পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে ৫২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন। এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি ইউনিটের মধ্যে দুটি ইউনিট দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন হলেও যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে তিন দিনের ব্যবধানে এই দুটি ইউনিটও একের পর এক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পুরোপুরি বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, যত দ্রুত সম্ভব বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি আবার চালুর চেষ্টা চলছে।
প্রধান প্রকৌশলী আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, বয়লার টিউব লিকেজের কারণে গত মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ২টা ৪৩ মিনিটে ১২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ১নং ইউনিটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এর তিন দিন আগে ১৫ ফেব্রুয়ারি ২৭৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ৩নং ইউনিটের হেভি প্রেশারের পানির লাইন ফেটে যাওয়ায় এবং এয়ার ফিল্টারের এক পাশের বিয়ারিং ভেঙে যাওয়ার কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয়। এছাড়া ১২৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন ২নং ইউনিটটি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দীর্ঘদিন থেকেই বন্ধ রয়েছে।
একে একে সব ইউনিটই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। ভরা বোরো মৌসুমে পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে কয়লাভিত্তিক এ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন।
কবেনাগাদ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু হতে পারে? এমন প্রশ্নের জবাবে বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি এখন পর্যন্ত খুব গরম রয়েছে। তাই আমরা ভেতরে প্রবেশ করতে পারছি না। ভেতরে প্রবেশ করতে পারলে মেরামত কাজ শুরু করব। খুব তাড়াতাড়িই মেরামত কাজ সম্পন্ন করে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালু করা হবে। তবে তিনি আভাস দেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন শুরু করতে অন্তত এক সপ্তাহ লাগতে পারে।
প্রধান প্রকৌশলী জানান, বর্তমানে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৩ লাখ মেট্রিক টন কয়লা মজুদ রয়েছে। এদিকে ভরা বোরো সেচ মৌসুমে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এ অঞ্চলে বোরো সেচকার্যে বিঘ্ন ঘটার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির উৎপাদিত কয়লার উপর ভিত্তি করে খনির পাশেই ২০০৬ সালে গড়ে উঠে কয়লাভিত্তিক বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। প্রথম অবস্থায় ১২৫ মেগাওয়াট করে মোট ২৫০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন দুটি ইউনিট স্থাপন করা হয়।
এরপর ২০১৭ সালে ২৭৫ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন আরেকটি ইউনিট চালু করে এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মোট উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে দাঁড়ায় ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটিসহ নানান জটিলতায় কখনো এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি একসঙ্গে ৫২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারেনি। উৎস: যুগান্তর।
আপনার মতামত লিখুন :