শিরোনাম
◈ কুষ্টিয়ায় পদ্মার ভাঙনে জাতীয় গ্রিডের টাওয়ার নদীতে বিলীন ◈ ভারতে থাকার মেয়াদ শেষ হচ্ছে, কোন আইনের বলে ভারতে থাকবেন শেখ হাসিনা? ◈ (২০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার ◈ স্থিতিশীল ডলারের দর, ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও ◈ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ‘গ্যারান্টিতে’ নগদ টাকার সংকট কাটছে যে ৫ ব্যাংকের ◈ হত্যাকাণ্ড নিয়ে অপপ্রচার চলছে, জাবিতে কোন কমিটিই নেই : ছাত্রদল ◈ গণপিটুনিতে মৃত্যু: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দুঃখপ্রকাশ, বৈষম্যবিরোধীদের নিন্দা, ফেসবুকে নানা সমালোচনা ◈ ভারতের গোলা যাচ্ছে ইউক্রেনে, ক্ষুব্ধ রাশিয়া ◈ সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান সুনামগঞ্জে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার গ্রেফতার ◈ মব জাস্টিস শুধু সহিংসতা ও অন্যায় সৃষ্টি করে: সমন্বয়ক হাসনাত

প্রকাশিত : ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০১:১২ রাত
আপডেট : ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ০১:১৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

স্থিতিশীল ডলারের দর, ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও

ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের রেমিট্যান্স পাঠানোর হার বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ বিভিন্ন দাতাগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে নতুন করে ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি মিলেছে। রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রিও বন্ধ। ফলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তাই স্বল্প সময়ের ব্যবধানে ডলার বাজারে স্বস্তি ফিরে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। বর্তমানে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪৩০ কোটি ডলারে। এদিকে চাহিদা কমে যাওয়ায় এবং সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশের খোলাবাজারে ডলারের দাম কমে স্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। বর্তমানে খোলাবাজারে প্রতি ডলার ১২১-১২২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা কয়েক সপ্তাহ আগেও ১২৫ টাকার মতো ছিল।

ডলারের বাজার: মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খোলাবাজারে ১২১ থেকে ১২২ টাকা ৫০ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করেছে তারা। গত ৫ই আগস্ট দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর মানুষের বিদেশযাত্রার প্রবণতা কমেছে। পাশাপাশি খোলাবাজারে ডলারের প্রবাহ বেড়েছে। এ দুই কারণে ডলারের দাম আগের তুলনায় কমেছে। বিদেশে ভ্রমণকারীরা সাধারণত খোলাবাজার থেকে ডলার কিনে থাকেন।

খোলাবাজারের ডলার বিক্রেতা রুবেল মিয়া বলেন, হাতে হাতে যে ডলার আসছে, তার দাম কমে ১২১ টাকায় নেমেছে। আমার এখান থেকে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ভারতগামী যাত্রীরা ডলার কেনেন। তবে কিছুদিন ধরে এ ধরনের যাত্রী একেবারেই কম আসছেন।

সূত্রমতে, গত জুলাই মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত খোলাবাজারে প্রতি ডলার ১১৮-১১৯ টাকার মধ্যে বেচাকেনা হতো। এর আগের কয়েক মাসও নগদ ডলারের দাম একই রকম ধারায় ছিল। তবে ছাত্র আন্দোলনের সময়ে জুলাইয়ের শেষ দিকে ডলারের দাম বাড়তে থাকে; একপর্যায়ে তা ১২৫ টাকার ওপরে চলে যায়। গত ৫ই আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের কয়েক দিন পর থেকে ডলারের দাম কমতে থাকে। ব্যাংকগুলোতে তারা প্রতি ডলার ১২০ টাকায় বিক্রি করছে। 

রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে: চলতি মাসের প্রথম ১৭ দিনে বৈধ পথে ১৪৩ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা, যা আগের বছরের সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম ১৭ দিনে প্রবাসী আয় এসেছে ৮৪ কোটি ২০ লাখ ডলার। সেই হিসাবে এই সময়ের মধ্যে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৫৮ কোটি ৮০ লাখ ডলার বা ৬৯.৮৩ শতাংশ।  আবার চলতি বছরের ১লা জুলাই থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্ষন্ত রেমিট্যান্স এসেছে ৫৫৬ কোটি ডলার, যা আগের বছরের ১লা জুলাই থেকে ১৭ই সেপ্টেম্বর পর্ষন্ত রেমিট্যান্স এসেছিল ৪৪১ কোটি ৫০ লাখ ডলার। এই সময়ের মধ্যে প্রবাসী আয় বেড়েছে ১১৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার বা ২৫.৯৩ শতাংশ। অন্যদিকে আগস্ট মাসে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে ২২২ কোটি ডলার। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯১ কোটি ৩৫ লাখ ৮০ হাজার ডলার। সদ্য সমাপ্ত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে দুই হাজার ৩৯২ কোটি ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার রেমিট্যান্স আসে। রেমিট্যান্সের এ অঙ্ক এ যাবৎকালের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আহরণ। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা বলেন, জুলাই থেকে আগস্টের মধ্যে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেড়েছে। প্রবাসীরা উল্লেখযোগ্য পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন, যা রিজার্ভ বৃদ্ধির একটি বড় কারণ। তিনি বলেন, বিভিন্ন সংকট কাটতে শুরু করায় ব্যাংকগুলো এখন নিজেদের ডলার কেনাবেচা করতে পারছে। বর্তমানে ডলারের দাম ১১৮-১২০ টাকার মধ্যে রয়েছে। ব্যাংকিং চ্যানেল ও কার্ব মার্কেটে ডলারের দামের পার্থক্য এখন ১ শতাংশেরও কম।

রিজার্ভ বাড়বে: ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো বাংলাদেশকে সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এসব আশ্বাসের অর্থ ছাড় হলে বাড়বে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার মজুত রিজার্ভ।

এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক (আইএসডিবি) ও যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (ইউএসএআইডি) অর্থ সহায়তা দিতে আশ্বাস দিয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, ভারত, চীন প্রভৃতি দেশও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ১২ বিলিয়ন বা ১ হাজার ২১০ কোটি ডলার পাওয়া যাবে। এতে রিজার্ভ বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. মঈনুল ইসলাম বলেন, বৈদেশিক সহায়তা আসায় একদিকে রিজার্ভ বাড়বে অন্যদিকে ডলারের দামও স্থিতিশীল হবে। এক সময় দেশের পুরো অর্থনীতি একটা স্থিতিশীল পর্যায়ে চলে আসবে বলে মনে করেন তিনি। 

রিজার্ভ বাড়ানো প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, রিজার্ভ বাড়াতে আমরা রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছি। অন্যদিকে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে। ডলারের বাজার স্থিতিশীল আছে। বিভিন্ন দাতাগোষ্ঠীর কাছ থেকেও রিজার্ভ সহায়তা পাওয়ার আশ্বাস মিলেছে। এসব আশ্বাসের অর্থ ছাড় হলে রিজার্ভ ধীরে ধীরে বাড়বে। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভে বর্তমানে আছে ২ হাজার ৪৩০ কোটি ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিপিএম-৬ পদ্ধতিতে এর পরিমাণ ২ হাজার কোটি ডলারের কাছাকাছি। সূত্র : মানবজমিন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়