শিরোনাম
◈ শেখ মুজিবসহ চার শতাধিক নেতার মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি বাতিল হচ্ছে ◈ আ. লীগের পুনর্বাসন জনগণ মেনে নেবে না: ডা. শফিকুর ◈ শেখ হাসিনার অবস্থান নিয়ে আবারো ধোঁয়াশা, দিল্লি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে! (ভিডিও) ◈ যে বিষয়গুলো খেয়াল রাখবেন ইতিকাফের সময় ◈ যে কারণে লন্ডনে হাজার হাজার বাড়ি বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন, সবচেয়ে বড় বিমানবন্দর বন্ধ ◈ ইউরোপের বাজারে কদর বাড়ছে তৈরি পোশাকের ◈ আওয়ামী লীগের চার খলিফা নিয়ে নাজমুলের পোস্ট ◈ দাউদকান্দিতে শিশু ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে ভারতীয় নাগরিক জেলে ◈ গোয়েন্দাপ্রধানকে বরখাস্ত করলো ইসরায়েল ◈ গুলশানে গুলিতে নিহত যুবকের বিরুদ্ধে ৬টি মামলা ছিলো : ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার

প্রকাশিত : ২০ মার্চ, ২০২৫, ১১:৩৯ রাত
আপডেট : ২১ মার্চ, ২০২৫, ০১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : মনজুর এ আজিজ

বাজেট হবে ব্যবসা বান্ধব : অর্থ উপদেষ্টা

মনজুর এ আজিজ : অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আমরা একটা ব্যবসা-বাণিজ্য বান্ধব বাজেট দেওয়ার চেষ্ট করছি। যেন বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান বাড়ে, আমরা সে রকম উদ্যোগ নেব। কিছু কিছু জায়গায় অনলাইন প্রক্রিয়ার ঘাটতি আছে। আমরা সেসব জায়গাতেও এড্রেস করার চেষ্টা করছি। সামগ্রিকভাবে বাজেটটাকে আমরা ব্যবসা বান্ধব করার কথাই ভাবছি। এতে বিনিয়োগ, জিডিপি ও কর্মসংস্থান বাড়বে। রীতি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে শীর্ষ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বাজেট পূর্ব এক আলোচনা সভার এসব কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমরা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসেছি। আমরা চাই ব্যবসা বান্ধব বাজেট। ব্যবসা উপযোগী কর নীতি। যাতে সব ধরনের বিনিয়োগ বাড়ানো যায়। জিডিপি ও কর্মসংস্থান যাতে বাড়ে। এ ব্যাপারে ব্যবসায়ীরা কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবের মাধ্যমে সুপারিশ দিয়েছে। করের ব্যাপারে মতামত তুলে ধরেছে। কিছু কিছু খাতে সুবিধা কম আছে। সর্বশেষ যে বিষয়ে ব্যবসায়ীরা দাবি জানিয়েছে তা হলো কর কাঠামোর প্রক্রিয়া যেন অনলাইনে করা হয়। এছাড়া পেমেন্ট নিয়ে যে জটিলতা তা সমাধান চেয়েছে।  

ব্যবসায়ীরা বলেছেন, দেশে এখনও ডলার সংকট রয়েছে। ব্যাংক ঋণের সুদের হারও বেশি। খেলাপি ঋণও বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা নানা দিক থেকে চাপের মধ্যে রয়েছেন। আর্থিক খাতের সংকট তো রয়েছেই। নতুন কোনো বিনিয়োগ করা যাচ্ছে না। এরইমধ্যে এলডিসি উত্তরণ নিয়ে কথাবার্তা চলছে। সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। অথচ আমাদের সামগ্রিক প্রস্তুতি দুর্বল।

এমন পরিস্থিতি নতুন অর্থ বছরের জন্য বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এজন্য আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে এসব বিষয়কে প্রাধান্য দেওয়ার সুপারিশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। 

বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্টাস্ট্রিজ (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী বলেন, অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে আজ যে আলোচনা তা হলো প্রাক-বাজেট। কিন্তু যা দেখলাম তা হলো আয়কর বা জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সম্পর্কিত ইস্যুর উপর শুনতে চেয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা। অন্য ইস্যুগুলো তিনি শুনতে চাচ্ছিলেন না। ব্যাংকিংসহ অন্য খাতের বিষয়ে আলোচনা হয়নি। তবে উপদেষ্টার কার্যক্রম খুবই ইতিবাচক মনে হয়েছে। তিনি চান দেশটা এগিয়ে যাক। কিছু কিছু জায়গায় কর যাতে আহরণ করতে পারে এনবিআর। এনবিআরের কর আদায় যাতে বাড়ে তার জন্যও কঠিন ভূমিকা নেওয়া হচ্ছে। 

