সিন্ডিকেট কথাটা চলে আসে। আর সিন্ডিকেটের সাথে সাথে একটা নেক্সাস। মানে বলা হয় সিন্ডিকেট যদি বিজনেসম্যান বিজনেস ওনারদের মধ্যে হয় তাহলে নেক্সাসটা ইনক্লুডস ইকুইপ্ড উইদিন দ্য গভর্নমেন্ট। সিন্ডিকেটের কারণে বাজার ঠিকভাবে কাজ করছে না। আমরা সিন্ডিকেটতন্ত্র থেকে কীভাবে একবারে মুক্তি পাবো সেটিও ইকোনমিক রিফর্মের একটি অংশ। আর আমরা সেই চেষ্টাই করছি।

লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, সরকারের সাথে কারো সাথে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে এই নেক্সাস সিন্ডিকেটের কারণে যেভাবে একটা রেজাল্ট পাওয়ার কথা, মার্কেট ফোর্সেসের কাজ করার কথা, ইন এ রেগুলেটিং এনভায়রনমেন্ট আইন অনুযায়ী যেভাবে কাজ করার কথা, সেভাবে কেনো জানি তা হয় না। এই একই টেমপ্লেট সেক্টর বাই সেক্টর।

বিজনেস বাই বিজনেস। ইন্ডাস্ট্রি বাই ইন্ডাস্ট্রি। মিনিস্টি বাই মিনিস্টি। বার বার আসছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা যায় যে আইনের ভেতরে এ্যান্টিগভমেন্টিভ কিছু  ক্লজ ভরে দেওয়া আছে যাতে করে এই সিন্ডিকেটটা অলমোস্ট লিগ্যাল, ল’ফুল ইনস্টিটিউশন হয়ে আছে। এগুলোকে কিছু একটা করতে হবে। স্ট্রাকচার বা কাঠামোগত সংস্কার করতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এই সংস্কারটা করতে হবে কালচারালি। সন্দীপে যে ফেরি চালু হল, এটা যাতে না হতে পারে সেখানেও সিন্ডিকেট কাজ করেছে। অনেকগুলো মন্ত্রণালয় মিলে। এটা হল প্রেক্ষাপট। 

ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও প্যানেল আলোচক ছিলেন ডি৮ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর মহাসচিব আশরাফুল হক চৌধুরী। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ এগ্রোকেমিক্যাল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএএমএ) সভাপতি কেএসএম মোস্তাফিজুর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম।

প্রধানউপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক দূত বলেন, প্রতিদিন খবরে কাগজে দেখি ইলেকশন কবে হবে। আমিতো জানি ইলেকশন কবে। এক্সাট ডেটটা না জানলে মাসটা তো জানি। প্রতিদিন এটা নিয়ে প্রশ্ন না করে এই প্রশ্ন আমাদের করা উচিত, এই আইনটা প্রয়োগ করা হচ্ছে না কেনো? প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে সচিব আছেন, মন্ত্রী আছেন, তাদের প্রশ্ন করুন। 
বাংলাদেশকে সিঙ্গাপুর-দুবাইয়ের মতো একটি হাব হিসেবে দেখার প্রত্যাশা করে লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, আমাদের এখানে একটি হাব হওয়ার সুযোগ রয়েছে। কখনো ভারত ও চীনের মতো বড় দেশ হাব হতে পারবে না। সিঙ্গাপুর-দুবাইয়ের মতো আমরাও বড় বড় দেশগুলোর সমস্যা সমাধান করব। সেক্ষেত্রে দক্ষ জনশক্তি প্রক্রিয়াকরণের একটি হাব হতে পারে বাংলাদেশ। আর আমরা এখানে প্রসেসিং সেন্টার করতে পারি। হালাল মিট অবশ্যই করা যেতে পেরে।

