মনিরুল ইসলাম: শতাধিক পণ্যে শুল্ক-কর (ভ্যাট-ট্যাক্স) বাড়ানো হলেও দেশের মানুষের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না বলে মনে করছে সরকার। বরং বাংলাদেশের অর্থনীতির স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটানোর জন্যই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর ফলে দেশের অর্থনীতির স্বাস্থ্যটা ভালো হবে। দেশের মানুষেরই উন্নয়ন হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারের অজনপ্রিয় হওয়ার কোনো কারণ নেই।
রোববার রাজধানীর ফরেন একাডেমিতে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
তিনি বলেন, আইএমএফ’র চাপে নয়, ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত বাড়াতে সরকার কিছু পণ্যের ওপর ভ্যাট বাড়িয়েছে।
শফিকুল আলম বলেন, ‘দেশের মানুষের ভালোর জন্য এবং প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর জন্য ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত বাড়াতে হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই কিছু পণ্যের ওপর ভ্যাট বাড়ানো হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে আমরা চাচ্ছি যে ট্যাক্স এমন একটা জায়গায় যাক যেন আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়। ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত কমে যাওয়া মানে যে ঋণ করা হচ্ছে, তা পরিশোধ করা সম্ভব নাও হতে পারে। আমরা বলছি না যে ট্যাক্স বাড়ালে মানুষের ওপর প্রভাব পড়বে না। তবে আমরা মনে করছি সেটা খুবই মিনিমাম হবে।
স্ট্যাবিলিটি বাড়ানোর জন্য আমাদের ট্যাক্স-জিডিপি অনুপাত বাড়াতে হবে। গত ৫ মাসে আমাদের রাজস্ব ঘাটতি ৪২ হাজার কোটি টাকা। এ ঘাটতি আমাদের মেটাতে হবে। শফিকুল আলম বলেন, আমাদের কালেকশনের টার্গেট ছিল ১ লাখ ৬৯ হাজার কোটি টাকা। সেটা হয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকার একটু বেশি।
তিনি আরও বলেন, দেশের ফিন্যান্সিয়াল হেলথ ভালো হলে মূল্যস্ফীতি কমে আসে। আইএমএফ’র ঋণটাই মুখ্য নয়। আইএমএফ’র সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হলে ম্যাক্রো ইকোনমিক স্ট্যাবিলিটির জন্য তারা বেস্ট সাজেশন দেয়। তারা যেখানে ঋণ দেয়, সেখানে বিশ্বব্যাংকসহ বাইরের বিভিন্ন বিনিয়োগ আসা সহজ হয়।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনি দেখেন, কোথায় কোথায় অপচয় হয়েছে। এর ইয়ত্তা নাই। পপুলিস্ট হওয়ার জন্য সরকার রেললাইন করেছে, সেখানে দিনে মাত্র একটা ট্রেন চলে। টানেলটার কোনো দরকার ছিল না। প্রতিদিন আমাদের কতো লাখ টাকা খরচ দিতে হচ্ছে। পিওন থেকে শুরু করে শেখ পরিবার কে না চুরি করে নাই।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সীমানা নির্ধারণ এবং উভয় দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর দায়িত্ব পালন সংক্রান্ত বিষয়ে ৪টি চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এ সময় ওই ৪টি চুক্তি তুলে ধরেন তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের যুগ্ম সীমান্ত নির্দেশাবলী ১৯৭৫ সাল অনুযায়ী উভয় দেশের শূন্য লাইনের ১৫০ গজের মধ্যে প্রতিরক্ষার সামর্থ্যতা সম্বলিত যে কোনো কাজ সম্পন্নের বিষয়ে সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম মজুমদার, অপূর্ব জাহাঙ্গীর ও সহকারী প্রেস সচিব সুচিস্মিতা তিথি।