চট্টগ্রাম থেকে পাইপলাইনে ঢাকায় জ্বালানি তেল (ডিজেল) পরিবহন কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে আগামী মাস থেকে। এরই মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে পরিবহন হয়েছে জ্বালানি তেল।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) তথ্যমতে, ভূগর্ভস্থ এই পাইপলাইনে দ্রুত ও পরিবেশবান্ধব উপায়ে পরিবহন করা যাবে বছরে ২৭ লাখ মেট্রিক টন ডিজেল। এতে বার্ষিক সাশ্রয় হবে ২৩৬ কোটি টাকা। পাইপলাইনের নিরাপত্তায় থাকছে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্বয়ংক্রিয় নজরদারি।
সাগরপথে আমদানির পর চট্টগ্রামের পতেঙ্গা থেকে সাধারণত নৌপথ, ট্যাংক লরি কিংবা রেল ওয়াগনে দেশের নানা প্রান্তে পরিবহন করা হয়ে থাকে জ্বালানি তেল। তুলনামূলক সময়সাপেক্ষ এ প্রক্রিয়ায় পদে পদে থাকে চুরি, পদ্ধতিগত লোকসান আর অপচয়ের ঝুঁকি। রাজনৈতিক অস্থিরতা আর শুষ্ক মৌসুমে নাব্য সংকটও বিঘ্ন ঘটায় স্বাভাবিক সরবরাহ-ব্যবস্থায়।
প্রথাগত এ অবস্থা বদলাতে ২০১৮ সালে নেয়া হয় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা পর্যন্ত আড়াইশো কিলোমিটার পাইপলাইন নির্মাণের উদ্যোগ। ২০২০ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্প শেষ করার প্রাথমিক লক্ষ্য থাকলেও পরবর্তীতে দুই ধাপে মেয়াদ বাড়ানো হয় আরও চার বছর। বাড়ে প্রকল্প ব্যয়ও। তবে দ্বিতীয় দফায় বর্ধিত সময়েও শেষ হয়নি কাজ।
বিপিসি জানাচ্ছে, ১৬ ইঞ্চি ব্যাসার্ধের আড়াইশো কিলোমিটার ভূগর্ভস্থ পাইপলাইনটিতে বছরে পরিবহন করা যাবে ২৭ লাখ মেট্রিক টন ডিজেল। ভবিষ্যতে চাহিদা বাড়লে সুযোগ আছে এ সক্ষমতা ৫৪ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত করার। এতে জ্বালানি তেল পরিবহনে সময় ও খরচ দুই-ই বাঁচবে, কমে অপচয়, চুরি ও পদ্ধতিগত লোকসান। বছরে সাশ্রয় করা যাবে ২৩৬ কোটি টাকা। আর তা সম্ভব হলে ১৬ বছরেই ওঠে আসবে ৩৬ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ।
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. আমিন উল আহসান বলেন, মার্চে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। আগামী মাস থেকে শুরু করা যাবে পাইপলাইনের বাণিজ্যিক কার্যক্রম। এরই মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে পরিবহন হয়েছে জ্বালানি তেল। এখন ছোট ছোট ট্যাংকারে করে তেল আনতে হয়। যাতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। তবে পাইপলাইনটি চালু হলে এসব সমস্যা কেটে যাবে। এতে সময় ও খরচ দুইই বাঁচবে।
তবে পাইপলাইনটির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ নিরাপত্তাগত ব্যবস্থাপনা। সেজন্য থাকছে স্ক্যাডা, টেলিকমিউনিকেশন ও ক্যাথেডিক সুরক্ষা পদ্ধতির মতো আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্বয়ংক্রিয় নজরদারি। সূত্র: জাগো নিউজ