শিরোনাম
◈ আরাকান আর্মির কাছে জিম্মি ২৬ জেলেকে ফেরত আনল বিজিবি ◈ ঈদের চাঁদ দেখা যাবে কবে, জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর ◈ এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন হলে বছরে ৮ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হতে পারে : সিপিডি ◈ শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনা নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ◈ প্রবল বৃষ্টিতে রক্তের মতো লাল সমুদ্র সৈকত, ভিডিও ভাইরাল ◈ বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন পৃথিবীতে নজির সৃষ্টি করবে: জাতিসংঘ মহাসচিব ◈ জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ ◈ জাতীয় ঐক্য ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে: জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠক শেষে জামায়াতের নায়েবে আমির ◈ কী ঘটেছিল সেদিন আছিয়াদের বাড়িতে, জানালেন সারজিস ◈ গণপরিষদের মাধ্যমেই সংবিধান সংস্কার করতে হবে: নাহিদ ইসলাম (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১১:২০ রাত
আপডেট : ১২ মার্চ, ২০২৫, ০৭:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পোশাক শিল্পকে টেকসই করতে সাসটেইনেবল অ্যাপারেল ফোরাম অনুষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকায় সাসটেইনেবল অ্যাপারেল ফোরামের ৬ষ্ঠ সংস্করণ অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে বাংলাদেশকে দায়িত্বশীল সোর্সিংয়ে নেতৃস্থানীয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার উপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জ (বিএই) এবং নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের সহযোগিতায় আয়োজিত এই ফোরামে নীতিনির্ধারক, শিল্পের নেতৃবৃন্দ এবং উদ্যোক্তারা একত্রিত হয়ে শিল্পের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা সংক্রান্ত কর্মসূচি, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং শ্রমবান্ধব কর্মপরিবেশ সম্পর্কিত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জসমূহ সমাধানে করণীয় নিয়ে আলোচনা করেন।

ফোরামের মাধ্যমে বিভিন্ন শিল্প খাতের নেতৃস্থানীয়রা গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন। আলোচনায় শিল্পের টেকসই ভবিষ্যতের জন্য উদ্ভাবনী উপায় ও সমাধানের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। বিশ্বব্যাপী ফ্যাশন শিল্পের জন্য সাসটেইনিবিলিটি বা টেকসইতার গুরুত্ব তুলে ধরা এবং শিল্পে আরও দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক চর্চা প্রতিষ্ঠার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যপারে সাসটেইনেবল অ্যাপারেল ফোরাম একটি গুরুত্বপূর্ণ প্লাটফর্ম হিসাবে কাজ করে যাচ্ছে। 

সাসটেইনেবল অ্যাপারেল ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানসহ চারটি প্যানেল আলোচনা, গুরুত্বপূর্ণ পৃথক বিষয়ের পাঁচটি উপস্থাপনা এবং দুটি ব্রেকআউট সেশন অনুষ্ঠিত হয়। ফোরামে ২০ জনেরও বেশি উদ্ভাবক এবং ৪০ জনেরও অধিক বিশ্বমানের আলোচকসহ ৫৫০ জনের অধিক দেশি ও আন্তর্জাতিক অতিথি অংশগ্রহণ করেন।

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বক্তাগণ, যারা সাসটেইনিবিলিটি এবং দায়িত্বশীল ব্যবসা বিষয়ে তাদের মূল্যবান মতামত তুলে ধরেন। আলোচকদের মধ্যে ছিলেন পরিবেশ, বন, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার, বাংলাদেশস্থ নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের হেড অব মিশন আন্দ্রে কারস্টেনস, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মোস্তাফিজ উদ্দিন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং জল সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, যখন আমরা টেকসই উন্নয়ন নিয়ে কথা বলি তখন আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, এটি একটি সম্মিলিত দায়িত্ব। আমি আন্তরিকভাবে আশা করি যে, আমদানিকারক এবং রপ্তানিকারক উভয়েই একত্রে টেকসই উন্নয়নের জন্য কাজ করবে। আমি ব্যবসায়িক সম্প্রদায় এবং নেদারল্যান্ডসের আমাদের অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানাই যেন তারা তাদের সমমনা প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে যুক্ত হয়ে নবায়নযোগ্য ও টেকসই শক্তি উৎপাদনের দিকে এগিয়ে যায়। 

বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার বলেন,  ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভোক্তারা বাংলাদেশ থেকে আমদানিকৃত উচ্চগুণগত ও মানসম্মত পণ্য থেকে উপকৃত হয়েছে। আমরা এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে ইইউ ও বাংলাদেশের মধ্যে অংশীদারিত্ব আরও শক্তিশালী ও বিকশিতহওয়া প্রয়োজন। আমরা আশা করি, বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য শক্তির ক্ষেত্রে তাদের লক্ষ্য আরো উচ্চাভিলাষী করবে। ইইউ বাংলাদেশের সাথে একসঙ্গে কাজ করার জন্য দৃঢপ্রতিজ্ঞ, যাতে বাংলাদেশ টেকসই উন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টির সক্ষমতা অর্জন করতে পারে।

বাংলাদেশস্থ নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের হেড অব মিশন এইচ.ই. আন্দ্রে কার্স্টেনস বলেন, নেদারল্যান্ডস বাংলাদেশের সাথে তার অংশীদারিত্বকে এবং বিশ্বের পোশাক শিল্পে তার নেতৃস্থানীয় ভূমিকাকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে। বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় একত্রে কাজ করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা এদেশে সচেতনতা বৃদ্ধি, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যগুলোকে মানসম্মত করা এবং সার্কুলারিটি ওট্রেসেবিলিটি শক্তিশালী করার লক্ষ্যকে জোরালোভাবে সমর্থন করি। এখানে আমরা পোশাকের ভ্যালু চেইনের সকল প্রধান অংশীদারদের একত্রিত করেছি, কারণ বাংলাদেশকে একটি দায়িত্বশীল সোর্সিং গন্তব্য হিসেবে তার অবস্থান সুদৃঢ় করতে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অপরিহার্য। এই ফোরাম এ সকল গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার একটি সুযোগ তৈরি করেছে।

বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান (সিনিয়র সচিব) চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন বলেন, আমরা ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় টেকসই পোশাক উৎপাদনকারী গন্তব্য হিসাবে প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য আসুন আমরা সকলে একসাথে কাজ করি।

বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মোস্তাফিজ উদ্দিন বলেন, আপনারা যদি আমাদের প্রচেষ্টাগুলো লক্ষ্য করেন তাহলে দেখবেন যে, আমরা পারস্পরিক সহযোগিতা ও সংযোগ স্থাপন এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি করছি। টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমাদের অর্থবহ উদ্যোগগুলো অব্যাহত থাকবে।

এই ফোরামের পাশাপাশি নেদারল্যান্ডস সার্কুলার টেক্সটাইল ট্রেড মিশন শীর্ষক একটি বাণিজ্যিক সফরের আয়োজন করা হয়েছে। বাংলাদেশস্থ নেদারল্যান্ডস দূতাবাস এবং নেদারল্যান্ডস এন্টারপ্রাইজ এজেন্সি (আরভিও) কর্তৃক ১০ থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আয়োজিত এই মিশনে সার্কুলারিটি এবং নবায়নযোগ্য শক্তি সম্পর্কিত ১৮টি ডাচ কোম্পানি অংশগ্রহণ করছে। আয়োজনে সহযোগী হিসাবে রয়েছে বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জ (বিএই), বিজিএমইএ, ক্লিন অ্যান্ড ইউনিক এবং এক্সপোর্ট পার্টনার। সাসটেইনেবল অ্যাপারেল ফোরামে এই বাণিজ্য মিশনের অংশগ্রহণ এই ফোরামে অংশগ্রহণকারীদের জন্য নেটওয়ার্কিং এবং ম্যাচমেকিংয়ের এক অনন্য সুযোগ তৈরি করেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়