শিরোনাম
◈ ঈদযাত্রায় ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু ১৪ মার্চ ◈ ফেব্রুয়ারিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমেছে, স্বস্তি খাদ্যেও ◈ কম সংস্কার চাইলে ডিসেম্বরে, বেশি চাইলে জুনের মধ্যে নির্বাচন: প্রাক্তন দুই মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে প্রধান উপদেষ্টা ◈ বিক্ষোভের শহরে পরিণত হচ্ছে রাজধানী ঢাকা: নিক্কেই এশিয়ার প্রতিবেদন ◈ সামনের পথ স্পষ্ট - একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে দ্রুত প্রত্যাবর্তন : মির্জা ফখরুল ◈ ইউক্রেনকে সাহায্য করতে নারাজ ইউরোপের ২ দেশ ◈ জাতীয় নাগরিক দল বাংলাদেশে নির্বাচনী দৃশ্যপট পরিবর্তন করতে পারে ◈ ইউপি চেয়ারম্যান লাক মিয়ার ৪৯ ব্যাংক হিসাব, লেনদেন ১৪,৩৭৬ কোটি টাকা ◈ সাতকানিয়ায় নিহত ২: কোতোয়ালি থানার লুট হওয়া পিস্তল দিয়ে ছোড়া হয় গুলি ◈ পদোন্নতিপ্রাপ্ত ৩৭ কর্মকর্তাকে র‍্যাংকব্যাজ পরালেন ডিএমপি কমিশনার

প্রকাশিত : ০৬ মার্চ, ২০২৫, ১২:০০ দুপুর
আপডেট : ০৬ মার্চ, ২০২৫, ০৮:৫৮ রাত

প্রতিবেদক : মহসিন কবির

ফের পতনের ধারায় শেয়ারবাজার, হতাশ বিনিয়োগকারীরা

মহসিন কবির: শেয়ারবাজারে আবারও টানা দরপতনের হতাশ বিনিয়োগকারীরা। সরকারের কোন পদক্ষেপই কাজে আসছে না। দিনি দিন নিঃস্ব হচ্ছে বিনিয়োগকারীরা। ঈদের আগে  বাজার পরিস্থিতি কি হবে, সে চিন্তায় তাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। অনেকই শেয়ার বাজারের আয় থেকে সংসার চালান, তারা পড়েছে বেশি চিন্তায়। যাদের লোন আছে, তারা পড়েছেন মাহাবিপাকে। 

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম নেমে গেছে তলানিতে, যার ফলে মূল্যসূচক ও বাজার মূলধনে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। কারসাজি ও অনিয়মের বৃত্ত ভেঙে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে না পুঁজির এ বাজার। মুনাফার আশায় এসে উল্টো পুঁজি হারিয়ে বাড়ি ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা।

বিশ্লেষকরা বলছেন, পুঁজিবাজারে স্বচ্ছতা ও সুশাসনের অভাবের কারণে আস্থার সংকট চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিনিয়োগকারীরা লোকসানের মুখে পড়ে শেয়ার বিক্রি করছেন, যার ফলে বাজার আরও দুর্বল হচ্ছে। নতুন বিনিয়োগ না আসায় বাজারের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুরনো বিনিয়োগকারীদের হতাশা ছড়াচ্ছে সম্ভাব্য বিনিয়োগকারীদের কাছেও। ফলে বিনিয়োগে সক্ষম মানুষ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ না করে সরকারি সঞ্চয়পত্র কিনে বা ব্যাংকে আমানত রেখে যতটা ‘রিটার্ন’ পাচ্ছেন, তাতেই সন্তুষ্ট থাকছেন।

একটি শীর্ষস্থানীয় ব্রোকারেজ হাউসের প্রধান নির্বাহী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বাজারে ছোট, মাঝারি ও বড় সব ধরনের বিনিয়োগকারীই এখন হতাশ। নতুন করে কেউ বিনিয়োগ করতে চাইছেন না, বরং অনেকে লোকসান মেনে নিয়ে বাজার ছেড়ে দিচ্ছেন। সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে পড়ছে। 

গত আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিনিয়োগকারীরা নতুন আশার আলো দেখেছিলেন, কিন্তু সেই আশা বাস্তবে রূপ নেয়নি। পরিবর্তিত সরকারও বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়েছে। শেখ হাসিনার পতনের পর চার দিনে ডিএসইর প্রধান সূচক ৭৮৬ পয়েন্ট বাড়লেও, তা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। পরবর্তী সাত মাসে বাজার ঘুরেফিরে আগের অবস্থানেই ফিরে এসেছে।

দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্রোকারেজ হাউস লংকাবাংলা সিকিউরিটিজ সম্প্রতি এক জরিপে দেখিয়েছে, বিএসইসির নতুন নেতৃত্বের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে গেছে। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মাত্র ৯ শতাংশ বিএসইসির বর্তমান নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল, ৪৯ দশমিক ৫ শতাংশ পুরোপুরি আস্থা হারিয়েছেন এবং ৩৭ শতাংশ আংশিক আস্থা রেখেছেন।

বাজারসংশ্লিষ্টদের মতে, বিএসইসির বর্তমান কমিশন দক্ষতা ও সক্ষমতার দিক থেকে প্রশ্নবিদ্ধ। শেয়ারবাজারের স্থিতিশীলতা আনতে তাদের কার্যকর কোনো উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। সম্প্রতি বিনিয়োগকারীরা বিএসইসির নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মতিঝিলে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন। যদিও বর্তমান কমিশনের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির কোনো প্রমাণ নেই, তবে তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের দীর্ঘসূত্রতা ও দুর্বল নীতিমালার কারণে বাজারে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সব মূল্যসূচকের পতনে কমেছে টাকার অঙ্কে লেনদেন। সেই সঙ্গে কমেছে ২৬৭ কোম্পানির শেয়ারদর। ডিএসইর লেনদেন শেষে প্রধান সূচক ‘ডিএসইএক্স’ ২৬ দশমিক ৫৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ১৯৪ পয়েন্টে। অন্য সুচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ‘ডিএসইএস’ ৪ দশমিক ৭ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ১৫৮ পয়েন্টে আর ‘ডিএস৩০’ ৮ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৮৮৯ পয়েন্টে। ডিএসইতে মোট ৩৩৬ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগে দিনে লেনদেন হয়েছিল ৩৮১ কোটি ৭৪ লাখ টাকার শেয়ার। লেনদেন হওয়া ৩৯৬টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ৬৫টির, কমেছে ২৬৭টির অপরদিকে অপরিবর্তিত রয়েছে ৬৮টি কোম্পানির বাজারদর।

বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ সিদ্দিকী গণমাধ্যমকে বলেছেন, পুঁজিবাজারের সুশাসন এখন প্রশ্নবিদ্ধ। গত দুই কমিশনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি করেছে। বাজারে প্রশ্নবিদ্ধ অনেক কোম্পানি এসেছে, যেগুলো এখন বিনিয়োগকারীদের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়