প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ দূত বলেন, চট্রগ্রাম বন্দরকে আরও বেশি কার্যকর করতে হবে। আমরা প্রথমে দেখেছি, সরকারের ভেতরে ইজ অব ডুয়িং বিজনেস থাকে না। এক মন্ত্রণালয় আরেক মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়। আমরা এখন আন্ত:মন্ত্রণালয় কমিটি করেছি। কোন মন্ত্রণালয়ে কোন কাজ আটকে আছে আমরা সেখানে তা আলোচনা করি।
লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, আমাদের এলডিসি গ্রাজুয়েশন করতে হবে। আজ কিংবা কাল আমাদের তা করতেই হবে। ইইউ’র বাজারে আমাদের ডিউটি ফ্রি এক্সেস আছে। তারা বলছে, তোমাদের এতো সুবিধা দিচ্ছি, তোমাদের ট্যাক্স-জিডিপি এত কম কেন? প্রাইভেট ইনভেস্টমেন্ট এত কম কেন? ফলে এলডিসি গ্রাজুয়েশন নিয়ে না ভেবে আমাদের ‘ওয়ান বাংলাদেশ’ নিয়ে ভাবতে হবে। আমরা নিজেরা কতোটা উন্নত হতে পারি- তা ভাবতে হবে। সরকার, রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা কে কী করতে পারি, কী করতে হবে- তা ভাবতে হবে।

লুৎফে সিদ্দিকী বলেন, মার্কেট ইকোনমিকে আরও বেশি ইকোনমিক করতে হবে। চট্রগ্রাম বন্দরকে আরও বেশি কার্যকর করতে হবে। আমরা প্রথমে দেখেছি, সরকারের ভেতরে ‘ইজ অব ডুয়িং বিজনেস’ থাকে না। এক মন্ত্রণালয় আরেক মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয়। আমরা এখন আন্ত:মন্ত্রণালয় কমিটি করেছি। কোন মন্ত্রণালয়ে কোন কাজ আটকে আছে, আমরা সেখানে তা আলোচনা করি। আগামী মাসের মধ্যে ন্যাশনাল সিঙ্গেল ইউন্ডো চালু হবে।

প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, ইনভেস্টমেন্ট সামিট এবার একটু ভিন্ন আকারে হবে। সেখানে সেমিনার বা ভাষণ টাইপের পোগ্রাম কম থাকবে। কী কী করা যেতে পারে, কেবলমাত্র তা নিয়েই আলোচনা হবে।

তিনি আরও বলেন, দেশের পোশাক খাতে ক্রেতাদের সমস্যা দূর করতে তাদের সঙ্গে আমাদের নিবিড় যোগাযোগ রয়েছে। পোশাক খাতের ক্রেতাদের শীর্ষ ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে আমরা এখন প্রতিমাসে একটি বৈঠক করছি। এরইমধ্যে দুটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে দেশের শীর্ষ পর্যায় থেকে পোশাক খাতের ক্রেতাদের সঙ্গে আর কখনও বৈঠক হয়নি। আমরা পোশাক খাতের ব্রান্ডের গ্লোবাল নেতাদের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছি। দেশে থেকে পোশাক খাতের ক্রয়াদেশ অন্যদেশে স্থানান্তর হচ্ছে- এমন একটা কথা শোনা যাচ্ছিল, সেটি এখন আর কেউ বলে না, বলবেও না। বরং কয়েক মাস ধরে দেশের পোশাক খাতের রফতানি আয় বাড়ছে। আইএলও-তে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে মামলা আছে, সেটি কীভাবে সমাধান করা যায়, তা নিয়েও আমরা কাজ করছি।

এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনে যাওয়ার সময় নিয়ে না ভেবে বাংলাদেশকে প্রকৃত উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিতে হবে। সরকার, রাজনৈতিক নেতৃত্ব, আমলাতন্ত্র, ব্যবসায়ী ও সমাজের অন্য সবাই মিলে বাংলাদেশকে ‘ওয়ান বাংলাদেশ’ হিসেবে গড়তে হবে।