তিনি বলেন, সার্বিকভাবে আমাদের জন্য যেটা চিন্তার বিষয় শিল্পে কিভাবে সক্ষমতা বাড়ানো যায়। এ বিষয় নিয়ে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে আমাদের কথা বলা হয়নি। তিনি এসব জায়গায় আলোচনা করতে চাচ্ছেন না। বাংলাদেশ ব্যাংক সংক্রান্ত বিষয় ও আর্থিক সহায়তার বিষয়গুলো লিখিত আকারে চেয়েছেন উপদেষ্টা।  

বিসিআই সভাপতি বলেন, এনবিআর গ্রোস মুনাফার ভিত্তিতে কিভাবে কর অ্যাসেসমেন্ট করে। এই কর ও শুল্ক কাঠামোতে আমাদের আন্তর্জাতিক চর্চা অনুসরণ করা উচিত। সেটা কিছু কিছু বিষয়ে একমত হয়েছে এনবিআর। বাংলাদেশের কর হিসাব যেভাবে করা হয় তা প্রক্রিয়া সঠিক নয়। দেশের পোশাক খাত ১ শতাংশ দিচ্ছে। যদিও এটা চূড়ান্ত হিসাব নিষ্পত্তি নয়। লোকসান হলেও ওই ১ শতাংশ দিচ্ছেন। দ্বৈতকরের কিছু বিষয় রয়ে গেছে। সে জায়গাগুলো এনবিআর সেটেল্ট করবে। 

তিনি বলেন, ক্ষুদ্র শিল্পকে আরও প্রতিযোগী করার জন্য এসএমই খাতের ভ্যাট আরও কমানো উচিত। ক্ষুদ্র শিল্পকে আটবছর মেয়াদী কর অবকাশ সুবিধা দেওয়ার উচিত আমরা মনে করি। 

বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, কর পদ্ধতি নিয়ে অনেক দিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছি। এটার এবার একটা পরিবর্তন হবে। এনবিআরের চেয়ারম্যান এমন আশ্বাস দিয়েছেন। এই পরিবর্তন হচ্ছে-যেমন এখন ১ শতাংশ অগ্রিম আয়কর (এআইটি) নিচ্ছে। এটা চূড়ান্ত হিসাব নয়। আবার এই অর্থ পুরোপুরি সমন্বয় হচ্ছে না বা ফেরত দিচ্ছে না। এক কোটি টাকা এআইটি নিলেও ওই ব্যবসায়ী যখন ২০ লাখ টাকা করের রিটার্ন দাখিল করছে। তখন অগ্রিম আয়কর কেটে রাখলেও তা ফেরত দিচ্ছে না। এতে করের হার কত দাঁড়াচ্ছে তা সুনির্দিষ্ট নয়। এটা পরিবর্তন প্রয়োজন। যে আইন দ্বারা এটা করা হয়েছে ওই আইনটি সঠিক নয়। 

তিনি বলেন, আয় করব কর দেব। কিন্তু এখন যা হচ্ছে মোট বিক্রির উপর কর নেওয়া হচ্ছে। বাস্তবে এটা যৌক্তিক নয়। কর এর বোঝা আর না বাড়িয়ে করজাল সম্প্রসারণ করতে হবে।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি তাসকিন আহমেদ বলেন, আসছে বাজেটে কর ব্যবস্থা ডিজিটাল করতে হবে। কর্পোরেট কর অনলাইন করতে হবে। ইউনিফায়েড সিঙ্গেল ডিজিট ভ্যাট করতে হবে। গত ৩ বছর ধরে অর্থনীতি চাপের মধ্যে থাকায় ভালো ব্যবসায়ীরা ডিফল্ট হয়ে যাচ্ছে! এর থেকে পরিত্রাণে ন্যূনতম ৬ মাস মোরাটোরিয়াম পিরিয়ড দিতে হবে ও সহজ শর্তে ঋণ রেস্ট্রাক্টারিং করার নির্দেশনা বাংলাদেশ ব্যাংককে দিতে হবে। বৈঠকে অংশ নেন অর্থ সচিব ড. খায়েরুজ্জামান মজুমদারসহ অন্যান্য চেম্বার এসোসিয়েশনের নেতারা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়