এ সময় লুৎফে সিদ্দিকী আরও বলেন, আমাদের জন্য এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন অপশনাল। সেটা দুই বছরে হোক, তিন বছরে হোক আমাদের করতে হবে। করার পরে যদি ইউরোপীয় ইউনিয়ন আমাদের কিছু ছাড় দেয়, তবে সুযোগ-সুবিধা বেশি দিন রাখার জন্য সমঝোতা করা যেতে পারে। আসলে এলডিসি করব কি করব না, সেটা একদম আমাদের পছন্দে হবে তা নয়। এলডিসির জন্য যে সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছি, অন্য দেশ আমাদের শুল্কমুক্ত-কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা দিচ্ছে। কিন্তু তারা চাইলে সেটা বন্ধ করেও দিতে পারে।

প্রধান উপদেষ্টার এই বিশেষ দূত বলেন, যারা এসব সুবিধা দিচ্ছে তারা যদি ঠিক করে যে, এখন বাংলাদেশের অর্থনীতির অবস্থা ভালো। এ সুবিধা তুলে নেওয়া হবে, আসলে এটা তাদের পছন্দ। আবার এর মধ্যে তারা যদি এটাও বলে, এত সুযোগ দেওয়ার পরেও তোমাদের করের হার কম এত কম, বিশ্বের মধ্যে সর্বনিম্ন, বিদেশি বিনিয়োগ কম, বারবার বলেও ব্যবসা সহজীকরণ হয় না, দীর্ঘদিন ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো (এনএসডাব্লিউ) বাস্তবায়ন নেই, তাহলে আমরা কতদিন সুবিধা দিয়ে যাব? এটার উত্তর কঠিন হবে।

তিনি যোগ করেন, এজন্য আমি বলব, এখনই এলডিসি করব না। সেদিকে এনার্জি নষ্ট না করে আমাদের কী করা যায় সেটা দেখতে হবে। ‘ওয়ান বাংলাদেশ’ গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন আমাদের সুযোগ অনেক আছে। কি করতে হবে সেটা আমরা মোটামুটি জানি। অপরচুনিটি অনেক আছে। প্রথমে একটা এ্যাসেসমেন্ট করতে হবে যে আমাদের স্টার্টাটিং লাইনটা কোথায়। কনটেক্সটা কি? এতবছর এগুলো নিয়ে কথা বলা হয়েছিল, হয়নি কেউ শোনেনি। আমাদের এলডিসি গ্রাজুয়েশন করতে হবে। দুই বছর পর বা তিন বছর পর হোক। এলডিসি গ্রাজুয়েশন করার পর যদি আরো তিন বছর ইউরোপিও ইউনিয়ন আমাদের ছাড় দেয়, এগুলো নেগোশিয়েট হয়ত করা যেতে পারে।

গ্রাজুয়েশন করব কি করব না এটা আমাদের চয়েস। এখন আমাদের কি অবস্থা। এলডিসি মানে কি? আন্তর্জাতিক বাজারে অন্যরা আমাদের অনেক সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে। ওদের মার্কেটে ডিউটি ফ্রি এ্যাক্সসেস পাচ্ছি। কিন্তু ওরা দেখছে আমাদের ট্যাক্স রেভিন্যু এত কম, লোয়েস্ট ইন দি ওয়ার্ল্ড। এনবিআর রিফর্ম করার কথা বলা হচ্ছে কত বছর ধরে। প্রাইভেট ফরেন ইনভেস্টমেন্ট এত কম। বার বার বলা হচ্ছে ইজি ডুইং বিজনেস, ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইনডো, কোনো লাভ হচ্ছে না, শুধু কি তোমাদের সুযোগ আমরা দিয়েই যাব। নিজের জন্যে তোমরা কিছু করবা না। এ অবস্থায় টিকে থাকা খুব কঠিন। তাই এলডিসি গ্রাজুয়েশন করব কি করব না এদিতে শক্তি খরচ না করে চিন্তা করতে হবে আমাদের কি করতে হবে। 

তিনি বলেন, এখানে আমাদের বলতে আমি বলছি ওয়ান বাংলাদেশ। সরকার, পলিটিক্যাল লিডারশিপ, ব্যুরোক্রেসি, বিজনেস, আদার ফর্মস অব সোসাইটি আমরা সবাই মিলে একসাথে কি করতে হবে তা ঠিক করতে হবে। আইন প্রয়োগ হচ্ছে না, চিঠি দিলে জবাব মিলছে না, আর না দিলে এটা অব্যাহতভাবে চলতে থাকবে অসীম পর্যন্ত এটা চলতে পারে না। এটা নিয়ে ওয়ান বাংলাদেশ ওয়ান কান্ট্রি এই সংস্কার হচ্ছে না কেনো। 

হাব তৈরির বিষয়ে তিনি বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে বলেন, বাংলাদেশের অবস্থান, জিওইকোনোমিক লোকেশন, আমাদের উপরে চায়না, একদিকে ইন্ডিয়া, একদিকে সাউথ ইস্ট এশিয়া, ভৌগলিক আমাদের কয়েকটা মেজর এ্যাডভানটেজ আছে। একটা হল আমরা একটা হাব করতে পারি। দুবাই বা সিঙ্গাপুর যেমন হাব। হাব মানে ওখানে গিয়ে সবাই একত্র হয়।

ট্রাম্পের প্রথম শাসনামলে উনি উত্তর কোরিয়ার নেতার সঙ্গে বৈঠক করলেন সিঙ্গাপুরে। চীন ও তাইওয়ানের নেতাদের একমাত্র মিটিং সিঙ্গাপুরে হয়। ইন্দোনেশিয়া থেকে টিউলিপ ফুল অ্যামস্টারডামের কাঁচা বাজারে যাচ্ছে সিঙ্গাপুর হয়ে কারণ  রেফ্রিজারেটর সিস্টেম আছে, প্রসেসিং ব্যবস্থা আছে এয়ারপোর্টে, মানে হাব হচ্ছে প্রসেসিং সিস্টেম। দুবাইতে জেনারেল আলি ফোর্ট তেমনি। ফ্রি ইকোনোমিক জোন। পোর্টে জাহাজ এসে ওই জোনে প্রসেসিং করে পণ্য প্লেনে করে চলে যাবে, কোনো কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স লাগে না। দুবাই হচ্ছে বিশ্বে সেকেন্ড লার্জেস্ট টি ব্লেন্ডিং ফ্যাক্টরি।

সেকেন্ড লার্জেস্ট সুগার ফ্যাক্টরি। চিনি তৈরি করতে হয় এমন কিছু ওদের নেই। কিন্তু ওখানকার হাব থেকে সারাবিশ্বে সাপ্লাই হচ্ছে। আমরা এমন হাব হওয়ার সুযোগ আছে যেহেতু আমার এই লোকেশনে আছি। কখনো সুপার পাওয়ার বা বড় কোনো দেশ হাব হতে পারে না। চায়না, ইন্ডিয়া হাব হতে পারে না। আমরা হতে পারব। ওদের ভেতর দ্বন্দ¦ আছে। ওরা আমাদের এখানে এসে মিট করব।

ইন্দোনেশিয়া বা মালয়েশিয়া নয়, সিঙ্গাপুরে এই কারণে হাব। আর টাইম জোনে আমাদের দুই ঘন্টা পড়ে দুবাই, দুই ঘন্টা আগে সিঙ্গাপুর। পারফেক্ট লোকেশন। এটা গেল ইস্ট থেকে ওয়েস্ট বা ওয়েস্ট থেকে ইস্ট। এখন নর্থ থেকে সাউথ , চায়না, নেপাল থ্রু ইন্ডিয়া,  ভুটান অল ওয়ে ডাউনটু বে অব বেঙ্গল। চায়নার অর্ধেকের বেশি এলাকার মালামাল সাগর পথে আনানেওয়া হয়। এটা চট্টগ্রাম বন্দর  বা বাংলাদেশ হয়ে হতে পারে।  

ভারতের পূর্বাঞ্চলের অর্থনীতি আরো অনেক সাসসেসফুল করতে আমাদের রুট দরকার। রিজিওনাল হাব একটা হল হরাইজেন্টাল ও আরেকটা হল করিডোর। আন্তর্জাতিকভাবে ইকোনমিক করিডোর বলা হয়। আরেকটা হল প্রসেসিং সেন্টার। আমাদের এখানে এসে শুধুমাত্র জিনিস প্রসেসিং করবে। হালাল মিট অবশ্যই করা যেতে পারে, এমন অনেক কিছুই করা যেতে পারে। আমাদের প্রধান প্রসেসিং হচ্ছে পিপল প্রসেসিং।

আমাদের গড় বয়স হচ্ছে ২৭, থাইল্যান্ডে ৩৯, চীন ৩৯, জার্মানি ও জাপান ৪৯। ডেমোগ্রাফিকলি আমাদের অনেক মানুষ। ঘনবসতি আমাদের সম্পদ। আগে যেমন ক্রুড অয়েল পরিশোধন করে সম্পদ তৈরি হত, মানে বলা হত যার যত বেশি ক্রুড অয়েল সেই তত ধনী। আমরা তেমনি আমাদের অদক্ষ বা আধাদক্ষ মানবসম্পদকে পরিশোধন করতে পারি, মানে সেক্টর বাই সেক্টর।

ভাষা শিখিয়ে একটা এক্সক্লুসিভ জোন তৈরি করতে পারে মানবসম্পদের। এধরনের ভিশনকে বাস্তবায়ন করার জন্যে মিশন ঠিক করতে মার্কেট ইকোনমিকে আরো কার্যকরভাবে কাজে লাগাতে হবে। সিন্ডিকেট ও নেক্সাস ভেঙ্গে ফেলতে হবে। শুধুমাত্র গভর্নান্স চেঞ্জ করে এটা করা যায় এবং হচ্ছে। অবকাঠামো চেঞ্জ না করেও শুধু সমন্বয় করে চট্টগ্রাম বন্দরে রেকর্ড মালামাল খালাস করা সম্ভব হয়েছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ ও এনবিআররে মধ্যে কোঅর্ডিনেশন বৃদ্ধিতে ভাল ফল পাওয়া গেছে।

কম্যুনিকেশনের অভাবে বেশিরভাগ ভোগান্তি হত। আসলে সরকারের ভেতরে ইজি অব ডুয়িং বিজনেস নিশ্চিত করতে হবে। মন্ত্রণালয়গুলে একটা একটা থাকে। কিছু বললে বলে আমরা চিঠি দিয়েছি। চিঠি চালাচালি হয়, মিটিংএ জিজ্ঞেস করি চিঠি কাকে দিলেন, চিঠি কবে দিলেন। ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি পেটেন্ট ট্রেডমার্কের ব্যাপারে আপডেট জানতে চেয়ে দেখি একটা কমিটি করা হয়েছিল ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। ধারণা করা হয়েছিল ৩/৪ মাস পরপর বসা হবে। এই বছরের আগে আর বসা হয়নি।

মিনিটসগুলো সম্পর্কে জানতে চাইলে দেখা গেল কয়েকটা এ্যাকশন স্ট্যাটাস ছিল আর স্ট্যাটাসের নিচে লেখা ছিল ‘চলমান’। কে চলমান, কার রেসপন্সিবিলিটি, কবে শুরু, কবে শেষ তা অজানা। প্রধানউপদেষ্টার নেতৃত্বে বেশ কয়েকটা ইন্টার মিনিস্ট্রিয়াল কমিটি কাজ করছে। প্রতিমাসে কমিটিগুলো বসে দেখছে কি কোথায় আটকে আছে। যাতে করে সরকারের কাজে যে একটা মেটাবলিজম বা গতিশীলতা আনা যায়। এধরনের কমিটির এক বৈঠকে একটি সিদ্ধান্তে আটকে থাকা চারলাখ পাসপোর্ট ছেড়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। সরকারের ভেতরে কালচার পরিবর্তনের চেষ্টা করছি। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়